ওমানের বিপক্ষে হারলে কী হবে বাংলাদেশের

ব্যাটসম্যানরা ফর্মে না ফিরলে নানা রকম সমীকরণের হিসেব মেলাতে হবে বাংলাদেশকেছবি: এএফপি

স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে অপ্রত্যাশিত হার দিয়ে শুরু হয়েছে বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। এ হার বাংলাদেশের সুপার টুয়েলভের যাত্রা একটু কঠিন করে তুলেছে। আজই নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে মাঠে নামবে বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচে দুর্দান্ত দাপট দেখানো স্বাগতিক ওমানের বিপক্ষে বাংলাদেশ সময় রাত আটটায় নামবেন মাহমুদউল্লাহ-সাকিবেরা।

প্রথম ম্যাচে হেরে যাওয়ায় এখন সুপার টুয়েলভে ওঠার ক্ষেত্রে বেশ কিছু হিসাব–নিকাশ করতে হবে বাংলাদেশকে। দেখে নেওয়া যাক, কী সমীকরণ অপেক্ষা করছে বাংলাদেশের জন্য।

ব্যাটিংয়ে শুরুটা ভালো হয়নি বাংলাদেশের
ছবি: এএফপি

প্রথম ম্যাচ শেষে ‘বি’ গ্রুপের পয়েন্ট টেবিলে প্রথমে একটু চোখ বুলিয়ে নেওয়া যাক। প্রথম ম্যাচ জিতে ওমান ও স্কটল্যান্ড দুই দলই ২ পয়েন্ট পেয়েছে। তবে শ্রেয়তর রানরেট (+৩.১৩৫) নিয়ে শীর্ষে আছে ওমান। ওদিকে (+০.৩ রানরেট) দুইয়ে আছে স্কটল্যান্ড। শূন্য হাতে নেতিবাচক (-০.৩) রানরেট নিয়ে তিনে আছে বাংলাদেশ। আর নেট রানরেটে অনেক পিছিয়ে থাকা (-৩.১৩৫) পাপুয়া নিউগিনি আছে চারে।
আজ দিনের প্রথম ম্যাচ মুখোমুখি হবে স্কটল্যান্ড ও পাপুয়া নিউগিনি। সে ম্যাচের ফলের ওপরই অবশ্য বাংলাদেশের বিশ্বকাপ ভাগ্য নির্ভর করছে।

সে ম্যাচে স্কটল্যান্ড যদি জিতে যায়, সে ক্ষেত্রে নিজেদের ম্যাচে বাংলাদেশের জয় ছাড়া কোনো গতি নেই। কারণ, তখন বাংলাদেশ যদি হেরে যায়, সে ক্ষেত্রে ওমান ও স্কটল্যান্ড দুই দলেরই পয়েন্ট ৪ হয়ে যাবে। আর শেষ ম্যাচ খেলার আগেই বাদ পড়ে যাবে বাংলাদেশ।

বোলিং ভালো করলেও ব্যাটিং ভাবাচ্ছে
ছবি: এএফপি

আর স্কটল্যান্ড যদি নিজেদের ম্যাচ জিতে যায়, এবং বাংলাদেশও ওমানের বিপক্ষে প্রত্যাশিত জয় পায়, তখন গ্রুপের শেষ পর্বটা জমে উঠবে। বাংলাদেশ তখন শেষ ম্যাচে মুখোমুখি হবে পাপুয়া নিউগিনির। আর স্কটল্যান্ড ও ওমান মুখোমুখি হবে গ্রুপের শেষ ম্যাচে। সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশ নিজেদের ম্যাচটি জিতলেই নিশ্চিত হতে পারবে না। কারণ, স্কটল্যান্ড যদি ওমানের কাছে হেরে বসে, তখন তিন দলেরই পয়েন্ট হবে ৪। আর তখন কোন দুই দল সুপার টুয়েলভে যাবে সেটা নির্ধারণ করতে হবে। এবার বিশ্বকাপের নিয়মানুযায়ী, সমান পয়েন্ট থাকলে দলগুলোর নেট রানরেটই বিবেচ্য হবে। অর্থাৎ, ম্যাচ জিতলে বড় ব্যবধানে জেতার দিকেও নজর দিতে হবে বাংলাদেশকে।

