তৃতীয়বারের মতো বিপিএল জয়ের আনন্দে ভেসেছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস। ব্যাট-বল উভয় ভূমিকাতেই সব্যসাচী কুমিল্লার সুনীল নারাইন থেকে শুরু করে ব্যাট হাতে বরিশালের সৈকত আলীর বিফল ঝড়, শেষে মাত্র ১ রানের কারণে সাকিবদের অপ্রাপ্তি—এবারের ফাইনালটা মনে থাকবে অনেক কারণেই।
এই নিয়ে মাত্র দ্বিতীয়বারের মতো শেষ বলে মীমাংসা হলো বিপিএল ফাইনালের। কিন্তু বিপিএলের ইতিহাসের সবচেয়ে সেরা ফাইনালের নাম বেছে নিতে বললে কতজন এ ফাইনালকে বেছে নেবেন? এর আগে দেখে নেওয়া যাক আগের ফাইনালগুলোতে কী কী হয়েছিল!
২০১২
ম্যাচের ফল : বরিশাল বার্নার্সকে ৮ উইকেটে হারিয়ে জয়ী ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটরস
শহীদ আফ্রিদি, সাঈদ আজমল আর ইমরান নাজিরের নৈপুণ্যে অনেকটা একপেশে জয়ই পেয়েছিল ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটরস। রান তাড়া করতে নেমে ৪৩ বলে ৭৫ রান করে ২৬ বল আগেই ম্যাচ শেষ করে দিয়েছিলেন নাজির।
২০১৩
ম্যাচের ফল : চট্টগ্রাম কিংসকে ৪৩ রানে হারিয়ে জয়ী ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটরস
দ্বিতীয়বারও দেখা গিয়েছিল ঢাকার দাপট। এনামুল হক (৫৮), সাকিব (৪১) ও মোহাম্মদ আশরাফুলের (২৪) কল্যাণে ১৭২ রান তুলেছিল ঢাকা। মোশাররফ হোসেনের স্পিনের সামনে পথ হারানো চট্টগ্রাম কিংস কোনো সুযোগই পায়নি। ১৭ ওভারের মধ্যে ১২৯ রানে গুটিয়ে যায় চট্টগ্রাম।
২০১৫
ম্যাচের ফল : বরিশাল বুলসকে ৩ উইকেটে হারিয়ে জয়ী কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস
প্রথম দুবার ঢাকার হয়ে শিরোপা জেতা মাশরাফি এবার ছিলেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের দায়িত্বে। তবে মাশরাফির হ্যাটট্রিক শিরোপা জয় এসেছিল অলক কাপালির সুবাদে। ১৫৭ রানের লক্ষ্যে নেমে ইমরুল কায়েসের অর্ধশতক (৫৩) আর কাপালির (২৮ বলে ৩৯ রান) সুবাদে ইনিংসের শেষ বলে বরিশাল বুলসকে হারায় কুমিল্লা।
২০১৬
ম্যাচের ফল : রাজশাহী কিংসকে ৫৬ রানে হারিয়ে জয়ী ঢাকা ডায়নামাইটস
এভিন লুইস (৪৫) আর কুমার সাঙ্গাকারার (২৬) কোনোরকমে ১৫৯ তোলে ঢাকা। ১৬০ রানের লক্ষ্যে রাজশাহী কিংসের ব্যাটিং ছিল আরও বিদঘুটে। ওয়ানডে ছন্দে ব্যাট করে থিতু হয়েছিলেন মুমিনুল (২৭) ও সাব্বির রহমান (২৬)। প্রথম ১০ ওভার ২ উইকেট হারিয়ে ৬২ রান তোলার মাশুল ১০৩ রানে অলআউট হয়ে দিয়েছে রাজশাহী।
২০১৭
ম্যাচের ফল : ঢাকা ডায়নামাইটসকে ৫৭ রানে হারিয়ে জয়ী রংপুর রাইডার্স
ম্যাচের শুরুতেই ছিল ক্রিস গেইল আর ব্রেন্ডান ম্যাককালাম-কাব্য। ২০১ রানের জুটিতে ৫১ রান এনে দিয়েছিলেন ম্যাককালাম। গেইল তাঁকে এর চেয়ে বেশি কিছু করতে দেননি। ব্যাটিংয়ের জন্য তুলনামূলক কঠিন উইকেটেই ৫৯ বলে ১৪৬ রান করেছিলেন। পাঁচটি চারের সঙ্গে ১৮টি ছক্কা ছিল গেইলের। রংপুর রাইডার্স চড়ে ২০৬ রানের পাহাড়ে। বোলিং করতে নেমে মাশরাফিদের বাড়তি কিছু করতে হয়নি। ঢাকা ডায়নামাইটস ৯ উইকেটে ১৪৯ রান তুলতে পেরেছিল।
২০১৯
ম্যাচের ফল : ঢাকা ডায়নামাইটসকে ১৭ রানে হারিয়ে জয়ী কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস
ফাইনালে দেখা গেল তামিমের রুদ্ররূপ। বাঁহাতি এই ওপেনারের ৬১ বলে ১৪১ রানের ইনিংসের পাশে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ এনামুল হকের ৩০ বলে ২৪! ১০ চার ও ১১ ছক্কার ইনিংসে ৫০ বলে ১০০ ছুঁয়েছিলেন তামিম। ২০০ রানের লক্ষ্যে নেমেছিল ঢাকা ডায়নামাইটস। ২৭ বলে ৪৮ করা থারাঙ্গা ফিরতেই ছন্দ হারায় দলটি। অধিনায়ক সাকিবও (৩) ব্যর্থ হন। ১৮২ রানে থামে ঢাকা।
২০২০
ম্যাচের ফল : খুলনা টাইগারসকে ২১ রানে হারিয়ে জয়ী রাজশাহী রয়্যালস
ইরফান শুক্কুর (৫২) ভিত্তি এনে দিয়েছিলেন, বাকিটা আন্দ্রে রাসেল (১৬ বলে ২৭) ও মোহাম্মদ নওয়াজ (২০ বলে ৪১*) করেছেন। প্রথম ১০ ওভারে ৬৭ তোলা রাজশাহী রয়্যালস পায় ১৭০ রানের পুঁজি। জবাবে কখনোই জেতার আশা জাগাতে পারেনি খুলনা টাইগার্স। ১৫৮ রানেই থেমে যায় খুলনা।
২০২২
ম্যাচের ফল : ফরচুন বরিশালকে ১ রানে হারিয়ে জয়ী কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস
ধুন্ধুমার সূচনা এনে দিয়েছিলেন কুমিল্লার সুনীল নারাইন। পাঁচটা করে চার-ছক্কায় তাঁর ২৩ বলে ৫৭ রানের ইনিংসের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল মিডল অর্ডারে মঈন আলীর ৩২ বলে ৩৮ রানের স্থিতধী ইনিংস। কুমিল্লার করা ১৫১ রানের জবাবে ১৫০ রানেই থেমে যায় বরিশাল। সৈকত আলী আর ক্রিস গেইল আশা জাগিয়েও জেতাতে পারেননি সাকিবদের।
প্রিয় পাঠক, এই ফাইনালগুলোর মধ্যে আপনার দৃষ্টিতে সেরা কোনটা?