জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে আদালতে শামির স্ত্রী

স্ত্রী-সন্তানের সঙ্গে ভারতীয় পেসার মোহাম্মদ শামি।ছবি: সংগৃহীত।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটা পোস্ট থেকেই কত কিছু! এক পোস্টের কারণেই এভাবে নিজের জীবন নিয়ে শঙ্কায় পড়তে হবে, তা বোধ হয় ভাবতে পারেননি ভারতীয় পেসার মোহাম্মদ শামির স্ত্রী হাসিন জাহান।

এক মাসেরও বেশি সময় আগে ফেসবুকে পোস্টটা করেছিলেন হাসিন। এরপর থেকেই মৃত্যু ও ধর্ষণের হুমকি পেয়ে আসছেন। পুলিশে তখনই অভিযোগ করেছিলেন। কিন্তু অনলাইনে হুমকি থামেনি। তাই কলকাতার হাই কোর্টে আজ নিজের ও মেয়ের জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে আবেদন করেছেন তিনি।

মেয়েকে নিয়ে একাই থাকেন হাসিন।
ছবি: ইনস্টাগ্রাম।

শামি আর তাঁর স্ত্রী অবশ্য একসঙ্গে থাকেন না। গত বছর ভারতীয় পেসারের বিরুদ্ধে শারীরিক নিপীড়ন, হত্যা ও ধর্ষণচেষ্টাসহ অনেক অভিযোগে পুলিশে এফআইআর করেছিলেন হাসিন। আদালত তখন শামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানাও জারি করে। কিন্তু উচ্চ আদালতে শামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা বাতিল হয়ে যায়। তখন থেকেই মেয়েকে নিয়ে আলাদা থাকেন হাসিন।

এবার তিনি বিপদে পড়েছেন গত ৬ আগস্ট দেওয়া এক ফেসবুক পোস্টের কারণে। অযোধ্যায় রাম মন্দির ভূমি পুজন অনুষ্ঠানের দিনে ফেসবুকে হাসিন লিখেছিলেন, ‘অযোধ্যায় রাম মন্দিরে ভূমি পূজা উপলক্ষ্যে সব হিন্দুদের অভিনন্দন।’ এই পোস্টের পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হুমকি আসতে থাকে। তিন দিন পর আলীপুর থানায় অভিযোগ করেন হাসিন।

অভিযোগে লিখেছেন, ‘খুব খারাপ লাগছে যে, ৫ আগস্ট ২০২০ তারিখে অযোধ্যার রাম মন্দিরের জন্য হিন্দু ভাই-বোনদের আমি শুভকামনা জানানোয় কিছু নিচু মানসিকতার মানুষ প্রতিনিয়ত আমাকে গালি দিচ্ছে, নাজেহাল করছে। কেউ কেউ আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে, এমনকি ধর্ষণের হুমকিও দিচ্ছে। এই অবস্থায় আমি অসহায় বোধ করছি। আমার মেয়ের ভবিষ্যৎ নিয়েও উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছি। ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম—সব ধরনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অবিরত আক্রমণ আমাকে বিপদের মুখে ফেলছে।’

এরকম হতে থাকলে মানসিকভাবে ভেঙে পড়বেন জানিয়ে হাসিন অভিযোগপত্রে আরও লেখেন, ‘দয়া করে আমাকে সাহায্য করুন। প্রতিটি মুহূর্তই অনিশ্চয়তা নিয়ে কাটছে আমার। এভাবে চলতে থাকলে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ব। খুব কৃতজ্ঞ থাকব যদি আপনারা দ্রুত এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেন। আমি আমার মেয়েকে নিয়ে একা থাকি, এ কারণে আরও বেশি শঙ্কায় আছি। প্রতিটি সেকেন্ডই এখন আমার জন্য দুঃস্বপ্নের মতো। আশা করি মানবিক বিচারে আপনারা সদয় হবেন।’

হাসিনের অভিযোগ সত্ত্বেও এখনো কাউকে পুলিশ গ্রেফতার করেনি বলে জানাচ্ছে ভারতীয় দৈনিক টাইমস নাউ নিউজ। কলকাতা পুলিশ আগে অবশ্য জানিয়েছিল যে পুরো ব্যাপারটার তদন্ত এরই মধ্যে শুরু হয়েছে। এর মধ্যেই আজ কলকাতার হাই কোর্টে নিজের ও মেয়ের জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে আবেদন করেছেন হাসিন।