এমন টেস্টের কথাই তো বলেছিলেন হিটলার

ড্র শেষে মাঠ ছাড়ছেন দুই লঙ্কান অপরাজিত ব্যাটসম্যান চান্ডিমাল ও ফার্নান্দো।ছবি: এএফপি

গল্পটার সত্যতা নিশ্চিত হয়নি। তবে ১৯৩৭ সালে ওরচেস্টারশায়ারের একটি দল জার্মানি সফরে গিয়েছিল। জার্মানিতে তখন অ্যাডলফ হিটলারের শাসন চলছে।

ওরচেস্টারশায়ারের সফর নিয়েই ঘটনাটা কি না, তা ঠিক নিশ্চিত নয়। কিন্তু কথিত আছে, টেস্ট ম্যাচের চতুর্থ দিনে হিটলার খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, এখনো খেলার নিষ্পত্তি ঘটেনি। পরদিন খোঁজ নিয়ে জানতে পারলেন, ম্যাচ ড্র। যাহ্‌ বাবা! পাঁচ দিন খেলে কেউ জিততে পারল না! সময় অপচয় দেখে হিটলার নাকি এরপর জার্মানিতে ক্রিকেট নিষিদ্ধ করেছিলেন।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ-শ্রীলঙ্কা টেস্ট সিরিজ নিয়েও অনেকের এমন মনে হতে পারে।

হিটলার
ছবি: সংগৃহীত

অ্যান্টিগায় প্রথম টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজ জয়ের জন্য যে লক্ষ্য পেয়েছিল, সেই একই মাঠে দ্বিতীয় টেস্টে শ্রীলঙ্কার লক্ষ্যটা যেন প্রথম টেস্টের প্রায় ‘কপি পেস্ট’। দুই টেস্টের ফলেও অদল-বদল হলো না। দুটিই ড্র।

প্রথম টেস্টে জয়ের জন্য ৩৭৫ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ড্র করেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। চতুর্থ দিনে ব্যাট করতে নেমে শেষ দিন পর্যন্ত লড়ে গেছে স্বাগতিকেরা। দ্বিতীয় টেস্ট জিততে শ্রীলঙ্কার লক্ষ্য ছিল ৩৭৭ রান। কাল ২ উইকেটে ১৯৩ রানে (বাংলাদেশ সময় রাতে) পঞ্চম ও শেষ দিনের খেলা শেষ করে শ্রীলঙ্কা।

দুই টেস্টের এই ম্যাড়ম্যাড়ে সিরিজ ড্র হলো ০-০ ব্যবধানে। হিটলারের মতোই কেউ কেউ ভাবতে পারেন, পাঁচ পাঁচ—দশ দিন লড়েও একটা সিরিজের নিষ্পত্তি করা গেল না!

সিরিজ শুরুর মতো শেষেও ট্রফিটা কারও হলো না।
ছবি: এএফপি

বিনা উইকেটে ২৯ রান নিয়ে চতুর্থ দিনের খেলা শেষ করেছিল শ্রীলঙ্কা। কাল শেষ দিনে বৃষ্টি হানা দেওয়ার পরও ৭০ ওভারের খেলা হয়েছে। দিমুথ করুণারত্নে ও ওশাদা ফার্নান্দোর দৃঢ়তায় ম্যাচটা ড্র করে শ্রীলঙ্কা।

চরম ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছেন দুজন। ২৪৪ মিনিট উইকেটে থেকে ১৭৬ বলে ৭৫ রান করেন করুণারত্নে। ফার্নান্দো ১৬১ মিনিট উইকেটে থেকে ১১৯ বলে ৬৬ রানে অপরাজিত ছিলেন।

থিরিমান্নেকে ফিরিয়েও জোসেফের তেমন উল্লাস নেই।
ছবি: এএফপি

শেষ দিকে ফার্নান্দোকে দারুণ সঙ্গ দেন দিনেশ চান্দিমাল। ১০ রানে অপরাজিত থাকলেও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল তাঁর ৮২ মিনিট উইকেটে থেকে ৬৬ বলা খেলা। ওপেনার লাহিরু থিরিমান্নেও ধৈর্যের পরিচয় দেন। ১৬৫ মিনিট উইকেটে থেকে ১১৪ বলে ৩৯ রান করেন তিনি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে ১টি করে উইকেট নেন আলজারি জোসেফ ও কাইল মেয়ার্স।

ওপেনিং জুটিতে করুণারত্নে-থিরিমান্নের ১০১ রান লঙ্কানদের ড্রয়ের ভিত গড়ে দেয়। তৃতীয় ওভারে ব্যক্তিগত ১৭ রানে ‘জীবন’ পান থিরিমান্নে। তাঁর ক্যাচ নিতে পারেননি জশুয়া দা সিলভা। এর বাইরে জমাট ব্যাটই করেছেন দুজন।

টেস্ট সিরিজ ড্রয়ের অর্থ হলো শ্রীলঙ্কা এবার ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে কোনো সিরিজ জয়ের দেখা পেল না। ২-১ ব্যবধানে টি-টোয়েন্টি সিরিজে হারের পর ওয়ানডে সিরিজেও ৩-০ ব্যবধানে হেরেছে তারা।