কোহলিকে নিয়ে রসিকতা করার ‘মজা’ টের পেয়েছিলেন জাম্পা

কোহলিকে নিয়ে মজা করা কত বড় ভুল, সেটা টের পেয়েছেন জাম্পা।
ছবি: টুইটার

২০১৬ সালে বিরাট এক ভুল করেছিলেন অ্যাডাম জাম্পা। টুইটারে বিরাট কোহলিকে নিয়ে একটু মজা করেছিলেন। নিজেদের তারকা সম্পর্কে বরাবরই একটু স্পর্শকাতর ভারতীয় সমর্থকেরা। সেদিন একেবারে খেপে উঠেছিলেন ভারতের নেটিজেনরা। জাম্পার ওপর রীতিমতো কাঁপিয়ে পড়েছিলেন সবাই। কোহলি কে, কেমন খেলোয়াড়, কখনো তাঁর পর্যায়ে যেতে পারবেন কি না, সেটা সেদিনই জেনে গিয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ান লেগ স্পিনার।

এসব কথা সে সময়ই জানা গিয়েছিল। কিন্তু কোহলি নিজে যে রসিকতাটার জবাব দিয়েছিলেন জাম্পাকে, সেটা জানা ছিল না কারও। টুইটারে নিজেকে নিয়ে আলোচনা হচ্ছে দেখে আগ্রহ নিয়ে পুরো ব্যাপারটাই নাকি দেখেছিলেন কোহলি। এবং সময়–সুযোগ বুঝে জাম্পাকে ঠিকই টের পাইয়ে দিয়েছেন সেটা। সিডনি মর্নিং হেরাল্ডের সঙ্গে কথোপকথনে সে ঘটনাই জানিয়েছেন জাম্পা।

২০১৬ সালে প্রথমবারের মতো আইপিএলে ডাক পেয়েছিলেন জাম্পা। রাইজিং পুনে সুপারজায়ান্টস দলে ডাক পেয়েছিলেন জাম্পা। ওদিকে অস্ট্রেলিয়ান সতীর্থ কেইন রিচার্ডসন খেলছিলেন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুতে। সে আনন্দে রিচার্ডসন টুইটারে কোহলি ও এবি ডি ভিলিয়ার্সের ছবি দিয়ে বলেছিলেন, ‘আমি সৌভাগ্যবান, কারণ এ দুজনের ব্যাটিং খুব কাছ থেকে দেখতে পারি।’ জাম্পা একটু মজা করতে চেয়েছিলেন। বলেছিলেন, ‘এরা কারা?’

সেদিনই এ রসিকতার ফল টের পেয়েছিলেন জাম্পা। ভার্চ্যুয়াল জগৎ কত কঠিন হয়ে উঠতে পারে, সেটা বুঝেছিলেন। কিন্তু মাঠেও যে এর জবাব পাবেন, সেটা কে জানত? বেঙ্গালুরুর বিপক্ষে এক মাস পরই খেলতে নেমেছিলেন। সেদিন খুব খারাপ করেননি। ৩৫ রানে ২ উইকেট পেয়েছিলেন। তবে কোহলির কারণে সেদিন অন্য কারও আলোচনায় আসার উপায় ছিল না। ৫৮ বলে অপরাজিত ১০৮ রানের এক ইনিংস খেলেছিলেন কোহলি।

মাঠে খুবই আগ্রাসী থাকেন কোহলি।
ছবি: টুইটার

জাম্পা বিস্তারিত জানিয়েছেন সিডনি মর্নিংকে, ‘আমি রিচার্ডসনের পোস্টে বরাবরের মতোই একটু মজা করেছিলাম, “বন্ধু ওরা কারা?” ভারতের ভক্তরা আমাকে সেটা ভুলতে দেয়নি। বিরাটও নির্ঘাত সেটা দেখেছেন। আমার অভিষেক হলো, তাঁকে ১ ওভার করলাম। ওভারের শেষ বলে আমাকে চার মারলেন, তারপর আমার কাছে এসে বললেন, “বন্ধু, টুইটার থেকে যত সম্ভব দূরে থেকো।” আমি তো অবাক, “বাপ রে, এ তো টুইটারে সবকিছু পড়ে।” সেদিন ১২০ করেছিল (১০৮ *)। আমিই আগুন খুঁচিয়ে দিয়েছিলাম।’

কোহলির এ রূপটাই জাম্পার মনে গেঁথে নেই। বরং এবার বেঙ্গালুরু দলে খেলার সুবাদে কোহলিকে আরও কাছ থেকে দেখেছেন। আর সে সুবাদে জানেন, কোহলি মানুষ হিসেবে কতটা অন্য রকম। সংযুক্ত আরব আমিরাতের অভিজ্ঞতা জানিয়েছেন জাম্পা, ‘প্রথম দিন আমি সেখানে পৌঁছাতেই আমাকে হোয়াটসঅ্যাপ করেছেন। আমার কাছে তাঁর নম্বর ছিল না। এমনভাবে যোগাযোগ করেছেন যেন আমরা দুজন দুজনকে বহুদিন ধরেই চিনি। মাঠে যেমনটা দেখেন, একদমই ওরকম নন। ম্যাচে আর অনুশীলনেই আগ্রাসন বের করেন। প্রতিদ্বন্দ্বিতা পছন্দ করেন, অন্যদের মতোই হারতে ঘৃণা করেন। অন্যদের চেয়ে মাঠে এই জিনিসটা হয়তো বেশি দেখিয়ে ফেলেন। একবার সেখান থেকে বের হলেই, সবচেয়ে মজার লোক। বাসে বসে ইউটিউব দেখছেন, জোরে জোরে হাসছেন। কিছুদিন আগে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া একটা মজার ভিডিও দিয়েছিল। সেটা দেখে টানা তিন সপ্তাহ হেসেছেন। মজার রসিকতা পেলে, সেটা বারবার উপভোগ করতে চান।’