ওভারে ছয় ছক্কার স্মৃতি নিয়ে জীবনের ওপারে ন্যাশ

সোবার্সকে (মাঝে) পাশে রেখে ছয় ছক্কার গল্প শোনাচ্ছেন ন্যাশ (বামে) ছবি : টুইটার
সোবার্সকে (মাঝে) পাশে রেখে ছয় ছক্কার গল্প শোনাচ্ছেন ন্যাশ (বামে) ছবি : টুইটার
>

তাঁর নামটা ক্রিকেটের ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে আছে বিশেষ এক কারণে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের কিংবদন্তি অলরাউন্ডার স্যার গ্যারি সোবার্স ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ওভারের ছয় বলে ছয় ছক্কা যখন মারলেন, বোলিং প্রান্তে ছিলেন এই ম্যালকম ন্যাশ। ওয়েলশ এই তারকা গতকাল পাড়ি জমিয়েছেন পরপারে।

ক্রিকেটগাথার অন্যতম একটি চরিত্র হয়েই ছিলেন তিনি। সেই ওয়েলশ অলরাউন্ডার, গ্ল্যামারগনের কিংবদন্তি তারকা ম্যালকম ন্যাশ গতকাল মারা গেছেন। কাউন্টি ক্রিকেটের ইতিহাসের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার মানা হতো তাঁকে।

কখনো আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলতে না পারা এই তারকা ১৯৬৬ থেকে ১৯৮৩ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ ১৭ বছরের প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট ক্যারিয়ারে ৩৩৬ ম্যাচে ৯৯৩ উইকেট নিয়েছেন। ব্যাট হাতে করেছেন ৭ হাজার ১২৯ রান। ক্যাচ নিয়েছেন ১৪৮টি। তবে এত কিছু করেও ন্যাশকে নিয়ে বিশ্বজোড়া তত আলোচনা হয়নি, যতটা না হয়েছে উইন্ডিজ অলরাউন্ডার স্যার গ্যারি সোবার্সের কাছে ওভারের ছয় বলে ছয় ছক্কা খাওয়ার কারণে।

১৯৬৮ সালে সোয়ানসিতে কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশিপে ন্যাশের গ্ল্যামারগনের মুখোমুখি হয় সোবার্সের নটিংহ্যামশায়ার। ম্যাচটিতে ফার্স্ট ক্লাস ক্রিকেট ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ছয় বলে ছয়টি ছক্কা মারার রেকর্ড গড়েন সোবার্স। বাঁ হাতি মিডিয়াম পেসার হলেও সেদিন স্পিন করার বড় সাধ হয়েছিল ন্যাশের। সে স্বপ্নকে দুঃস্বপ্নে পরিণত করতে এক ওভারের বেশি সময় নেননি সোবার্স। দল ঢিমেতালে রান তুলছিল, ব্যাপারটা পছন্দ হয়নি উইন্ডিজ কিংবদন্তির। ন্যাশকে পেয়েই তাই মারা শুরু করেন। পরের কাহিনি সবারই জানা। ইতিহাসের প্রথম তারকা হিসেবে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ওভারের ছয় বলে ছয় ছক্কা মারার রেকর্ড করেন সোবার্স। যে কীর্তি পরবর্তী সময়ে ছুঁয়েছেন হার্শেল গিবস ও ভারতের যুবরাজ সিং। ওভারে ছয় ছক্কার কীর্তি আছে রবি শাস্ত্রীরও।

পরশু লর্ডসে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে অংশ নিতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন ন্যাশ। তাড়াতাড়ি হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও বাঁচানো যায়নি তাঁকে। বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর, বিদায় নিতেই হতো পৃথিবী থেকে। তবু সোবার্স হয়তো বলবেন, এত তাড়াতাড়ি চলে গেলে বন্ধু!

ন্যাশের মৃত্যু ছুঁয়ে গেছে সোবার্সকেও, ‘ও আমার অনেক ভালো বন্ধু ছিল, আমরা সব সময় আমাদের বন্ধুত্বটা টিকিয়ে রেখেছি। বড় ভালো মানুষ ছিল ন্যাশ। আমি ভাগ্যবান, ওর ছয় বলে ছয় ছক্কা মারতে পেরেছিলাম। মাঠের ভেতরে যা–ই হোক না কেন, মাঠের বাইরের বন্ধুত্বে তা কখনো বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি। গত বছর আমি যখন লন্ডনে ছিলাম, ও আমার সঙ্গে দেখা করার জন্য ওয়েলস থেকে চলে এসেছিল। ও একটা নতুন বই লিখছিল, আমাকে বলল বইটা একটু দেখে দিতে আর বইয়ে একটা অটোগ্রাফ দিতে। ওর মৃত্যুর খবর শুনে অনেক কষ্ট হচ্ছে আমার।’