এবার কোনো নাটক হলো না

জস বাটলার দারুণ খেলে জিতিয়েছেন ইংল্যান্ডকে।ছবি: রয়টার্স

ভেন্যু একই। দুই দলও বদলায়নি। ফলও একই থাকল। শুধু ম্যাচের গল্পটা হলো ভিন্ন।

সাউদাম্পটনে আগের ম্যাচে কত নাটক হলো! শেষ বল পর্যন্ত রোমাঞ্চ ছড়িয়ে সেদিন ২ রানে জিতেছিল ইংল্যান্ড, কিন্তু সাউদাম্পটনে আজ তিন টি-টোয়েন্টির সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে নাটকের ছিটেফোঁটাও থাকল না! দাপট কাকে বলে, সেটিই যেন অস্ট্রেলিয়ানদের বুঝিয়ে দিলেন বাটলার-ম্যালানরা। টস জিতে আগে ব্যাট করতে নামা অস্ট্রেলিয়াকে ২০ ওভারে ১৫৭ রানে আটকে রেখে ম্যাচটা ৭ বল ও ৬ উইকেট হাতে রেখে জিতে গেছে ইংল্যান্ড। ওপেনিংয়ে নেমে দুর্দান্ত ইনিংস খেলা জস বাটলার ছক্কা মেরে ইংল্যান্ডের ম্যাচের পাশাপাশি সিরিজ জয়ও নিশ্চিত করেছেন।

দ্বিতীয় উইকেটে বাটলার-ম্যালানের জুটিই অস্ট্রেলিয়ার ম্যাচ আর সিরিজে ফেরার যত আশা শেষ করে দিয়েছে। লক্ষ্য ১৫৮ রান, এই ইংল্যান্ডের জন্য আর এমন কী! ১৯ রানে ওপেনার জনি বেয়ারস্টোকে (৯) হারালেও দ্বিতীয় উইকেটে বাটলার-ম্যালান গড়েছেন ৮৭ রানের জুটি। ম্যালান আক্রমণাত্মক, বাটলার তাঁর চেয়েও ভয়ংকর। ৩২ বলে ৭ চারে ৪২ রান করেছেন তিনে নামা ম্যালান। আর বাটলার? ৫৪ বলে অপরাজিত ৭৭ রানের ইনিংসটি টি-টোয়েন্টিতে তাঁর ক্যারিয়ারসেরা, যে ইনিংস সাজানো ৮টি চার ও ২টি ছক্কায়।

ম্যাচসেরা জস বাটলার।
ছবি: রয়টার্স

মাঝে টম ব্যান্টন (২) আর এউইন মরগান (৭) দ্রুত বিদায় নিলেও দারুণ ফর্মে থাকা বাটলার ক্রিজে ছিলেন বলেই ইংল্যান্ড হয়তো একটুও দুশ্চিন্তায় পড়েনি। মঈন আলীর (৬ বলে ১৩) সঙ্গে মিলে ইংল্যান্ডকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দিয়েছেন। কতটা দাপুটে ছিল ইংল্যান্ড, তা হয়তো ম্যাচের শেষ পাঁচটি বলেই স্পষ্ট।

ইংল্যান্ড ইনিংসের ১৯তম ওভারটি শুরু হওয়ার সময়ও ইংল্যান্ডের দরকার ছিল ১২ বলে ১৮ রান। অ্যাডাম জাম্পার করা ওভারের প্রথম বলে এক রান নিয়ে মঈনকে স্ট্রাইক দেন বাটলার। দ্বিতীয় বলে ছক্কা মঈনের, পরের বলে চার। পরের বলে ১ রান। স্ট্রাইকে বাটলার। ম্যাচের শুরু থেকেই যাঁর ব্যাটে দাপট। জাম্পার বলটাকে উড়িয়ে সাইটস্ক্রিনে ফেললেন বাটলার! বিশাল ছক্কা! ম্যাচ জয় ইংল্যান্ডের। সিরিজও।

এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নামা অস্ট্রেলিয়ার উদ্বোধনী জুটি ভাঙল স্কোরকার্ডে কোনো রান ওঠার আগেই। অথচ আগের ম্যাচে ওয়ার্নার-ফিঞ্চের উদ্বোধনী জুটিতে এসেছিল ৯৮ রান। জফরা আর্চারের গতি ও বাউন্সে হার মেনে উইকেটকিপারকে ক্যাচ দেন ওয়ার্নার। এরপর ৩০ রানের মধ্যে নেই অ্যালেক্স ক্যারি-স্টিভ স্মিথও। তবু ইনিংস শেষে অস্ট্রেলিয়ার রান ৭ উইকেটে ১৫৭। ৩৩ বলে সর্বোচ্চ ৪০ রান অধিনায়ক ফিঞ্চের। মার্কাস স্টয়নিস করেছেন ৩৫ রান। আর্চারের করা শেষ ওভারে আসে ১৮ রান।

এই ম্যাচের প্রভাব পরিসংখ্যানেও। এ নিয়ে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে ইংল্যান্ডের মাটিতে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সর্বশেষ দশ ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার রেকর্ড: হার ৯, জয় ১! এই সিরিজ জিতে ২০২০ সালে ৮টি সিরিজের মধ্যে ৬টিই জিতল ইংল্যান্ড, বাকি দুটি ড্র। আর আরেকটি প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা র‍্যাঙ্কিংয়ে। সিরিজের আগে টি-টোয়েন্টি র‍্যাঙ্কিংয়ে অস্ট্রেলিয়া ছিল প্রথম, ইংল্যান্ড দ্বিতীয়। এই দুই ম্যাচ জেতার পর সমীকরণটা এই: সিরিজের পরের ম্যাচটিও জিতলে অস্ট্রেলিয়াকে টপকে র‍্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে উঠবে ইংল্যান্ড।