চোট থেকে মুক্তি মিলছে না বাংলাদেশের পেসারদের

চোটে পড়ায় তাসকিন-মোস্তাফিজ-সাইফউদ্দিনের জাতীয় লিগের শুরুতে পাওয়া যাবে না। প্রথম আলো ফাইল ছবি
চোটে পড়ায় তাসকিন-মোস্তাফিজ-সাইফউদ্দিনের জাতীয় লিগের শুরুতে পাওয়া যাবে না। প্রথম আলো ফাইল ছবি
>প্রথম দুটি রাউন্ডে বাংলাদেশ দলের খেলোয়াড়দের উপস্থিতিতে হয়তো তারকাপূর্ণ এক জাতীয় লিগ দেখা যাবে এবার। তবে শুরুতেই জাতীয় দলের অনেক পেসারকে না–ও পাওয়া যেতে পারে

ছুটি শেষে গতকাল অনুশীলনে ফিরেছেন মুশফিকুর রহিম। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে নিয়মিত অনুশীলন করছেন বাংলাদেশ দলের অন্য দুই সিনিয়র খেলোয়াড় তামিম ইকবাল ও মাহমুদউল্লাহ। তিন তারকা ক্রিকেটার তৈরি হচ্ছেন জাতীয় লিগ সামনে রেখে। তামিম-মুশফিক-মাহমুদউল্লাহদের মতো বাংলাদেশ দলের খেলোয়াড়দের উপস্থিতিতে এবার জাতীয় লিগের প্রথম দুই-তিনটি রাউন্ড তারকাপূর্ণ হওয়ার কথা।

জাতীয় লিগের শুরুতেই জাতীয় দলের তারকা খেলোয়াড়দের উপস্থিতি দেখা গেলেও বেশির ভাগ তারকা পেসার না–ও খেলতে পারেন। কারণ, বেশির ভাগ পেসারের চোটা–আঘাতজনিত সমস্যা। সাদা বলে ‘অটোমেটিক চয়েস’ হলেও বড় দৈর্ঘ্যের ক্রিকেটে এখনো নিয়মিত হতে পারেননি মোস্তাফিজুর রহমান । গত মাসে আফগানিস্তানের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টে তাঁকে রাখা হয় দলের বাইরে। প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন তখন চোটের কথা বললেও পেস বোলিং কোচ শার্ল ল্যাঙ্গাভেল্ট বলেছিলেন, বাঁ হাতি পেসারকে তৈরি করা হচ্ছে টি-টোয়েন্টি সিরিজ সামনে রেখে। লাল বলের সঙ্গে ‘সখ্য’ গড়ে না ওঠা মোস্তাফিজকে এবার জাতীয় লিগ খেলতে বাধ্য করছেন নির্বাচকেরা। তবে পায়ে হালকা চোট থাকায় তিনি একটি রাউন্ডই খেলবেন। মোস্তাফিজ চান শুধুই দ্বিতীয় রাউন্ড খেলতে।

জাতীয় লিগের শুরুতে পাওয়া যাবে না তাসকিন আহমেদকেও। গত এক বছর তাঁর কেটেছে চোটের সঙ্গে লড়াই করে। চোট কাটিয়ে আফগানিস্তানের বিপক্ষে চট্টগ্রামে টেস্টের বাংলাদেশ দলে ছিলেন। স্পিননির্ভর বোলিং আক্রমণ হওয়ায় বাকি দুই পেসারের মতো তাঁরও একাদশে সুযোগ মেলেনি। কিন্তু টেস্টের মধ্যেই নেটে অনুশীলন করতে গিয়ে শরীরের বাঁ পাশে আবারও পেয়েছেন চোট। চোটের কারণে বাংলাদেশ ‘এ’ দলের হয়ে যাওয়া হয়নি শ্রীলঙ্কা সফরে। জাতীয় লিগ কবে থেকে শুরু করবেন, সেটিও নিশ্চিত করতে পারেননি তাসকিন, ‘আগামী সপ্তাহে বোলিং শুরু করব আশা করি। তবে এখনো বলতে পারছি না কোন রাউন্ড থেকে খেলতে পারব।’

সবশেষ ত্রিদেশীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজে উইকেটশিকারি বাংলাদেশের সেরা বোলার ছিলেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। সিরিজের পর তাঁর সময় কাটছে আরেক চিন্তায়। পিঠের পেছনের যে চোটে ভুগছেন, সেটির বায়োমেকানিক্যাল পরীক্ষা করতে কবে যাবেন ইংল্যান্ড, সেটি এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। দুদিন আগে ফেনী থেকে ঢাকায় এসেছিলেন এমআরআই করাতে। এমআরআইয়ের ফল পাঠানো হবে ইংল্যান্ডে। সেখান থেকে কী উত্তর আসে, সেটির অপেক্ষায় আছেন ২২ বছর বয়সী পেস বোলিং অলরাউন্ডার। এই অবস্থায় তিনি জাতীয় লিগ খেলবেন কি না, সেটি জানাতে পারেননি।

বাংলাদেশ দলের আরেক পেসার খালেদ আহমেদ অনেক দিন ধরেই আছেন মাঠের বাইরে। হ্যামস্ট্রিং চোটে পড়া ২৭ বছর বয়সী পেসারের অস্ত্রোপচার হয়েছে গত জুনে। চোট থেকে অনেকটা সেরে উঠলেও কবে তিনি খেলার সুযোগ পাবেন, এখনো নিশ্চিত নয়। ক্যারিয়ারে কখনো টি-টোয়েন্টি না খেলা ইয়াসিন আরাফাতকে সবশেষ ত্রিদেশীয় টি-টোয়েন্টি সিরিজে বাংলাদেশ দলে সুযোগ দিয়ে বড় চমকই উপহার দিয়েছিলেন নির্বাচকেরা। সেটির চেয়ে আরও বড় চমক ছিল, কোনো ম্যাচ না খেলিয়েই তাঁকে বাদ দেওয়া। পরে নির্বাচকেরা জানালেন, পিঠ ও পাঁজরের চোটে পড়েছেন ইয়াসিন। বাঁ হাতি এ পেসারের জাতীয় লিগ খেলা হবে কি না, সেটিও নিশ্চিত নয়।

শুধু এবারই নয়, বাংলাদেশ দলের পেসারদের বড় দৈর্ঘ্যের ম্যাচ খেলার ফিটনেস নিয়ে প্রশ্ন সব সময়ই আছে। আবু হায়দার অবশ্য নিজেকে এ তালিকায় রাখতে চান না। বড় দৈর্ঘ্যের ক্রিকেটে নিজের তুমুল আগ্রহের কথাই জানালেন বাঁ হাতি পেসার, ‘পেস বোলারদের হাতে গোনা ৩-৪ জনকে বাদ দিলে অনেকেই লাল বলে খেলতে চান না। আমরা যারা টেস্ট খেলতে আগ্রহী, আমাদের উচিত বেশি বেশি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলা। এখানে বোলিং ফিটনেসও অনেক গুরুত্বপূর্ণ। দেখা যাচ্ছে বিপ টেস্টে ১২ পেলেন কিন্তু ৪–৫ ওভার টানা বোলিং করতে পারেন না। বোলিং ফিটনেসটা তাই অনেক গুরুত্বপূর্ণ যেন টানা ৮–৯ ওভার বোলিং করা যায়। এটার জন্যই আমাদের বেশি বেশি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলা উচিত বলে মনে হয়।’