আর আজ যদি স্কটল্যান্ড হেরে যায়, সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশের কাজটা সহজ হয়ে যাবে। সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশ পরের দুটি ম্যাচ জিতলেই উঠে যাবে সুপার টুয়েলভে। বাকি দলগুলো কী করল, কেমন করল, রানরেটে কতটা এগিয়ে থাকল—এসব নিয়েই ভাবতে হবে না বাংলাদেশকে। কারণ, যদি স্কটল্যান্ড ও ওমান—দুই দলই হারে, সে ক্ষেত্রে গ্রুপে শেষ ম্যাচে মুখোমুখি হবে এ দুই দল। আর যেহেতু সে ম্যাচে এক দলকে হারতেই হবে, তখন দুই জয় নিয়ে (ওমানের পর বাংলাদেশ নিউগিনিকেও হারাবে ধরে নিয়ে) নিশ্চিতভাবেই গ্রুপের অন্তত দুই দলের চেয়ে এগিয়ে থাকবে বাংলাদেশ।

প্রথম ম্যাচে সর্বোচ্চ রান করেছেন মুশফিক
ছবি: টুইটার

কিন্তু যদি তেমন কিছু না হয়? অর্থাৎ, স্কটল্যান্ড আজ হারল ঠিকই। কিন্তু বাংলাদেশ যদি ওমানের কাছে হেরে বসে! তখন?

হারের হতাশা হয়তো দলকে ভোগাবে, কিন্তু তখনো মুষড়ে পড়ার উপায় নেই। কারণ, আজ স্কটল্যান্ড হারলে, বাংলাদেশের তখনো সুযোগ থাকবে। আর সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে নিজেদের শেষ ম্যাচে জিততে হবে। ২১ অক্টোবরের সে ম্যাচে পাপুয়া নিউগিনিকে বড় ব্যবধানে হারাতে হবে। এবং বাংলাদেশের ম্যাচ যেহেতু আগে হয়ে যাবে, তখন শেষ ম্যাচে ওমানের সবচেয়ে বড় সমর্থক বনে যেতে হবে। ওমান যদি তখন স্কটল্যান্ডকে হারিয়ে দেয়, তখন স্বাগতিকদের পূর্ণ ৬ পয়েন্ট হয়ে যাবে। আর গ্রুপের বাকি তিন দলেরই হবে ২ পয়েন্ট।

আজ হাসিমুখে মাঠ ছাড়তে পারবেন মাহমুদউল্লাহরা?
ফাইল ছবি

আবার ধরা যাক, আজ স্কটল্যান্ড নিজেদের ম্যাচ জিতে গেল এবং বাংলাদেশও তাদের ম্যাচ জিতল। কিন্তু গ্রুপের শেষ ম্যাচে বাংলাদেশ নবাগত পাপুয়া নিউগিনির কাছে হেরে বসল। তখন কিন্তু শেষ ম্যাচে বাংলাদেশকে স্কটল্যান্ডের সমর্থক হয়ে যেতে হবে এবং আশা করতে হবে যেন ওমানকে অনেক বড় ব্যবধানে হারায় স্কটিশরা। কারণ, এ সমীকরণে তখন স্কটল্যান্ডের পূর্ণ ৬ পয়েন্ট হয়ে যাবে। আর গ্রুপের বাকি তিন দলেরই হবে ২ পয়েন্ট।

আগেই বলা হয়েছে এবার বিশ্বকাপের নিয়মানুযায়ী, সমান পয়েন্ট থাকলে দলগুলোর নেট রানরেটই বিবেচ্য হবে। অর্থাৎ যে ম্যাচে জয় পাবে বাংলাদেশ, সে ম্যাচে জয়ের ব্যবধানটা যেন বড় হয়, সে চেষ্টা করতে হবে বাংলাদেশকে।