ছক্কার বৃষ্টি শেষে শারজায় চলছে খরা

সঞ্জু স্যামসনের সুবাদে এবারের আইপিএলের সবচেয়ে বড় রান তাড়া করেছিল রাজস্থান।ছবি: আইপিএল

আইপিএল এবার তার খুবই গুরুত্বপূর্ণ কিছু দিক হারিয়েছে। এই টুর্নামেন্টের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে যাওয়া দর্শক নেই মাঠে, সীমানার পাশে দাঁড়ানো চিয়ার্স গার্লরাও এবার হারিয়ে গেছেন। আর করোনা সংযুক্ত আরব আমিরাতে হওয়াতে আইপিএলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক-হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে পদ্ধতিটাও এবার আর কার্যকর হচ্ছে না।

আবুধাবি, দুবাই ও শারজা—এ তিন মাঠে হচ্ছে এবারের আইপিএল। এর মাঝে শারজা ব্যাটসম্যানদের বাড়তি ভালোবাসা পাচ্ছিল। একে তো সীমানাদড়িটা একটু বেশি কাছে। সে সঙ্গে উইকেটে পেসার কিংবা স্পিনারের জন্য কিছু না থাকায় রান উৎসব হচ্ছিল প্রথম দিকটায়। কিন্তু রান বন্যা আর ছক্কা বৃষ্টি ধীরে ধীরে কমে আসছে এ মাঠে।

শারজায় প্রথম ম্যাচটাই বুঝিয়ে দিয়েছিল আবুধাবি বা দুবাইয়ের সঙ্গে একে মিলিয়ে লাভ নেই। প্রথমে ব্যাট করে ২১৬ রান করেছিল রাজস্থান রয়্যালস। সেদিন ফাফ ডু প্লেসি একাই যা লড়ার লড়েছিলেন, তাতেই দুই শ ছুঁয়ে ফেলেছিল চেন্নাই সুপার কিংস। সে ম্যাচে শারজায় ছক্কার বৃষ্টিও নেমেছিল। দুই দল মিলে মেরেছিল ৩৩ ছক্কা।

রান বন্যা পরের ম্যাচেও হয়েছিল। এ মাঠে সেই রাজস্থানের বিপক্ষে ২২৩ রান তুলেছিল কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব। কিন্তু এ রানটাকেও কম বানিয়ে ফেলেছিল রাজস্থান। ৩ বল বাকি থাকতেই লক্ষ্য ছুঁয়ে ফেলেছিল রাহুল তেওয়াতিয়ার অবিশ্বাস্য এক ইনিংসে।

শারজার তৃতীয় ম্যাচেও দুই শ রানের নিচে থামেনি কোনো দল। দিল্লি ক্যাপিটালসের ২২৮ রান তাড়া করতে নেমে শেষ পর্যন্ত চেষ্টা চালিয়েছিল কলকাতা। শুরুটা ভালো হয়নি। তবু, ছোট মাঠের সুবিধা নিয়ে ২১০ তুলেছে কলকাতা নাইট রাইডার্স।

চতুর্থ ম্যাচেই হঠাৎ চেহারা বদলাতে শুরু করল মাঠটি। মুম্বাই ইন্ডিয়ানসের ২০৮ রান তাড়া করতে নেমে সানরাইজার্স হায়দরাবাদ ব্যর্থ হলো। পুরো ২০ ওভার খেলেও ১৭৪ রান করতে পেরেছিল ওয়ার্নার ও তাঁর দলবল। সে ম্যাচেই প্রথম দুই শর নিচে কোনো দল থামল শারজাতে। পঞ্চম ম্যাচে এসেই নিশ্চিত হওয়া গেল শারজার পরিবর্তনের বিষয়টি। দিল্লি ও রাজস্থানের ম্যাচে সাকল্যে ৩২২ রান উঠেছিল।

শারজায় ছক্কার বৃষ্টিতে অবদান আছে দিল্লির শিমরন হেটমায়ারেরও।
ছবি: আইপিএল

রান যে কমছে সেটা তো দেখাই যাচ্ছে। আরেকটি বিষয় লক্ষণীয় যে শারজার উইকেট ধীরে ধীরে বোলারদের পক্ষে কথা বলায় কমে আসছে ছক্কার সংখ্যাও। প্রথম ম্যাচে যে ম্যাচে ৩৩ ছক্কা দেখা গিয়েছিল, সে শারজায় দ্বিতীয় ম্যাচে বল উড়ে সীমানা ছাড়িয়েছে ২৯ বার। তৃতীয় ম্যাচে সে ঘটনা ঘটেছে ২৮ বার। চতুর্থ ম্যাচে ছক্কার সংখ্যা নেমে এসেছে ২১-এ। আর সর্বশেষ ৯ অক্টোবর দিল্লি-রাজস্থান ম্যাচে ১৭ ছক্কা দেখা গেছে।
আজ রাজস্থানে মুখোমুখি রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু ও কলকাতা। এ ম্যাচে ছক্কা কমার ধারা আজও টিকে থাকবে নাকি সেটাই দেখার অপেক্ষা। এখন পর্যন্ত অবশ্য ছক্কা কমার ইঙ্গিতই মিলছে। বেঙ্গালুরু তাদের প্রথম ১০ ওভারে মাত্র দুটি ছক্কা মেরেছে।