দুস্থদের জন্য খাবার কিনলেন লিটন-সঞ্চিতা

লিটন দাস এবং তাঁর স্ত্রী সঞ্চিতা। ছবি: লিটন দাসের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট
লিটন দাস এবং তাঁর স্ত্রী সঞ্চিতা। ছবি: লিটন দাসের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট
>

করোনাভাইরাস প্রতিরোধে মানুষের পাশে দাঁড়ালেন জাতীয় দলের ক্রিকেটার লিটন এবং তাঁর স্ত্রী

করোনাভাইরাস প্রতিরোধে নানাভাবে এগিয়ে আসছেন বিশ্বের তাবৎ ক্রীড়াবিদ। বাংলাদেশের ক্রিকেটাররাও বসে নেই। করোনা প্রতিরোধে তাঁরা উদ্যোগ নিচ্ছেন তহবিল গঠনের। লিটন দাস ফেসবুকে সে খবরই জানালেন। তাঁর স্ত্রী অবশ্য জানালেন আরেক খবর। ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে তিনি জানিয়েছেন, সংকটময় এ সময়ে গরিব-দুঃখীদের সাহায্যে লিটন তাঁকে কী সাহায্যটাই না করেছেন!

লিটনের স্ত্রী সঞ্চিতা ফেসবুকে এ পোস্ট দেন। ছবি: সঞ্চিতার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট
লিটনের স্ত্রী সঞ্চিতা ফেসবুকে এ পোস্ট দেন। ছবি: সঞ্চিতার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট

লিটনের স্ত্রী সঞ্চিতা আজ ফেসবুকে একটি ছবি পোস্ট করেন। পলিথিনের ব্যাগে প্যাকেট করা খাবারের স্তূপের ছবি। সঞ্চিতা লিখেছেন, ‘এ মুহূর্তে এর চেয়ে বেশি কিছু করার সামর্থ্য আমার নেই। সাহায্য করারও কেউ নেই। শেষ মুহূর্তে আমরা যতটুকু পেরেছি, কেনার চেষ্টা করেছি। কাজটা ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। কারণ এখন ঘরে নিজেকে আটকে (কোয়ারেন্টিন) রাখার সময়। দয়া করে অন্যদের সাহায্য করতে যা যা সম্ভব করুন। আপনার এ সাহায্য বাকিদের জীবনে আশীর্বাদ বয়ে আনুক।’ সঞ্চিতা এরপর সে লেখায় আলাদা একটি লাইনে লিখেছেন, ‘লিটন দাস, এই সংকটময় মুহূর্তে তুমি আমাকে যেভাবে সাহায্য করেছ, তা কখনো ভুলব না। ধন্যবাদ।’

নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এ পোস্ট দেন লিটন। ছবি: লিটন দাসের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট
নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এ পোস্ট দেন লিটন। ছবি: লিটন দাসের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট

সঞ্চিতার যখন এ পোস্ট করেছেন প্রায় একই সময়ে নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে লিটনও একটি পোস্ট করেন। বেশ বড় সে পোস্টের মূল বিষয় ছিল, করোনাভাইরাস প্রতিরোধে ক্রিকেটারদের উদ্যোগ নিয়ে। তার চুম্বক অংশ তুলে ধরা হলো, ‘আপনারা সবাই জানেন করোনাভাইরাসের সংক্রমণে চারদিকে ক্রমেই ছড়িয়ে পড়েছে কোভিড-১৯ রোগ। এই রোগ প্রতিরোধে কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে পুরো বিশ্ব। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। করোনাভাইরাস প্রতিরোধে আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে যার যার জায়গা থেকে। সেটির অংশ হিসেবে আমরা ক্রিকেটাররা একটা উদ্যোগ নিতে যাচ্ছি, যেটি হয়তো অনুপ্রাণিত করতে পারে আপনাদেরও। বিসিবির কেন্দ্রীয় চুক্তি থাকা ও গত তিন মাসে আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলা আমরা মোট ২৭ ক্রিকেটার এক মাসের বেতনের ৫০ শতাংশ দিয়ে একটা তহবিল গঠন করেছি। এই তহবিল ব্যয় হবে কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত ও সাধারণ মানুষ, যাদের গৃহবন্দী থাকা অবস্থায় জীবন চালিয়ে নিতে অনেক কষ্ট হয়। আমাদের তহবিলে জমা পড়েছে প্রায় ৩০ লাখ টাকার মতো। কর কেটে থাকবে ২৬ লাখ টাকা।’

বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের এ ওপেনার আরও লিখেছেন, ‘করোনার বিরুদ্ধে জিততে হলে আমাদের এই উদ্যোগ হয়তো যথেষ্ট নয়। কিন্তু যাদের সামর্থ্য আছে, সবাই যদি একসঙ্গে এগিয়ে আসেন কিংবা ১০ জনও যদিও এগিয়ে আসেন, এই লড়াইয়ে আমরা অনেক এগিয়ে যাব।...টাকা দিয়ে না হোক, হতে পারে দুস্থ মানুষকে খাবার কিনে দিয়ে। আসুন, পুরো দেশকে আমরা একটা পরিবার ভেবে চিন্তা করি এবং এই বিপদে সবাই সবাইকে সহায়তা করি।