জোন্স আতহারকে বলেছিলেন, ‘তোমরা ঠিক পথেই আছ’

কত স্মৃতি তাঁর সঙ্গে। এক সঙ্গে ধারাভাষ্য দেওয়া তো ছিলই, ডিন জোন্সের সঙ্গে যে আরও কত ব্যক্তিগত স্মৃতি আতহার আলী খানের। হোটেল কক্ষে রাতের পর রাত আড্ডা দেওয়া, কিংবা গলফ খেলা; শ্রীলঙ্কায় রাতে এক সঙ্গে রেস্তোরাঁয় খেতে যাওয়ার সেই মুহূর্তই বা ভোলেন কী করে তিনি। গতকাল বন্ধু ‘ডিনো’র মৃত্যুর খবরটা পাওয়ার পর থেকে সেই সুন্দর সময়গুলো খুব করেই মনে পড়ছে ধারাভাষ্যকার হিসেবে নাম করা বাংলাদেশের সাবেক এই তারকার।

ধারাভাষ্যের সহকর্মী ছিলেন দুজন
সংগৃহীত ছবি

আতহারের বারবারই মনে হচ্ছে মানুষের জীবন এত ঠুনকো, ‘অবিশ্বাস্য লাগছে। ডিন জোন্সের মৃত্যু মেনেই নিতে পারছি না। সহ ধারাভাষ্যকার হিসেবে একটা সম্পর্ক তো ছিলই, ব্যক্তিগতভাবেও সে আমার খুব ভালো বন্ধু ছিল। অনেক সুন্দর সময় কাটিয়েছি। সে প্রায়ই আমাকে ফোন দিত। হোটেল রুমে আড্ডা দিয়েছি প্রচুর, কত গলফ খেলেছি। শ্রীলঙ্কায় বাইরে রেস্তোরাঁয় খেতেও গিয়েছি এক সঙ্গে। খুব দুঃখজনক।’

জোন্স প্রচুর জিম করতেন। বিদেশে হোটেলের জিমে সময় কাটানোর স্মৃতি থেকে জোন্সের মৃত্যুটা আরও কষ্ট দিচ্ছে আতহারকে, ‘এত ফিট একজন মানুষ। জিমে সময় কাটাত। যথেষ্ট স্বাস্থ্য সচেতন ছিল। আসলে এটাই মানুষের জীবন। কখন কার ডাক পড়ে...’

আতহারের চোখে দারুণ মজার মানুষ ছিলেন জোন্স। সবাইকে আপন করে নেওয়ার গুণটাই সবচেয়ে ভালো লাগত বাংলাদেশের সাবেক তারকার, ‘ওর সবচেয়ে বড় গুণ ছিল মানুষকে আপন করে নেওয়ার ব্যাপারটি। এটা খুব বড় গুণ। সবাই পারে না। জোন্স এমনভাবে কারও সঙ্গে কথা বলত যেন সে তাঁর কত দিনের পরিচিত। খুব মজার মানুষ ছিল সে। আমি তাঁকে সব সময়ই মিস করব।’

বাংলাদেশের ক্রিকেট নিয়ে আতহারের সঙ্গে অনেক কথাই হয়েছে জোন্সের। প্রয়াত অস্ট্রেলীয় তারকা সব সময়ই বাংলাদেশকে নিয়ে আশাবাদী ছিলেন। বাংলাদেশের বর্তমান দলটিকেও তিনি উঁচু চোখেই দেখতেন, ‘বাংলাদেশের ক্রিকেট নিয়ে সে খুব আশাবাদী ছিল। সে বলত, তোমরা প্রত্যাশা করার মতোই একটা দল দাঁড় করিয়েছ। সে বলত, “তোমরা ঠিক পথেই হাঁটছ। বড় দল হয়ে উঠতে সময় লাগছে লাগুক। একটা বড় টুর্নামেন্ট জেত, দেখ কী হয়, তোমাদের ক্রিকেট কতটা এগিয়ে যায়। ”’

জোন্সের সঙ্গে শেষ দেখা হওয়ার স্মৃতিটাও মনে পড়ছে আতহারের। গত বছর আইপিএলে বাংলা ধারাভাষ্য দিতে গিয়েছিলেন সেখানে। ধারাভাষ্যকক্ষ আলাদা হলেও হোটেল ছিল তাদের একই। সেখানে অনেকবারই গল্পে মেতেছেন। খুনসুটি করেছেন একে-অন্যকে নিয়ে। আতহারের কী সেদিন ভেবেছিলেন, সেই স্মৃতিগুলোই এতটা কষ্টের হয়ে উঠবে!