ওয়ানডে অভিষেকে গুরবাজের ১২৭ রান, ছক্কার রেকর্ড

ওয়ানডে অভিষেকে সেঞ্চুরি করার পথে আফগান ব্যাটসম্যান রহমানউল্লাহ গুরবাজ।ছবি: টুইটার

বছর দেড়েক আগে ঢাকায় আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি অভিষেকে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৪৩ রান করেছিলেন রহমানউল্লাহ গুরবাজ। আফগানিস্তানের ওপেনার এবার ওয়ানডে ক্যারিয়ার শুরু করলেন সেঞ্চুরি দিয়ে। আজ আবুধাবিতে ওয়ানডে সুপার লিগের ম্যাচে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে অভিষেকে ১২৭ রান করেছেন গুরবাজ। আফগানিস্তানের প্রথম ও সব মিলিয়ে ষোড়শ ব্যাটসম্যান হিসেবে ওয়ানডে অভিষেকে সেঞ্চুরি পেলেন ১৯ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান। ওয়ানডে অভিষেকে গুরবাজের চেয়ে বেশি রান আছে শুধু ক্যারিবীয় কিংবদন্তি ওপেনার ডেসমন্ড হেইন্সের। ১৯৭৮ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অভিষেকে ১৪৮ রান করেছিলেন হেইন্স।

গুরবাজ আজ ছক্কা মেরেছেন ৯টি। এর আগে ওয়ানডে অভিষেকে কোনো ব্যাটসম্যান ৫টির বেশি ছক্কা মারতে পারেননি।

১২৭ বলে ১২৭ রান করা গুরবাজ আজ ছক্কা মেরেছেন ৯টি। ওয়ানডে অভিষেকে সবচেয়ে বেশি ছক্কার রেকর্ডটিকে এক ঝটকায় প্রায় দ্বিগুণ করে ফেললেন আফগান ওপেনার। এর আগে ওয়ানডে অভিষেকে কোনো ব্যাটসম্যান ৫টির বেশি ছক্কা মারতে পারেননি। ১৯৮৭ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ওয়ানডে অভিষেকে ৫টি ছক্কা মেরেছিলেন ভারতের তিনে নামা ব্যাটসম্যান নভজোৎ সিং সিধু।

ওয়ানডেতে এক ম্যাচে আফগানিস্তানের হয়ে সর্বোচ্চ ছক্কার রেকর্ডও নিজের করে নিয়েছেন গুরবাজ। আগের রেকর্ডটি মোহাম্মদ শেহজাদের। ২০১৫ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৮টি ছক্কা মেরেছিলেন আফগান উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান।

গুরবাজের সেঞ্চুরিতে ভর করে প্রথম ওয়ানডেতে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ৯ উইকেটে ২৮৭ রান করেছেন আফগানরা। গুরবাজ ছাড়া আফগানিস্তান ইনিংসে ফিফটি পেয়েছেন শুধু রশিদ খান। ৯ নম্বরে নেমে ৩০ বলে ৫৫ রান করেছেন এই লেগ স্পিনার। আইরিশ অফ স্পিনার অ্যান্ডি ম্যাকব্রাইন পেয়েছেন ৫ উইকেট। রান তাড়ায় ৯ উইকেটে ২৭১ রান তুলে ১৬ রানে হেরেছে আয়ারল্যান্ড।

সেঞ্চুরির পর রহমানউল্লাহ গুরবাজ।
ছবি: আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ড

ওয়ানডে অভিষেকে সেঞ্চুরির সাতকাহন

৫০ বছর ও ৪ হাজার ২৭১ ম্যাচের ইতিহাসে ওয়ানডে অভিষেকে সেঞ্চুরি করেছেন ১৬ জন ব্যাটসম্যান।

ওয়ানডে অভিষেকে সেঞ্চুরির পথে ডেনিস অ্যামিস।
ফাইল ছবি

বিশ্বকাপ ক্রিকেটের প্রথম সেঞ্চুরিয়ান হিসেবেই ডেনিস অ্যামিসকে মনে রেখেছে সবাই। আরও অনেক প্রথমেই আছে ইংলিশ ওপেনারের নাম। ওয়ানডে ইতিহাসের প্রথম দুটি সেঞ্চুরিই তাঁর, যার প্রথমটি ১৯৭২ সালের ২৪ আগস্ট ইতিহাসের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে করেন অ্যামিস। ওল্ড ট্রাফোর্ডের ম্যাচটি ছিল তাঁর অভিষেক ওয়ানডে। ১৩৪ বলে ১০৩ রান করেছিলেন রান তাড়ায় ইনিংস ওপেন করে। অস্ট্রেলিয়ার ২২২ পেরিয়ে জেতে তাঁর দল। পরে আরও তিনটি সেঞ্চুরি করেন অ্যামিস।

১৪৮

ওয়ানডে অভিষেকে সর্বোচ্চ ইনিংসটি খেলেছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের ডেসমন্ড হেইন্স। ১৯৭৮ সালে অ্যান্টিগায় অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ১৩৬ বলে ১৪৮ রান করেন ক্যারিবীয় ওপেনার।

অভিষেকে সেঞ্চুরি পাওয়াদের মাত্র তিনজন ওয়ানডে ক্যারিয়ারে ৫ হাজারের বেশি রান করেছেন—হেইন্স (৮৬৪৮), অ্যান্ডি ফ্লাওয়ার (৬৭৮৬) ও মার্টিন গাপটিল (৬৮৪৩)।

পাকিস্তান ও দক্ষিণ আফ্রিকার তিনজন করে ব্যাটসম্যান অভিষেকে সেঞ্চুরি পেয়েছেন। ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ডের দুজন ব্যাটসম্যানের অভিষেক ওয়ানডে সেঞ্চুরি আছে। বাকি একটি করে সেঞ্চুরি ওয়েস্ট ইন্ডিজ, জিম্বাবুয়ে, অস্ট্রেলিয়া, ভারত হংকং ও আফগানিস্তানের।

জিম্বাবুয়ের হারারে স্পোর্টস ক্লাব ও আবুধাবির শেখ জায়েদ স্টেডিয়াম ওয়ানডে অভিষেকে দুজনকে সেঞ্চুরি করতে দেখেছে।

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সর্বোচ্চ চারটি সেঞ্চুরি হয়েছে।

ওয়ানডে অভিষেকে সেঞ্চুরি পাওয়া খেলোয়াড়দের মধ্যে মাইকেল লাম্ব (৩ ম্যাচ), মার্ক চ্যাপম্যান (৬), টেম্বা বাভুমা (৬), রিজা হেনড্রিকস (২১) ও আবিদ আলী (৬) এখনো দ্বিতীয় সেঞ্চুরি পাননি।

• টেস্ট খেলুড়ে দেশের বাইরে শুধু হংকংয়ের মার্ক চ্যাপম্যানই ওয়ানডে অভিষেকে সেঞ্চুরি পেয়েছেন। ২০১৫ সালে দুবাইয়ে আরব আমিরাতের বিপক্ষে এটি করেন তিনি ।
• ইতিহাসের প্রথম ৩০৫৬ ওয়ানডে অভিষেকে সেঞ্চুরি হয়েছে ৫টি। সর্বশেষ ১২১৫ ম্যাচে বাকি ১১টি।
• ওয়ানডে অভিষেকে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ রান নাসির হোসেনের। ২০১১ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৬৩।