করোনা বিরতিতে দেখা মিলছে অন্য রুবেলের

দারুণ বোলিং করছেন রুবেল।ছবি: প্রথম আলো

সকাল দেখে দিনের পূর্বাভাস দেওয়া যে কখনো কখনো ভীষণ কঠিন হয়ে যায়, আজ রুবেল হোসেনের বোলিং দেখে আরেকবার তা বোঝা গেল। ইনিংসের প্রথম বলেই গ্লান্স করে তাঁকে বাউন্ডারি মারলেন তামিম ইকবাল। ম্যাচের প্রথম বলে বাউন্ডারি খেয়েই কিনা দেখা দিলেন অন্য রুবেল।

অবশ্য বিসিবি প্রেসিডেন্টস কাপ জুড়েই দেখা যাচ্ছে অন্য রুবেলকে। আজ তামিম একাদশের বিপক্ষে ৩০ বছর বয়সী পেসার যেন আরও বিধ্বংসী। কতটা বিধ্বংসী পাওয়ার প্লেতে তাঁর প্রথম স্পেলের বোলিং দেখলেই বোঝা যাবে। প্রথম বলে তামিম ওই বাউন্ডারি মারার পর পরের ২৯ বলের ২৮টিতে কোনো রানই নিতে পারেনি তামিম একাদশের ব্যাটসম্যানরা। রুবেল এ সময়ে একে একে ফিরিয়েছেন তানজিদ হাসান, এনামুল হক আর মোহাম্মদ মিঠুনকে। প্রথম স্পেলে ৫ ওভার বোলিং করে ৩ মেডেনে ৫ রান দিয়ে ৩ উইকেট—স্বপ্নের স্পেল একেই বলে!

অফ স্টাম্পের বাইরের বল অহেতুক খেলতে গিয়ে উইকেট বিলিয়ে দিয়ে আসায় তামিম একাদশের ব্যাটসম্যানরা কাঠগড়ায় উঠবেন। তবে রুবেলের কৃতিত্ব তাতে কিছুতেই কমছে না। তাঁর অসাধারণ বোলিংয়ে আজও দেখা গেল টপ অর্ডারের মলিন ছবি। মাহমুদউল্লাহ একাদশের বিপক্ষে ১৭ রানে ৪ উইকেট হারানো তামিম একাদশকে টেনে তুলেছে ইয়াসির আলী-মাহিদুল ইসলামের পঞ্চম উইকেটে ১১১ রানের জুটি। বিসিবি প্রেসিডেন্টস কাপে টপ অর্ডারের ব্যর্থতা, পেসারদের দুর্দান্ত বোলিংয়ের সঙ্গে আরেকটি দৃশ্য বেশ নিয়মিত হয়ে পড়েছে। ভালো জুটি হলেই সেটির শেষ হবে রান আউটে!

সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে দলের ব্যাটিং বিপর্যয়ে নাজমুল একাদশের মুশফিকুর রহিম আর ইরফান শুক্কুর ষষ্ঠ উইকেটে গড়েছিলেন ৫৯ রানের মূল্যবান জুটি। সেটি শেষ হয় ইরফানের রান আউট দিয়ে। চতুর্থ ম্যাচে তামিম একাদশের বিপক্ষে বিপর্যয়ে মুশফিক-আফিফ হোসেন গড়েন ১৪৭ রানের জুটি। তিন অঙ্ক থেকে মাত্র ২ রানে দূরে থেকে সেঞ্চুরির অতৃপ্তি নিয়ে আফিফকে ফিরতে হয়ে মুশফিকের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউট হয়ে। আজ পঞ্চম ম্যাচে ইয়াসির-মাহিদুলও দারুণ এক জুটি গড়ে দলের বিপর্যয় সামলেছেন। সেটিও শেষ ইয়াসিরের রান আউট (৬২) দিয়ে। ডিপ মিড উইকেটে সাব্বিরের হাতে ক্যাচ হয়ে রুবেলের আরেক শিকার ইয়াসিরের সঙ্গী মাহিদুল ফিরেছেন ৫৭ রান করে।

আবারও টপ অর্ডার ব্যর্থ হয়েছে।
ছবি: প্রথম আলো

তামিম একাদশ তবুও ৮ উইকেটে ২২১ রানের লড়াইয়ের স্কোর পেয়েছে সাইফউদ্দিন-মোসাদ্দেক হোসেনের সপ্তম উইকেটে তোলা ৫৬ বলে ৭৫ রানের জুটির সৌজন্যে। প্রথম দুই স্পেলে দুর্দান্ত বোলিং করা রুবেল ডেথ ওভারে অবশ্য প্রত্যাশিত সাফল্য পাননি। নিজের শেষ ২ ওভারে ২১ রান দিয়েও দলের সফল বোলার তিনিই। ১০ ওভারে ৩ মেডেনে ৩৪ রান দিয়ে নিয়েছেন ৪ উইকেটে। শুধু এ ম্যাচেই কেন, ৪ ম্যাচে ১০ উইকেট নিয়ে সিরিজে এখনো পর্যন্ত সেরা বোলারও তিনি। করোনাবিরতিতে ক্রিকেটে ফিরে প্রায় সব পেসারই আছেন দারুণ ছন্দে। আর ছন্দটা বোধ হয় সবচেয়ে বেশি খুঁজে পেয়েছেন রুবেলই!