করোনায় ওজন বেড়েছে মাশরাফির

মাশরাফি বিন মুর্তজা। ফাইল ছবি
মাশরাফি বিন মুর্তজা। ফাইল ছবি

স্বস্তির খবরটা পেতে মাশরাফি বিন মুর্তজাকে অপেক্ষা করতে হলো ২৪ দিন। পরশু তাঁর করোনা পরীক্ষার ফল নেগেটিভ এসেছে। তবে মাশরাফির সবকিছুতে যেমন 'শেষ হয়ে হইল না শেষ' ব্যাপারটা থাকে, করোনাতেও আছে।

আক্রান্ত হওয়ার পর তৃতীয় পরীক্ষায় 'নেগেটিভ' হলেও করোনা যে ধাক্কা দিয়ে গেছে, সেখান থেকে মাশরাফির বের হতে আরেকটু সময় লাগবে বলেই মনে হচ্ছে। বিছানা থেকে উঠে দাঁড়াতে কষ্ট হচ্ছে, দৃষ্টিও পরিষ্কার নয়। করোনা যাঁদের কঠিন পরীক্ষা নিচ্ছে, তাঁদের অবশ্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কাটিয়ে উঠতে কিছুটা সময় লাগছেই।

গত মার্চে দেশে করোনার প্রাদুর্ভাব ছড়িয়ে পড়ার পর মানুষকে সচেতন করতে সোচ্চার হন মাশরাফি। ফেসবুকে বারবার আহ্বান জানান ঘরে থাকতে, স্বাস্থ্যবিধি মানতে। সাংসদ বলে ঝুঁকি নিয়ে ছুটে যেতে হয়েছে নিজ এলাকা নড়াইলেও। শেষ পর্যন্ত করোনা ঢুকে পড়েছে মাশরাফির ঘরে। আক্রান্ত হয়েছেন পরিবারের পাঁচজন। আক্রান্ত হয়েছে গৃহপরিচারিকাও। শুরুতে আশঙ্কা ছিল পুরোনো শ্বাসকষ্টটা না আবার মাশরাফিকে ভোগায়! সেটা অবশ্য হয়নি।

আক্রান্ত হওয়ার পরপরই মাশরাফি দুই সন্তানকে পাঠিয়ে দেন নড়াইলে। শারীরিক যন্ত্রণার চেয়ে মানসিক কষ্টটাই ছিল বেশি। গতকাল মুঠোফোনে বলছিলেন, 'ওদের ছাড়া এভাবে থাকা হয় না। মানসিকভাবে খুব এলোমেলো লেগেছে। আমার চেয়ে অবশ্য আমার স্ত্রীরই বেশি কষ্ট হয়েছে।'

করোনায় আক্রান্ত অবস্থায়ই একবার মাশরাফিকে অনলাইনে কথা বলতে হয়েছে লোহাগড়ার মানুষদের সঙ্গে। মাশরাফির বিধ্বস্ত চেহারা দেখে অনেকেই আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন। ইতিবাচক দিক হচ্ছে, মাশরাফির এই তিন সপ্তাহে ওজন কমেনি; বরং ছয় কেজি বেড়েছে। 'বিভিন্ন ফলের রস আর তিন বেলা ভাত খেয়েছি তো, ওজন বেড়েছে। খাবারের স্বাদ ছিল না মুখে, ওষুধের কারণে হয়তো রুচিটা ছিল'—বলছিলেন তিনি।

করোনাভাইরাসের শুরু থেকে একটা কথা মাশরাফি বারবার বলে আসছেন। সবাই যেন নিজের সুরক্ষা নিজে নিশ্চিত করেন। শেষ পর্যন্ত তাঁকেও করতে হলো করোনার সঙ্গে লড়াই। অবশ্য লড়াই মাশরাফির জীবনের অংশ আগে থেকেই। চোটে পড়ে সাতবার শল্যবিদের ছুরির নিচে গেছেন। ডেঙ্গুতে ভুগেছেন। এবার করোনার অভিজ্ঞতাও হলো। মাশরাফি অবশ্য এর মধ্যেও ভালো কিছু খুঁজে পাচ্ছেন। হাসতে হাসতে বলছিলেন, 'আমি বিষয়টাকে এভাবে দাঁড় করিয়েছি, আল্লাহ যাকে বেশি ভালোবাসেন, বারবার তার পরীক্ষা নেন।'

মাশরাফির সব চিন্তা এখন স্ত্রী সুমনা হককে নিয়ে। তিনি এখনো পজিটিভ। তবে স্বস্তির খবর, মাশরাফির চেয়ে তুলনামূলকভাবে কম ভুগতে হচ্ছে তাঁকে। নিজের অভিজ্ঞতা থেকে সবার উদ্দেশে মাশরাফি আবারও বলেছেন, 'একটা কথাই বারবার বলছি—ঘরে থাকুন, সাবধানে থাকুন।'