এক যুগ পর বিদেশের মাটিতে ধবলধোলাইয়ের আনন্দ

জিম্বাবুয়েকে তৃতীয় ওয়ানডেতেও হারিয়ে ধবলধোলাই করল বাংলাদেশছবি: জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট টুইটার

প্রথম ম্যাচে লিটন দাস। দ্বিতীয় ম্যাচে সাকিব আল হাসান। তৃতীয় ম্যাচে তামিম ইকবাল।

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজে তিন ম্যাচে বাংলাদেশি টপ অর্ডারে তিন ব্যাটসম্যানে কাছে এসেছে তিনটি বড় ইনিংস।

তাতে ভর করে বাংলাদেশ এক যুগ পর বিদেশের মাটিতে কোনো ওয়ানডে সিরিজে প্রতিপক্ষকে ধবলধোলাই করল। সর্বশেষ ২০০৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে তাদের মাটিতে ধবলধোলাই করেছিল সাকিব আল হাসানের বাংলাদেশ।

টস জিতে জিম্বাবুয়েকে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়ে একটু চাপেই পড়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ। জিম্বাবুয়ের অনিয়মিত ওপেনার রেজিস চাকাভার ক্যারিয়ার সেরা ৮৪ রানের পর দুই অলরাউন্ডার রায়ান বার্ল ও সিকান্দার রাজার জোড়া ফিফটিতে জিম্বাবুয়ে ২৯৮ রান তুলেছিল।

ডেথ ওভারে বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রণহীন বোলিং–ও কিছুটা সাহায্য করেছে স্বাগতিকদের। তাতে এই সিরিজে বড় রান তাড়া করার চাপটা প্রথমবারের মতো টের পায় বাংলাদেশ।
বড় রান তাড়া করতে হলে ভালো শুরুটা খুব দরকার। তামিম ইকবাল ও লিটন দাস সে কাজটা প্রতি ম্যাচেই করেছেন। আজ তো আরও ভালো করলেন।

সেঞ্চুরি তুলে নেন তামিম
ছবি: জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট টুইটার

শুরু থেকেই আগ্রাসি ব্যাটিংয়ে দরকারি রান রেটের সঙ্গে পাল্লা দিতে থাকেন দুজন। ডানহাতি-বাঁহাতি জুটিও দুজনকে সাহায্য করেছে এ ক্ষেত্রে। ৮৮ রানের ওপেনিং জুটিতে দুজন তেমন কোনো বড় ভুল করেননি। দুজনের মধ্যে প্রথম ভুলটা করেন লিটন। শুধু ১৩.৫ ওভারে লিটন ব্যক্তিগত ৩২ রানের সময় ওয়েসলি মাধেভেরেকে স্লগ সুইপ করে আউট হন।

পরের ভুলটা হয়তো করেন আম্পায়ার আইনো চাবি। তিনে নেমে দারুণ খেলতে থাকা সাকিল আল হাসানের বিপক্ষে লুক জঙ্গুইয়ের বলে কট বিহাইন্ডের আবেদনে সাড়া দেন তিনি। তবে সাকিবের হতাশামাখা চেহারাটা ভিন্ন কিছু বলছিল।

তবে অন্য প্রান্তের ঝঞ্ঝাট ছুঁয়ে যায়নি তামিমের ব্যাট। চাপের মুখে আদর্শ ব্যক্তিই আজ জ্বলে উঠলেন। ৯৭ বলে ১১২ রানের ইনিংসে ভিত গড়ে দিলেন বড় রান তাড়া করার। ১২ বল হাতে রেখে ৫ উইকেটে জিতেছে বাংলাদেশ। ওয়ানডে সিরিজে জিম্বাবুয়েকে ৩–০ ব্যবধানে ধবলধোলাই করল তামিমের দল। কাল ঈদের আনন্দ নিশ্চিতভাবেই বাড়িয়ে দিল এই সিরিজ জয়।

সিরিজে ভালো করেছেন বাংলাদেশের বোলাররা
ছবি: জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট টুইটার

বাংলাদেশ ইনিংসের ৩০তম ওভারে সেঞ্চুরি তুলে নেন তামিম। তেন্দাই চাতারার ফুল লেংথ বল ড্রাইভে চার মেরে তামিম পেয়ে যান ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ১৪তম সেঞ্চুরি। তিন অঙ্কে পৌঁছাতে মাত্র ৮৭ বল খেলেছেন, মেরেছেন ৮টি চার ও ৩টি বিশাল ছক্কা।

ফিফটি করতে তামিমের লেগেছিল ৪৬ বল। পরের পঞ্চাশ করতে লাগল ৪১ বল। তামিমের ওয়ানডে ক্যারিয়ারে দ্রুততম সেঞ্চুরি ছিল এটি। বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক হিসেবেও এটি তাঁর প্রথম সেঞ্চুরি।

সেঞ্চুরি করার পর ম্যাচ শেষ করে আসার সুযোগ ছিল তামিমের। কিন্তু ডোনাল্ড তিরিপানোর অফ স্টাম্পের বাইরের বল খেলতে গিয়ে কট বিহাইন্ড হন তিনি, ৯৭ বলে ১১২ রানে থেমেছে তামিমের ইনিংস।

কিন্তু তামিমের আউটের পরের বলে মাহমুদউল্লাহ আউট হলে মৃদু ঝাঁকুনি খায় বাংলাদেশ ড্রেসিংরুম। বাংলাদেশ দলের তখনো জিততে দরকার ছিল ৯৪ বলে ৯৫ রান। তবে মৃদু ঝাঁকুনি ভূমিকম্প হতে দেননি প্রায় পাঁচ বছর ওয়ানডে দলে ফেরা নুরুল হাসান।

তাঁর ৩৯ বলে ৪৫ রানের অপরাজিত ইনিংস দুই ওভার বাকি থাকতে জয় নিশ্চিত হয় বাংলাদেশের।