ওমানের বিপক্ষেও ছন্নছাড়া ব্যাটিং

মোহাম্মদ নাঈমের ইনিংস মান বাঁচিয়েছে বাংলাদেশেরছবি: বিসিবি

ওমানি ফিল্ডারদের ছোট্ট একটা ধন্যবাদ দিতেই পারেন মোহাম্মদ নাঈম। সৌম্য সরকারের জায়গায় একাদশে সুযোগ পেয়ে তিনি যে ইনিংসটি খেলে বাংলাদেশের মুখ বাঁচালেন, সেটি খেলারই কথা ছিল না তাঁর। দুই বার জীবন পেয়েছেন। সুযোগ কাজে লাগিয়ে পেয়েছেন একটা ফিফটি। কিন্তু ওই ফিফটি পাওয়া পর্যন্তই। দলের হালটা শেষ পর্যন্ত টেনে নিয়ে যেতে পারলেন না। দলের বাকি ব্যাটসম্যানরাও ব্যাটনটা ঠিকঠাক লক্ষ্যে নিয়ে যেতে পারলেন না। মোটামুটি বড় সংগ্রহের আশা জাগিয়েও বাংলাদেশের সংগ্রহটা ঠিক স্বস্তি দিতে পারল না কাউকে। ওমানের বিপক্ষে বাঁচা-মরার ম্যাচে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ১৫৩ রানে অলআউট হয়েছে বাংলাদেশ।

নাঈমের সঙ্গে সাকিবের ৮০ রানের জুটিই ছিল প্রাপ্তি
ছবি: বিসিবি

নাঈমের ইনিংসটি খুব দর্শনীয় বলা চলে না। কিন্তু তিনি ছিলেন কার্যকরী। তাঁর ইনিংসটির (৫০ বলে ৬৪) আরও প্রশংসা করা যেত, যদি তিনি শেষ পর্যন্ত থেকে দলকে বড় সংগ্রহে পৌঁছে দিতে পারতেন। তাঁকে যখন দলের বেশি প্রয়োজন, তখনই তিনি ফিরেছেন। একই কথা প্রযোজ্য সাকিব আল হাসানের বেলাতেও। নাঈমকে তিনি দারুণ সঙ্গ দিয়েছেন। ফিফটি না পেলেও নাঈমের সঙ্গে তাঁর ৫৩ বলে ৮০ রানের জুটিই আজ দলের ব্যাটিংয়ের মেরুদণ্ড। কিন্তু ২৯ বলে ৪২ রানের ইনিংসটি আরও বড় করতে পারতেন। আয়েশি ঢংয়ে দৌড়ে রান নিতে গিয়েই বড় ইনিংসের আশা জলাঞ্জলি দিতে হয়েছে তাঁকে। নাঈম আন সাকিব যদি আরও কিছুক্ষণ ইনিংসটাকে টেনে নিয়ে যেতে পারতেন তাহলে সংগ্রহটা আরও বড় হতে পারত, এটা না বললেও চলছে।

লিটন দাস (৭ বলে ৬) আজও ব্যর্থ। নিজের জড়তা কিছুতেই কাটিয়ে উঠতে পারছেন না। ওমানি ফিল্ডার যতীন্দর সিং ডিপ স্কয়ার লেগে তাঁর ক্যাচ ফেলার পরেও। জীবন পাওয়ার পরের বলেই বিলাল খানের ইয়ার্কারে এলবিডব্লু। আম্পায়ার অবশ্য প্রথমে আউট দেননি। পরে রিভিউ নিয়ে সফল লিটন ও বাংলাদেশ। শুরুতেই অবশ্য (ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে) বিলালের বলে অফ স্টাম্পের বাইরে প্রায় ‘ধরা’ খেয়ে গিয়েছিলেন। আম্পায়ার আবেদনে তখন সাড়া দিয়েছিলেন। কিন্তু লিটন ওই মুহূর্তে ছিলেন বেশ আত্মবিশ্বাসী। রিভিউ নিয়ে সে যাত্রা বেঁচে গিয়েছিলেন তিনি।

ওমানের বিপক্ষেও ব্যাটিংটা ছন্নছাড়াই
ছবি: এএফপি

ওমানের ফিল্ডিং বাজে, কিন্তু এই তথ্য মেহেদী হাসানের ভালো লাগার কথা নয়। তাঁকে আজ ওয়ান ডাউনে পাঠানো হয়েছিল। বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে তাঁর ব্যাটিং-সামর্থ্যের কথা মাথায় রেখেই। কিন্তু তিনি ফায়াজের দারুণ এক কট অ্যান্ড বোল্ডের শিকার হয়েছেন। ইনিংসের শুরুর দিতে মেহেদী ওমানের দারুণ ক্যাচে ফিরেছেন। শেষের দিকে অবশ্য বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের তোলা ক্যাচগুলো ভালোই নিয়েছেন তাঁরা। নাঈম, নুরুল হাসান আর আফিফ হোসেনদেও ফেরাতে পেরেছেন ক্যাচগুলো ঠিকমতো ধরে। সাকিবকেও তারা আউট করেছেন দারুণ থ্রোয়ে।

সাকিব-নাঈমের ৮০ রানের জুটির পর আর কারও ব্যাটে রান নেই। ফর্মহীন আরেক ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিম বাংলাদেশের হয়ে শেষবার কবে ৮ নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমেছিলেন, সেটি নিয়ে গবেষণা হতে পারে। কিন্তু ওমানের বিপক্ষে আজকের ম্যাচেও তিনি ব্যর্থ। ৪ বলে ৬ রান করে ফিরেছেন তিনি। ফায়াজের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন তিনি। এরপর মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনকেও শূন্য রানে যতীন্দর সিংয়ের ক্যাচ বানিয়ে ফেরান ওই ফায়াজই। শেষ পর্যন্ত অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ মিডল অর্ডারের ধ্বংসস্তূপের ওপর দাঁড়িয়েই ১০ বলে ১৭ রানের একটি ছোট্ট অথচ কার্যকর ইনিংস খেলে বাংলাদেশের সংগ্রহকে একটা ভদ্রোচিত চেহারা দিয়েছেন। কিন্তু তিনিও শেষ পর্যন্ত খেলে যেতে পারেননি।

ওমানের তিন পেসার কলিমুল্লাহ, বিলাল খান, মোহাম্মদ নাদিম আর ফায়েজ বাট দারুণ বোলিং করেছেন। তাঁদের বোলিংয়ের সামনেই হাঁসফাঁস করেছেন বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানরা। এঁরা তিনজন নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নিয়েছেন ৮ উইকেট। ফায়াজ আর বিলাল নিয়েছেন ৩টি করে উইকেট। কলিমুল্লাহ নিয়েছেন ২ উইকেট। এক উইকেট জিশান মাকসুদের।