একজন ‘স্মিথ’ হয়ে উঠতে পারলেন না কোহলি

কোহলি চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু পারেননি।ছবি: এএফপি

সেই একই ব্যাপার। প্রথমে ব্যাটিং করে অস্ট্রেলিয়া রানের পর্বতে উঠবে। ভারত দাঁতে দাঁত কামড়ে লড়বে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত পারবে না। করোনাবিরতির পর ভারত দলের প্রথম সিরিজের দৃশ্যপট এমনই। সিডনিতে শুক্রবার প্রথম ওয়ানডেতে অস্ট্রেলিয়ার ৩৭৪ রানের জবাবে ৮ উইকেটে ৩০৮ রানে থেমেছিল ভারত। আজ ৩৮৯ রান তাড়া করতে গিয়ে ৩৩৮—পার্থক্য এতটুকুই।

স্টিভ স্মিথ দুই ম্যাচেই জ্বলেছেন আগুন হয়ে। বিরাট কোহলি প্রথম ম্যাচে ব্যর্থ, আজ দ্বিতীয় ম্যাচে করলেন ৮৯। কিন্তু ইনিংসটা বড় করতে পারলেন না। কোহলিকে যোগ্য সঙ্গ দেওয়ার দরকার ছিল আরও দু-তিনজন ব্যাটসম্যানের। কিন্তু লোকেশ রাহুল ছাড়া সেটি কেউই পারেননি। রাহুল ৬৬ বলে ৭৬ রান করে আশা দেখিয়েছিলেন, কিন্তু ওই পর্যন্তই। গত ম্যাচে ভালো খেলা শিখর ধাওয়ান কিংবা হার্দিক পান্ডিয়ারা আজ বড় কিছুর ভিত গড়েও বেশি দূর যেতে পারেননি।

কোহলির ৮৯ রানের ইনিংসটি খেলেছেন ৮৭ বলে। ছিল ৭টি বাউন্ডারি আর ২টি ছক্কার মার। ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা মন্দ ছিল না ভারতের। ওপেনার ধাওয়ান ফেরেন দলীয় ৫৮ রানের সময়। ৩০ রান করেছিলেন ২৩ বল খেলে। কিন্তু এর অল্পক্ষণ বাদেই আউট হয়ে যান মায়াঙ্ক আগারওয়াল। তিনি ২৮ রান করেছিলেন ২৬ বল খেলে। প্রথম ম্যাচেও ইনিংসের শুরুটা ভালোই করেছিলেন আগারওয়াল। ভালো কিছু করার প্রতিশ্রুতি ছিল। কিন্তু দ্রুতই উইকেট দিয়ে এসেছেন।

কোহলি নিজের ২৫০তম ম্যাচটা স্মরণীয় করে রাখার পণই করেছিলেন। সেটা বোঝা গেছে তাঁর চোয়ালবদ্ধ ব্যাটিংয়ে। প্রথমে শ্রেয়াস আয়ার ও পরে লোকেশ রাহুলকে সঙ্গে নিয়ে তিনি অস্ট্রেলীয় বোলারদের বিপক্ষে ভালোই লড়ছিলেন। ৩৬ বলে ৩৮ রান করেছেন আয়ার। কোহলি ফিরলেন সেঞ্চুরি থেকে ১১ রান দূরে থাকতে। যেভাবে খেলছিলেন, তাঁকে আউট করতে বিশেষ কিছু করা দরকার ছিল। সেটাই করলেন ময়েজেস হেনরিকেস। জশ হ্যাজলউডের বলে প্রচণ্ড জোরে পুল করেছিলেন কোহলি। অবিশ্বাস্য দক্ষতায় ঝাঁপিয়ে বলটা লুফে নিয়েছেন হেনরিকেস। এরপর পান্ডিয়াকে সঙ্গে নিয়ে লোকেশ রাহুলের চেষ্টাটা কাজে আসেনি।

লোকেশ রাহুলের ইনিংসটাও শেষ পর্যন্ত পূর্ণতা পায়নি।
ছবি: এএফপি

অস্ট্রেলিয়ার সেরা বোলার ছিলেন প্যাট কামিন্স। ৬৭ রানে ৩ উইকেট নিয়েছেন তিনি। হ্যাজলউড ২ উইকেট নিয়েছেন ৫৯ রানে। এ ছাড়া অ্যাডাম জাম্পা তাঁর লেগ স্পিনে ২ উইকেট নিয়েছেন ৬২ রানের খরচায়। তবে খরচে ছিলেন মিচেল স্টার্ক। ৯ ওভারে ৮২ রান দিয়ে উইকেটশূন্য ছিলেন অস্ট্রেলিয়ার অভিজ্ঞতম ফাস্ট বোলার। ভারত শেষ পর্যন্ত ৯ উইকেট ৩৩৮ রান তুলে হেরেছেন ৫১ রানে। প্রথম ম্যাচে ৬৬ রানের হারের পর আজ ৫১ রানের হার। ব্যবধান আজ কমেছে, এতে যদি কেউ সান্ত্বনা খুঁজতে চান, খুঁজতে পারেন।

তিন ম্যাচের সিরিজ এরই মধ্যে ২-০ ব্যবধানে পিছিয়ে থেকে বিসর্জন দিয়ে দিয়েছেন কোহলিরা। পরের ম্যাচ, অর্থাৎ শেষ ম্যাচ বুধবার, ক্যানবেরায়। তার আগে হাতে থাকা দুই দিন ভারতীয় শিবিরে যে আত্মসমালোচনার পালা চলবে, সেটা আর না বললেও চলছে। ক্যানবেরার ম্যাচের আগে কোহলি ও কোচ রবি শাস্ত্রীকে অনেক সমীকরণেরই হিসাব মেলাতে হবে।