ওয়ানডেতে দলের রানে কোহলির পরই সাকিবের প্রভাব

গত বছর চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে জাতীয় দলের অনুশীলনে সাকিব আল হাসান।ছবি : প্রথম আলো

বেশি দিন নেই। ২৯ অক্টোবর আইসিসির নিষেধাজ্ঞা থেকে সাকিব আল হাসানের মুক্তি মিলবে। নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে চেনা ছন্দে ফিরতে কঠোর পরিশ্রম চালিয়ে যাচ্ছেন সাকিব। গত দুই সপ্তাহ ধরে বিকেএসপিতে করছেন একান্ত অনুশীলন। ফিটনেসের কাজ দিয়ে অনুশীলন শুরু করে গত কিছুদিন ধরে নিজের ব্যাটিং-বোলিং দক্ষতা ঝালিয়ে নিচ্ছেন।

জানা গেছে, শুরুতে কিছুটা জড়তা থাকলেও ধীরে ধীরে খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসছেন সাকিব। বিকেএসপির ৪ নম্বর মাঠে নিয়মিত দক্ষতার অনুশীলন করছেন। লক্ষ্য একটাই, নিষিদ্ধ হওয়ার আগে সাকিব যেই মানের ক্রিকেট খেলতেন, শুরুটা যেন ঠিক সেখান থেকেই হয়।

গত বিশ্বকাপে যেমন সাকিবের পারফরম্যান্স সহজে ভুলবার নয়। গত তিন বছর ধরে অবশ্য ব্যাটসম্যান সাকিব দারুণ ফর্মে আছেন। বিশেষ করে ওয়ানডে ক্রিকেটে বিশ্বের সেরাদের তালিকায় শুধু ব্যাটিং দিয়েই জায়গা হবে সাকিবের। ব্যাট হাতে ম্যাচ জেতানোর দক্ষতায় ভারতীয় অধিনায়ক বিরাট কোহলির পরেই সাকিবের অবস্থান।

২০১৭ সাল থেকে ওয়ানডের প্রভাববিস্তারী ব্যাটসম্যানদের মধ্যে কোহলি আছেন শীর্ষে। তারপরেই সাকিবের অবস্থান। আয়ারল্যান্ডের পল স্টারলিং, ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিস গেইল, নিউজিল্যান্ডের রস টেলর আছেন সেরা পাঁচে। রোহিত শর্মা, ফাফ ডু প্লেসি, বেন স্টোকস, কেন উইলিয়ামসন ও ডেভিড ওয়ার্নার আছেন ওয়ানডে ক্রিকেটে প্রভাববিস্তারী ব্যাটসম্যানদের ছোট্ট তালিকায়। এই দশ ব্যাটসম্যান বড় রান করা মানেই দল জেতা।

ম্যাচে কোহলি না থাকলে ভারত গড়ে ১৩.৫ রান হারায়। অর্থাৎ কোহলির বদলে আর যে-ই নামুক না কেন, গড়ে ১৩.৫ রান কম পায় ভারত। আর সাকিব না থাকলে বাংলাদেশের স্কোরে এমন প্রভাবটা প্রায় ১২ রানের।

এই তালিকায় সাকিব ও স্টোকসই শুধু অলরাউন্ডার। তবে গত তিন বছরের রেকর্ডে স্টোকস থেকে অনেকটাই এগিয়ে সাকিব। গত তিন বছরে ৩৬ ইনিংস খেলে সাকিব ১৬৭৩ রান করেছেন। ৫০.৬৯ গড় ও ৮৮.৪৭ স্ট্রাইক রেটে রান করেছেন। সেঞ্চুরি তিনটি ও ১৫টি ফিফটি করেছেন এই সময়ে। এর মধ্যে গত বিশ্বকাপে করা ৬০৬ রান তো আছেই। স্টোকস একই সময়ে ৪০ ইনিংসে ৫৬.৮২ গড়ে করেছেন ১৬৪৮ রান।

তবে গত কয়েক বছরের পারফরম্যান্সে কোহলির ধারে কাছে কেউই নেই। গত তিন বছরে ৭১ ইনিংস খেলে অবিশ্বাস্য ৭৫.৩৮ গড়ে কোহলির রান ৪২৯৭। সেঞ্চুরিই করেছেন ১৭টি, ফিফটি ২০টি।

সেটা ভারতের খেলাতেও ভালোভাবে টের পাওয়া যায়। ক্রিকভিজের এক অ্যানালাইসিসে দেখা গেছে, ম্যাচে ব্যাটসম্যান হিসেবে প্রভাব বিস্তারে কোহলির চেয়ে ভালো কেউ নেই।

ম্যাচে কোহলি না থাকলে ভারত গড়ে ১৩.৫ রান হারায়। অর্থাৎ কোহলির বদলে আর যে-ই নামুক না কেন, গড়ে ১৩.৫ রান কম পায় ভারত। আর সাকিব না থাকলে বাংলাদেশের স্কোরে এমন প্রভাবটা প্রায় ১২ রানের। সাকিব খেলছেন না এমন ম্যাচে গড়ে ১১.৭ রান কম করে বাংলাদেশ।

তালিকায় সবচেয়ে বড় চমক হচ্ছেন আইরিশ ব্যাটসম্যান পল স্টারলিং। গত তিন বছরে ৪৭ ইনিংসে ২০৩৭ রান করেছেন এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান। সেঞ্চুরি করেছেন চারটি। স্টারলিং রান করা মানেই আয়ারল্যান্ডের জয়, কদিন আগে যেমন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে তাঁর সেঞ্চুরিতেই হারায় আয়ারল্যান্ড। আর এই ওপেনার না থাকলে গড়ে ১০.২ রান কম করে তাঁর দল।

২০১৭ সালের পর ওয়ানডের প্রভাববিস্তারী ব্যাটসম্যান (কমপক্ষে ৩০ ইনিংস)

বিরাট কোহলি ১৩.৫
সাকিব আল হাসান ১১.৭
পল স্টারলিং ১০.২
ক্রিস গেইল ৯.৭
রস টেলর ৯
রোহিত শর্মা ৮.৯
ফাফ ডু প্লেসি ৮.৬
বেন স্টোকস ৮.৫
কেন উইলিয়ামসন ৭.৭
ডেভিড ওয়ার্নার ৭.৩