ঘোষণা দিয়ে ‘বদলা’ নিল পাকিস্তান

জয়ের পর মাঠেই উদযাপন সেরে নেয় পাকিস্তান দলছবি: এএফপি

এই না হলে পাকিস্তান!

দুবাইয়ে আগের ম্যাচে ৭ উইকেটে ১৫১ রান তুলেছিল ভারত। পাকিস্তান ম্যাচটা জিতেছে ১০ উইকেটে। ব্যাটিং–দাপট বলতে যা বোঝায় তার অনুপম প্রদর্শনী দেখিয়ে জয় তুলে নিয়েছিল পাকিস্তান। অথচ আজ শারজায় নিউজিল্যান্ডের ৯ উইকেটে ১৩৪ রান তাড়া করতে নেমে সেই পাকিস্তানেরই কাঁপুনি উঠে গিয়েছিল! শেষ ৩০ বলেও (৫ ওভার) ওভারপ্রতি আটের বেশি রান দরকার ছিল পাকিস্তানের।

এখান থেকে ম্যাচটা নিজেদের পক্ষে নিতে টানাটানি করেছে দুই দল। শেষ পর্যন্ত আসিফ আলী ও শোয়েব মালিকে রক্ষা। ষষ্ঠ উইকেটে দুজনের ২৩ বলে ৪৮ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে ৮ বল হাতে রেখে ৫ উইকেটের জয় তুলে নেয় পাকিস্তান। মোটামুটি সংগ্রহ নিয়ে পাকিস্তানের ইনিংসে ১৫তম ওভার শেষ হওয়া পর্যন্তও ম্যাচে ছিল নিউজিল্যান্ড।

কিন্তু টিম সাউদির করা ১৭তম ওভারে আসিফের দুই ছক্কায় ম্যাচের পাল্লা হেলে পড়ে পাকিস্তানের পক্ষে। এরপর কাজটা সহজ হয়ে যায় পাকিস্তানের জন্য। টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এ নিয়ে টানা দুই ম্যাচেই জিতল বাবর আজমের দল। হারে শুরুটা ভালো হলো না নিউজিল্যান্ডের।

পাকিস্তানের জন্য এ ম্যাচটা এক অর্থে প্রতিশোধেরও। গত সেপ্টেম্বরে পাকিস্তান গিয়ে কোনো ম্যাচ না খেলেই সফর বাতিল করে দেশে ফেরে নিউজিল্যান্ড দল।

পরে ইংল্যান্ডও পাকিস্তান সফর বাতিল করে। নিরাপত্তা শঙ্কার কথা বললেও ঠিক স্পষ্ট করে কিছু বলেনি দুই দল। তখন থেকেই এ ম্যাচের অপেক্ষায় ছিল পাকিস্তান ক্রিকেট।

বোলিংয়েও ভালো করেছে পাকিস্তান
ছবি: এএফপি

পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) বর্তমান চেয়ারম্যান রমিজ রাজা তখন স্পষ্ট করে বলেছিলেন, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে তিনটি লক্ষ্য পাকিস্তানের। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতকে হারানোর লক্ষ্য তো সব সময়ই থাকে। এর পাশাপাশি নিউজিল্যান্ড ও ইংল্যান্ডকেও হারাতে হবে।

পাকিস্তানের সাবেক পেসার শোয়েব আখতার টুইট করেছিলেন, ‘টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেই তোমাদের দেখে নেব। বিশেষ করে নিউজিল্যান্ড, তোমাদের!’ ভারত ও নিউজিল্যান্ডকে হারানোর পর এবার পাকিস্তানের সে প্রতিজ্ঞা–পূরণের পথে বাকি রইল শুধু ইংল্যান্ড।

নিজেদের ইনিংসে শেষ ৫ ওভারে দারুণ ব্যাট করেছে পাকিস্তান। এর বাইরে গোটা ম্যাচে বোলিং সবচেয়ে ভালো করেছে দলটি। দুই ওপেনার মার্টিন গাপটিল (১৭) ও ড্যারিল মিচেলকে (২৭) নবম ওভারের মধ্যে তুলে নেওয়ার পাশাপাশি রানের চাকাও আটকে রেখেছিলেন হারিস রউফ ও শাহিন আফ্রিদিরা।

মিচেল ও ডেভন কনওয়ের ব্যাট থেকে এসেছে সর্বোচ্চ ২৭ রানের ইনিংস। ২২ রানে ৪ উইকেট নেন পেসার রউফ। পাকিস্তানের বোলাররা ৫৩টি ‘ডট’ আদায় করে নেন নিউজিল্যান্ডের ব্যাটসম্যানদের কাছ থেকে।

ভারতের বিপক্ষে যেভাবে রানা তাড়া শুরু করেছিলেন পাকিস্তানের দুই ওপেনার বাবর ও মোহাম্মদ রিজওয়ান, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেও সেই একই ধারা ও গতিতে এগোচ্ছিলেন দুজন। ৫.১ ওভারে বাবর )৯) সাউদির বলে আউট হওয়ার আগে ওপেনিং জুটিতে এসেছে ২৮ রান।

টি–টোয়েন্টিতে তৃতীয় বোলার হিসেবে শততম উইকেটের দেখা পান কিউই পেসার সাউদি। ১১তম ওভারে রিজওয়ান ইশ সোধির শিকার হওয়ার আগে করেছেন ৩৪ বলে ৩৩ রান। তখন একটু বিপাকেই পড়েছিল পাকিস্তান। পাকিস্তানের দুই সেরা (বাবর–রিজওয়ান) ব্যাটসম্যানের কেউ–ই যে তখন উইকেটে নেই। তখন জয়ের জন্য ৪৮ বলে ৬৫ রান দরকার ছিল পাকিস্তানের।

শুরুতে রিজওয়ান ভালো খেললেও ম্যাচটা শেষ করেন শোয়েব মালিক
ছবি: এএফপি

শোয়েব মালিক এখান থেকে ম্যাচটা টেনে নিয়ে যান শেষের পথে। যোগ্য সঙ্গ দেন আসিফ আলী। ১৮তম ওভারে মিচেল স্যান্টনারের কাছ থেকে ১৫ রান আদায় করে লক্ষ্যটা ১২ বলে ৯ রানে নামিয়ে আনেন দুজন। ১৯তম ওভারে গিয়ে ম্যাচ শেষ করেন ২০ বলে ২৬ রানে অপরাজিত থাকা শোয়েব। ৩ ছক্কা ও ১ চারে ১২ বলে ২৭ রানে অপরাজিত ছিলেন আসিফ। ২৮ রানে ২ উইকেট নেন সোধি।