‘চট্টগ্রাম’ হয়নি অ্যান্টিগা

বোনার–মেয়ার্স জুটিতে হার এড়িয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজছবি: এএফপি

অ্যান্টিগা টেস্টে দারুণ এক জয়ের সম্ভাবনা ছিল শ্রীলঙ্কার। সুযোগ ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের সামনেও। কিছুদিন আগে বাংলাদেশের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টের পুনরাবৃত্তি ঘটানোর। অ্যান্টিগাকে ‘চট্টগ্রাম’ বানানোর। কাইল মেয়ার্সের সেই অবিশ্বাস্য কীর্তিতে সে ম্যাচে ৩৯৫ রান তাড়া করে টেস্ট জিতেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। অ্যান্টিগায় লঙ্কানদের হারাতে ক্যারিবীয়দের সামনে লক্ষ্য ছিল ৩০৫ রানের।

তবে অ্যান্টিগা, চট্টগ্রাম না হলেও ওয়েস্ট ইন্ডিজ শ্রীলঙ্কাকে জিততে দেয়নি। না হারার আনন্দটা ঠিকই দলকে এনে দিয়েছেন এনক্রুমা বোনার আর সেই কাইল মেয়ার্স। এ দুজনের ২১৮ বলে ১০৫ রানের জুটিই মূলত হারের হাত থেকে রক্ষা করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। এর আগে সেঞ্চুরিয়ান বোনার ক্রেইগ ব্রাথওয়েটের সঙ্গে ২০২ বলে ৬৬ রানের একটা জুটিও গড়েছিলেন। পঞ্চম দিনে ৮০ ওভার খেলা হয়েছে। মোট ১০০ ওভার ব্যাটিং করে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সংগ্রহ ৪ উইকেটে ২৩৬। প্রতিপক্ষের ধীরলয়ের ব্যাটিং, আর মাটি কামড়ে পড়ে থাকা দেখে বোধ হয় ধৈর্যচ্যুতি ঘটেছিল শ্রীলঙ্কানদেরও। তাই তো দিনের আরও ১০ ওভার বাকি থাকতেই ম্যাচটা অমীমাংসিত মেনে নেয় তারাও।

বোনারের সেঞ্চুরিটি ছিল অসাধারণ টেস্ট মেজাজের। ২৭৪টি বল খেলে তিনি করেছেন ১১৩ রান। মেয়ার্স ৫২ রান করেন ১১৩ বলে। জার্মেইন ব্ল্যাকউডের ২৯ বলে ৪ আর জেসন হোল্ডারের ৪৮ বলে ১৮ রানের দুটি ইনিংসের কথাও উল্লেখ করতেই হবে।

দারুণ এক সেঞ্চুরি পেয়েছেন এনক্রুমা বোনার।
ছবি: এএফপি

অ্যান্টিগা টেস্টের প্রথম ইনিংসে কিন্তু শ্রীলঙ্কা গুটিয়ে গিয়েছিল ১৬৯ রানেই। কিন্তু দ্বিতীয় ইনিংসেই ৪৭৫ রান তুলে ফেলে তারা নিরোশান ডিকভেলা আর ওশাদা ফার্নান্দোর দুটি নব্বইয়ের ঘরের ইনিংসে। ক্যারিবীয়রা ২৭১ রান করে প্রথম ইনিংসে লিড পেলেও লঙ্কানদের দ্বিতীয় ইনিংসটা তাদের পিছিয়ে দেয়। চতুর্থ ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে ৩৭৫ রানের লক্ষ্যটা কঠিনই ছিল। চট্টগ্রামের কীর্তি তো আর প্রতি ম্যাচে হবে না। চতুর্থ দিন শেষ ১ উইকেটে ৩৪ রান তোলা ওয়েস্ট ইন্ডিজ শেষ অবধি ম্যাচটা শেষ করল না হেরেই।

বাংলাদেশের বিপক্ষে দুটি টেস্টেই সেঞ্চুরি মিস করেছিলেন বোনার। জ্যামাইকাতে জন্ম নেওয়া বোনার এবার আর ভুল করেননি। ডান হাতি এই ব্যাটসম্যান প্রমাণ করলেন ক্যারিবীয় ক্রিকেটের ঝান্ডা বয়ে নিয়ে এগোনোর ক্ষমতা তাঁর আছে। আর সেঞ্চুরিটা তিনি করলেন এমন একটা সময়, যখন তাঁর ব্যাটিংটা দলের জন্য প্রয়োজন ছিল। তিনি বাস্তবানুগ খেলা খেলেই দলের পরাজয় এড়িয়েছেন। টেস্টের আদর্শ ইনিংস যাকে বলে, বোনারের ইনিংসটা ছিল তেমনই।

নিজের ব্যাটিং নিয়ে নেটে আলাদা করে কাজ করার ফলই তিনি পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন খেলার পর, ‘আমি নেটে আলাদাভাবে কিছু কাজ করেছি ব্যাটিং নিয়ে। প্রথম ইনিংসের পর এটি কাজে দিয়েছে। শ্রীলঙ্কান বোলাররা দারুণ লাইন ও লেংথে বোলিং করে, তাদের সামনে নিজেকে স্থির রেখেই ব্যাটিং করতে হয়েছে। আমি মৌলিক বিষয়গুলো ঠিক রেখেই ব্যাটিং করে গিয়েছি।’