জৈব-সুরক্ষা বলয় তৈরিতে ইংল্যান্ডের সাহায্য চাইল পাকিস্তান

জৈব সুরক্ষা বলয় তৈরিতে অগ্রগামী ইংল্যান্ডছবি: রয়টার্স

জৈব-সুরক্ষা কথাটা এখন ক্রিকেট দুনিয়ায় খুব আলোচিত একটি বিষয়। শুধু ক্রিকেট কেন, যেকোনো খেলাই করোনার এই সময় আয়োজিত হচ্ছে জৈব-সুরক্ষা নীতিমালা মেনে। গত মার্চে করোনার প্রাদুর্ভাবের কারণে সারা দুনিয়াতেই খেলা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। জুলাই মাস থেকে জৈব সুরক্ষাবিধি মেনেই মাঠে ফিরছে খেলা। ক্রিকেটে ইংল্যান্ড এই সুবিধা তৈরিতে অগ্রগামী। ওয়েস্ট ইন্ডিজের সফর দিয়ে শুরু, এরপর পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি সিরিজ। আর এখন অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সীমিত ওভারের সিরিজ। ইংলিশরা দেখিয়েছে জৈব-সুরক্ষা বলয় তৈরি করে কীভাবে এমন পরিস্থিতিতেও আয়োজন করা যায় খেলা।

পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) আগামী অক্টোবরে ঘরের মাঠে জিম্বাবুয়েকে আতিথেয়তা দিতে চায়। সে জন্য নির্ধারিত ভেন্যুতে প্রয়োজন জৈব সুরক্ষা-বলয়। ব্যাপারটি সফলভাবে করতে ইংলিশ ক্রিকেট বোর্ডের সহায়তা চাচ্ছে পিসিবি।

জৈব সুরক্ষিত বয়লয় তৈরি করা খুব সহজ কিছু নয়।
ছবি: রয়টার্স

পিসিবির জন্য জিম্বাবুয়ে সিরিজটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হচ্ছে। করোনা আক্রান্তের হারে পাকিস্তান দুনিয়ার অন্যতম শীর্ষ দেশ। সে কারণেই পাকিস্তানে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ফেরানোটা যথেষ্ট কঠিনই। এ জন্য দরকার সফরকারী দল ও অন্যান্যদের বিশ্বাস ও আস্থা অর্জন। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজ দিয়েই সে বিশ্বাস ও আস্থাটা অর্জন করতে চাচ্ছে তারা।

আপাতত জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজ আয়োজনে দুটি ভেন্যু নিয়ে ভাবছে পাকিস্তান—রাওয়ালপিন্ডি ও মুলতান। এ দুটি ভেন্যুতে সম্প্রতি পাকিস্তানের ঘরোয়া অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপ আয়োজিত হয়েছে। পিসিবি ইংল্যান্ডের দিকে তাকাচ্ছে এ দুটি মাঠে সর্বোচ্চ মানের জৈব-সুরক্ষা বলয় তৈরি করার ব্যাপারে।

জৈব-সুরক্ষা বলয়ে আসলে খেলোয়াড়দের বাইরের দুনিয়া থেকে পুরোপুরি আলাদা করে ফেলা হয়, যাতে করোনা আক্রান্তের ঝুঁকিটা তুলনামূলক কম হয়। এই নিয়মে খেলোয়াড়দের চলাচল নির্দিষ্ট থাকে হোটেল ও মাঠের মধ্যে। তবে ইংল্যান্ডের অনেক মাঠের সঙ্গেই ভালো মানের হোটেল থাকায় জৈব সুরক্ষার এ দিকটা সহজ হয়ে গেছে। সাউদাম্পটনের রোজবোল ও ম্যানচেস্টারের ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে পাঁচ তারকা মানের হোটেল আছে। ক্রিকেট-খেলুড়ে খুব কম দেশেই স্টেডিয়ামের সঙ্গে হোটেল-ব্যবস্থা বিদ্যমান। জৈব-সুরক্ষায় বলয় তৈরিতে অন্য দেশগুলোর জন্য সেটি একটা বড় চ্যালেঞ্জ।

জৈব-সুরক্ষা বলয়ের যে উদাহরণ ইংল্যান্ড তৈরি করেছে, তাতে খেলোয়াড়দের পক্ষে বাইরের কারও সঙ্গে, এমনকি নিজেদের পরিবারের লোকজনের সঙ্গেও দেখা করার অনুমতি নেই। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ চলার সময় ইংল্যান্ডের জফরা আর্চার জৈব-সুরক্ষা বলয় ভেঙে নিজের বাড়িতে গিয়ে শাস্তির মুখে পড়েছিলেন।

ভ্রমণে আসা দল ও তাদের খেলোয়াড়দের কোয়ারেন্টিন করানোও জৈব-সুরক্ষা নিয়মের একটা বড় দিক। ইংল্যান্ডে পাকিস্তান আগস্ট মাসে টেস্ট সিরিজ খেললেও তারা সেখানে চলে গিয়েছিল জুনের শেষ দিকেই। ১৪ দিনের কোয়ারেন্টিন করে তবেই পাকিস্তান দলকে খেলা কিংবা অনুশীলনের জন্য মাঠে নামতে হয়েছে।

বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের শ্রীলঙ্কা সফর করার আলোচনা চলছে এখন। সেখানে গিয়ে মুমিনুল-মুশফিকদের ১৪ দিন কোয়ারেন্টিন করতে হবে বলে জানিয়েছে শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট। তবে সেখানে ভেন্যু-সংলগ্ন হোটেল নেই বা হোটেলের পাশে অনুশীলন মাঠের সুবিধাও নেই। এ কারণে বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের টানা ১৪ দিন থাকতে হবে ক্রিকেট-বিবর্জিত হয়ে। তাই কোয়ারেন্টিনের এই শর্ত মেনে শ্রীলঙ্কা সফরে যেতে চায় না বাংলাদেশ দল।