জায়গা বদলেছে কিন্তু বদলাননি সাকিব

সাকিব আজও ব্যাট হাতে ব্যর্থ।ছবি: প্রথম আলো

প্রথম দুই ম্যাচে তিন নম্বর ব্যাটসম্যান। পরের দুই ম্যাচে ওপেনার। আজ ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে খেললেন ফিনিশার হিসেবে। টি-টোয়েন্টি ম্যাচে পাঁচে নামে অন্তত এ কথা বলাই যায়। বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপে পাঁচ ম্যাচ খেলা জেমকন খুলনার অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানকে দেখা গেল এই তিন ভূমিকায়। প্রথম চার ম্যাচে টপ অর্ডারে খেলে সাফল্য পাননি। উইকেটে থিতু হয়েছেন। এরপর আউট।

আজও তাই হলো। বাঁহাতি স্পিনার তানভীর ইসলামকে লং অন দিয়ে ছক্কা মারতে গিয়ে তৌহিদ হৃদয়ের দুর্দান্ত ক্যাচে থেমেছে সাকিবের ইনিংস। ১০ বলে ২ চারে ১৪ রানে থামে সাকিবের আরেকটি সম্ভাবনাময় ইনিংস। তবে জয় পেয়েছে তাঁর দল খুলনা। বরিশালকে ৪৮ রানে হারিয়ে টানা দ্বিতীয় জয় তুলে নিয়েছে খুলনা।

আজ যখন সাকিব ক্রিজে এসেছিলেন, তখনো খুলনার ইনিংসের ৬ ওভার বাকি। হাতে ৭ উইকেট। দলের রান ১০৯। শেষ পর্যন্ত খেলে খুলনাকে ১৭০ রানের আশপাশে নিতে পারলেই সাকিব তাঁর দায়িত্বে পাস মার্ক পেতে পারতেন। শুরুও করেছিলেন দারুণভাবে, কামরুল ইসলামের অ্যাঙ্গেল থেকে ভেতরে আসা বলে ড্রাইভে চার মেরে। তাসকিনের একটি শর্ট বল পেয়েছিলেন কাট করার জন্য। সেই সুযোগটাও কাজে লাগান সাকিব। আজ দিনটা সাকিবের হবে, এমন ইঙ্গিতের জন্য এই দুটি বাউন্ডারি যথেষ্ট ছিল।

কিন্তু টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে শেষ পাঁচ ওভারের দাবি মেটাতে হলে মারতে হবে। সেটি করতে গিয়েই সাকিব আউট। তবে সাকিব যা করতে পারেননি, খুলনার অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ সেটি করে দেখানোর ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন। ‘ডেথ ওভার’-এ ধারাবাহিক কামরুলের বোলিংয়ে বোল্ড হওয়ার আগে ভালোই খেলছিলেন বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়ক। তাঁর ১৪ বলে ২৪ রান খুলনাকে নিয়ে যায় ৬ উইকেটে ১৭৩ রানে।

দারুণ এক ইনিংস খেলেছেন জাকির।
ছবি: প্রথম আলো

মাহমুদউল্লাহদের ভিত গড়ে দিয়েছেন অবশ্য তরুণ জাকির হাসান। প্রথম চার ম্যাচে ব্যর্থ এনামুল হককে বেঞ্চে বসিয়ে খুলনা আজ জাকিরকে সুযোগ দেয়। দেশের হয়ে একটি টি-টোয়েন্টি খেলা এই তরুণ হতাশ করেননি। ৪২ বলে ১৫০ স্ট্রাইক রেটে ৬৩ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেন এই ২২ বছর বয়সী বাঁহাতি। ৬৩ রানের ৪০ রানই এসেছে বাউন্ডারিতে।

কাভার ও স্কয়ার অব দ্য উইকেটে চোখ আটকে ফেলার মতো কিছু শট খেলেছিলেন জাকির। লফটেড ড্রাইভে চার মেরেছেন কাভারে। স্পিনে কাট শটে বাউন্ডারি বের করেছেন। রিভার্স সুইপও খেলেছেন সাফল্যের সঙ্গে। আর পায়ের ওপর বরাবরই ভালো জাকির। টপ অর্ডারে জাকির সফল হওয়ায় এনামুলের একাদশে জায়গা পাওয়ার সম্ভাবনাও কমে গেল।

ভালো শুরু করেও ইনিংস বড় করতে পারেননি তামিম।
ছবি: প্রথম আলো

বরিশালের হয়ে সর্বোচ্চ তিন উইকেট পেয়েছেন পেসার কামরুল। তাসকিন আহমেদ খরুচে বোলিং করলেও পেয়েছেন দুটি উইকেট। আরেক পেসার আবু জায়েদ ও মেহেদী হাসান মিরাজের অফ স্পিন থেকে আজ কিছুই পাননি বরিশালের অধিনায়ক তামিম ইকবাল।

১৭৪ রান তাড়া করতে হলে তামিমকেই বরিশালের ব্যাটিং টানতে হতো। শুরুতে সাকিবের বলে ফিল্ডার শহিদুলের ভুলে জীবন পেলেও তামিমের ব্যাট ভীতি জাগাচ্ছিল। তরুণ ওপেনার পারভেজ হোসেনকে নিয়ে ভালো স্ট্রাইক রেটে ফিফটি রানের জুটি গড়েন তিনি। অষ্টম ওভারে শুভাগত হোমের অফ স্পিন ভাঙে তামিম-পারভেজ জুটি। ১৯ রানে বোল্ড হন পারভেজ। একই ওভারে শুভাগতকে ছক্কায় ওড়াতে গিয়ে বাউন্ডারিতে ক্যাচ দেন তামিম। ২১ বলে ৩২ রানে থামে তামিমের ইনিংস।

এরপর খুলনার রান রেটের পেছনেই ছুটতে হয়েছে বরিশালকে। একে একে উইকেট হারানো বরিশালের জয়ের আশা হয় ফিকে। মাঝে তৌহিদ হৃদয়ের ২৭ বলে ৩৩ রান বরিশালের রান কিছুটা বাড়ায়। শেষ পর্যন্ত বরিশাল অল আউট হয় ১২৫ রানে। শুভাগত, শহিদুল ও হাসান দুটি করে উইকেট নেন।