কেন ভারত এগিয়ে যাচ্ছে, পিছিয়ে যাচ্ছে পাকিস্তান

২০১৯ বিশ্বকাপে সর্বশেষ মুখোমুখি হয়েছে ভারত ও পাকিস্তান।ছবি: সংগৃহীত

গত দশকে ভারত বিশ্বকাপসহ বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক শিরোপা জিতেছে। পাকিস্তানের শিরোপা বলতে ভারতকেই হারিয়ে ২০১৭ চ্যাম্পিয়নস ট্রফি জয়। ভারত টেস্ট র‍্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে উঠেছে, অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে টেস্টে সিরিজে হারিয়েছে। পাকিস্তানের সেভাবে বলার মতো কোনো গল্প নেই।

১০ বছরে ভারত কীভাবে পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে গেল, তার একটা ব্যাখ্যা দিয়েছেন পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক ও উইকেটকিপার রশিদ লতিফ। তাঁর চোখে, ভারত বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি কাজে লাগিয়ে, তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে কোচদের তৈরি করেছে, খেলোয়াড়দের একটা প্রজন্ম তুলে এনেছে। সে তুলনায় পাকিস্তান এখনো খালি চোখে দেখে প্রতিভার বিচার করে যাচ্ছে। সাবেক ক্রিকেটারদের কাজে লাগানোর ক্ষেত্রেও ভারত-পাকিস্তানের ক্রিকেটে পার্থক্য দেখছেন রশিদ লতিফ।

পাকিস্তানের সাবেক উইকেটকিপার রশিদ লতিফ।
ছবি: এএফপি

‘২০১০ সালের পর ভারতের ক্রিকেট ওপরের দিকেই উঠছে শুধু। যেখানে আমরা নিচের দিকেই নেমে চলেছি। আমরা আমাদের কোচদের বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির সাহায্যে প্রস্তুত করতে পারছি না। খালি চোখে দেখেই একজন ক্রিকেটারের প্রতিভা বিচার করি, সেটাতে আস্থা রাখি’—ইউটিউব চ্যানেল মাই মিস্টার ক্রিকেট কোচ-এ বলেছেন রশিদ লতিফ।

গত এক দশকে ভারতের ক্রিকেটে উত্থানের পেছনে আইপিএলের ভূমিকার কথা স্বীকার করেন প্রায় সবাই-ই। রশিদ লতিফও ব্যতিক্রম নন। তাঁর কথা, ‘২০১০ সাল থেকে আইপিএল তথ্যনির্ভর। প্রতিভাবান খেলোয়াড়দের একটা পুল তৈরিতে এটা ওদের অনেক সাহায্য করেছে। (আইপিএলের ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোতে) বিদেশি কোচরাও এ ক্ষেত্রে ওদের অনেক সাহায্য করেছে।’

আইপিএলের দল মুম্বাই ইন্ডিয়ানস থেকে বুমরা, পান্ডিয়াদের পেয়েছে ভারত।
ছবি: টুইটার

উদাহরণ হিসেবে সবচেয়ে বেশিবার আইপিএল চ্যাম্পিয়ন মুম্বাই ইন্ডিয়ানসের উদাহরণ টেনে এনেছেন রশিদ লতিফ। প্রতিভাবান খেলোয়াড়দের খুঁজে বের করতে ভারতেরই সাবেক কোচ জন রাইটকে নিয়োগ দিয়েছিল মুম্বাই ইন্ডিয়ানস।

নিউজিল্যান্ডের কোচের কাজ কীভাবে মুম্বাই ইন্ডিয়ানস ও ভারত জাতীয় দলকে সাহায্য করেছে, সেটা তুলে ধরলেন রশিদ লতিফ, ‘উদাহরণ হিসেবে দেখুন, মুম্বাই ইন্ডিয়ানস জন রাইটকে নিয়োগ দিল। তিনি শুধু প্রতিভা খুঁজে বের করতেন। লম্বা সময় ধরে সেখানে ছিলেন তিনি। দেশটার বিভিন্ন জায়গায় গেছেন, প্রতিভা খুঁজে বের করে এনেছেন। যশপ্রীত বুমরা, ইশান কিষান, হার্দিক পান্ডিয়ারা তো মুম্বাই ইন্ডিয়ানসেরই তৈরি করা।’

পাকিস্তান জাতীয় দলের প্রধান কোচ মিসবাহ-উল-হক ও বোলিং কোচ ওয়াকার ইউনিস।
ফাইল ছবি: এএফপি

এখানে সাবেক ক্রিকেটারদের কাজে লাগানোর ক্ষেত্রেও ভারত-পাকিস্তানের একটা পার্থক্য দেখছেন রশিদ লতিফ। পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়কের চোখে, ‘বিদেশি কোচদের পাশাপাশি ওদের সাবেক খেলোয়াড়েরাও ভারতের বর্তমান খেলোয়াড়দের গড়ে উঠতে অনেক সাহায্য করেছে। ভারত আর পাকিস্তানের মধ্যে এটা অনেক বড় একটা পার্থক্য। আমরা পাকিস্তানের সাবেক খেলোয়াড়দের (জাতীয় দলের) কোচ হিসেবে নিয়োগ দিচ্ছি ঠিকই, কিন্তু পিএসএলের (পাকিস্তান সুপার লিগ) ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো সাবেকদের দলের সঙ্গে খুব একটা রাখে না। এটা একটা বড় সমস্যা।’

ভারতের আইপিএলের মতো পাকিস্তানেরও টি-টোয়েন্টি ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ থেকে অবশ্য প্রতিভাবান খেলোয়াড় উঠে আসছে। বাবর আজম, মোহাম্মদ রিজওয়ান, শাহীন শাহ আফ্রিদিদের নিয়ে পাকিস্তানও ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে। পালাবদলের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।