কোহলিদের হারিয়ে শীর্ষে দিল্লি

৪ উইকেট নিয়েছেন দিল্লি ক্যাপিটালসের পেসার কাগিসো রাবাদা (বাঁয়ে)।ছবি: বিসিসিআই

দিল্লি ক্যাপিটালস ইনিংসের তৃতীয় ওভার। নবদীপ সাইনি করা ওভারের তৃতীয় বলে কী দারুণ এক শটই না খেললেন পৃথ্বী শ। কিন্তু তার চেয়েও দারুণভাবে শর্ট কাভারে বলটিকে আটকে দিলেন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু অধিনায়ক বিরাট কোহলি। এরপর স্বভাবগতভাবে বলটিতে বাঁ হাতে নিয়ে ট্রাউজারে ঘষেও নিলেন কোহলি আর ডান হাতের আঙুলে লালাও মাখিয়ে নিলেন লালা।

বড় ভুলটা এরপরই করতে বসেছিলেন ভারতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক। লালা মাখানো আঙুল দিয়ে বলটাকে যে প্রায় ঘষেই দিয়েছিলেন! কিন্তু একেবারে শেষ মুহূর্তেই যেন কোহলির মনে পড়ল ‘আরে এটা তো করোনাকালের ক্রিকেট’, সরিয়ে নিলেন লালা মাখানো আঙুল। যে মুহূর্ত নিয়ে পরে টুইট করেছেন ক্রিকেট কিংবদন্তি শচীন টেন্ডুলকারও।

শেষ মুহূর্তে হাত সরিয়ে বলকে স্যানিটাইজ করা থেকে বাঁচালেও ম্যাচ বাঁচাতে পারেননি কোহলি। দুবাইয়ে আজ ১৯৭ রানের লক্ষ্যের পেছনে ছুটে তাঁর দল থমকে গেছে ৯ উইকেটে ১৩৭ রানে। ৫৯ রানে ম্যাচটি জিতে আপাতত পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে উঠে গেছে শ্রেয়াস আইয়ারের দিল্লি। পাঁচ ম্যাচে চার জয়ে ৮ পয়েন্ট দিল্লির। সমান ম্যাচে দ্বিতীয় হারের স্বাদ পাওয়া বেঙ্গালুরু ৬ পয়েন্ট নিয়ে আছে তৃতীয় স্থানে।

রান তাড়ায় বেঙ্গালুরুর হয়ে সবচেয়ে বেশি রান অধিনায়ক কোহলিরই। রান তোলায় অবশ্য টি-টোয়েন্টির গতি ছিল না, ৪৩ রান করতে ৩৯ বল খেলতে হয়েছে অধিনায়ককে। চার-ছক্কাও তেমন মারতে পারেননি কোহলি, তাঁর ইনিংসে চার মোটে ২টি, ছক্কা ১টি।

কোহলি ফিরেছেন ইনিংসের ১৪তম ওভারে দলকে ৯৪ রানে রেখে পঞ্চম ব্যাটসম্যান হিসেবে। দক্ষিণ আফ্রিকান পেসার কাগিসো রাবাদার বলে উইকেটের পেছনে ঋষভ পন্তের ক্যাচ হয়েছেন ঠিক আগের ম্যাচে ৭২ রান করা কোহলি।

কোহলি যখন আউট হলেন ৩৯ বলে ১০৩ রান দরকার বেঙ্গালুরুর। প্রায় অসম্ভব ওই সমীকরণ মেলাতে পারেননি দলটির শেষের দিকের ব্যাটসম্যানরা। কোহলিকে ফেরানোর পর আরও ৩টি উইকেট নিয়েছেন রাবাদা। ৪ ওভারে ২৪ রান দিয়ে ৪ উইকেট—২৩ ম্যাচের আইপিএল ক্যারিয়ারে তৃতীয়বার ৪ উইকেট পেলেন প্রোটিয়া পেসার।

এমন উৎসবে উপলক্ষ বারবারই পেয়েছে দিল্লি ক্যাপিটালস।
ছবি: বিসিসিআই

কোহলির পর বেঙ্গালুরুর ইনিংসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৭ রান ওয়াশিংটন সুন্দরের। ফর্মে থাকা ওপেনার দেবদূত পাড়িক্কাল আজ ফিরেছেন মাত্র ৪ রানে। এ ছাড়া অস্ট্রেলীয় ওপেনার অ্যারন ফিঞ্চ ১৩, দক্ষিণ আফ্রিকান মিডলঅর্ডার ব্যাটসম্যান এবি ডি ভিলিয়ার্স ৯ রানে ফেরেন। দিল্লির বোলারদের মধ্যে রাবাদা ছাড়া ২টি করে উইকেট নিয়েছেন আনরিখ নর্টিয়ে ও অক্ষর প্যাটেল।

ফিফটির পর দিল্লির মার্কাস স্টয়নিস (বাঁয়ে)।
ছবি: বিসিসিআই

এর আগে দিল্লির ১৯৬ রানের ইনিংসটিকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়। প্রথম অংশটির ব্যাপ্তি ইনিংস শুরুর ৬.৪ ওভার। পৃথ্বী শর মারকাটারি ব্যাটিংয়ে ৬৮ রান তুলে ফেলে দলটি। এই রানের ৪২ রানই ভারতীয় ওপেনারের। তাঁর ২৩ বলের ইনিংসটি সাজানো ৫টি চার ও ২টি ছয়ে। পৃথ্বীর বিদায়ের পরই পথ হারায় দিল্লি।

পরের ৫ ওভারে মাত্র ২২ রান তুলতে পারে দলটি। এই সময়ে আরেক ওপেনার শিখর ধাওয়ান (২৮ বলে ৩২ রান) ও তিনে নামা অধিনায়ক শ্রেয়াস আইয়ারকেও হারিয়ে ফেলে দলটি। অধিনায়ক করেছেন ১৩ বলে ১১ রান।

দিল্লির ইনিংসের তৃতীয় ভাগের শুরু এরপর। ঋষভ পন্তকে (২৫ বলে ৩৭) নিয়ে ৬.৫ ওভারে ৮৯ রান যোগ করেন মার্কাস স্টয়নিস। অস্ট্রেলীয় অলরাউন্ডার ২৬ বলে ৫৩ রান করে অপরাজিত ছিলেন। ৬টি চার ও ২টি ছক্কা মারা স্টয়নিস অবশ্য ফিরতে পারতেন ৩০ কিংবা ৪৫ রানেই। প্রথমবার ক্যাচ ছাড়েন যুজবেন্দ্র চাহাল। পরের বার রানআউট হতে হতেও বেঁচে যান বিরাট কোহলির সৌজন্যে।