কার বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নিতে চেয়েছিলেন আকরাম?

প্রতিশোধ নিতে চেয়েছিলেন ওয়াসিম আকরাম। ফাইল ছবি
প্রতিশোধ নিতে চেয়েছিলেন ওয়াসিম আকরাম। ফাইল ছবি

বাঁহাতি পেস বোলিংয়ে তখন রীতিমতো ব্যাটসম্যানদের শাসন করছেন ওয়াসিম আকরাম। আসলে সময়টাই তখন ছিল পেসারদের রাজত্ব। পাকিস্তানের কিংবদন্তি ফাস্ট বোলার ওয়াসিমের সঙ্গে জুটি বেঁধে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছিলেন ওয়াকার ইউনিস। নব্বইয়ের দশকজুড়ে তো 'টু ডব্লু' কথাটাই আতঙ্কের প্রতিশব্দ হয়ে উঠেছিল। এরপর এলেন শোয়েব আখতার। গতি আর সুইংয়ের ঝড় তুলে প্রতিপক্ষকে ব্যাতিব্যস্ত করা এই তিন ফাস্ট বোলার দিয়েই পাকিস্তান এক সময় হয়ে উঠেছিল দারুণ এক দল।

সম্প্রতি ইউটিউবে নব্বইয়ের দশকে পাকিস্তান দলে খুব অল্প সময় খেলা তারকা বাসিত আলীর সঙ্গে আড্ডায় মেতেছিলেন ওয়াসিম। সেখানে তাঁর স্মৃতিচারণে উঠে এসেছে মজার এক তথ্য। একবার ওয়াসিম আকরাম নাকি দক্ষিণ আফ্রিকান ফাস্ট বোলার অ্যালান ডোনাল্ডের ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে রীতিমতো প্রতিশোধ পরায়ণ হয়ে উঠেছিলেন!
ঘটনাটা অবশ্য আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের নয়। ওয়াসিম তখন খেলতে গেছেন ইংলিশ কাউন্টি, ল্যাঙ্কাশায়ারের হয়ে।ওই সময়ে এক ম্যাচে ডোনাল্ডের আগুনে গোলা বোলিংয়ের আঘাতে কেটে গিয়েছিল ওয়াসিমের থুতনি। চোটটা এতই গভীর ছিল যে শেষ পর্যন্ত তাঁকে যেতে হয়েছিল হাসপাতালে। থুতনিতে ২০টি সেলাই দিতে হয়েছিল তখন।
বাসিত আলী আড্ডার শুরুতে তাঁর সময়ের সেরা কয়েকজন দুর্দান্ত পেসারের নাম বলতে অনুরোধ করেন ওয়াসিমকে। পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক বলছিলেন, ' এই তালিকায় আছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কার্টলি অ্যামব্রোস, কোর্টনি ওয়ালশ। গ্লেন ম্যাকগ্রাকেও রাখবো। অ্যালান ডোনাল্ডকেও এই সেরাদের কাতারে রাখবো। আমি বলতে চাইছি, তারা সবাই ভালো বোলার।'
কিন্তু যেই না ডোনাল্ডের নাম নিয়েছেন, তখনই ওয়াসিমের মনে পড়ে গেল সেই ভয়াবহ ঘটনার। এরপর বলেন কীভাবে চোট পেয়েছিলেন, কেনই বা হয়ে উঠেছিলেন প্রতিশোধপরায়ণ। নিজের থুতনি দেখিয়ে বলছিলেন, ' এখানে ২০টি সেলাই লেগেছিল, থুতনির নিচের ডান পাশে। আমার মনে হয় সেই ঘটনাটা ঘটে ১৯৮৯ সালে। এবড়োখেবড়ো পিচে তখন আট নম্বরে ব্যাট করতে নামি। ও একটা শর্ট বল করেছিল এবং তখন সে প্রায়ই সহজে ঘন্টায় দেড়শ কিলোমিটার গতিতে বল করতো। আমি তখন বিশ বছরের যুবক এবং পুল করার চেষ্টা করি বলটা। কিন্তু সেটা ব্যাটের ওপরের দিকে লাগে এবং আমার থুতনির নিচে এসে আঘাত করে।'
ডোনাল্ডের বলের আঘাত ভুলতে পারেননি ওয়াসিম। তাইতো হাসপাতাল থেকে তখনই মাঠে ফেরার চেষ্টা করেন, 'আমি তখন প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য পাগল হয়ে উঠেছিলাম। কারণ আমি ওকে ছাড়তে চাইনি। আমি হাসপাতালে গেলাম। অনেকটা কেটেছিল আমার। চিকিৎসক আমার মুখের ভেতরে এবং বাইরে মিলিয়ে বিশটি সেলাই দেন। আমাকে কয়েকদিন বিশ্রামে থাকতে বলেন। কিন্তু আমি বললাম, মাঠে বল করতে যাবো। ওই বিকেলে আমি বল করেছিলাম এবং ম্যাচটা আমরাই জিতেছিলাম। কিন্তু মজার ব্যাপার হলো ডোনাল্ড ব্যাট করতেই আসেনি। মনে হয় সে ভয় পেয়েছিল!'