টি-টোয়েন্টির যে ইতিহাসে বাংলাদেশ থাকবেই

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে গত মার্চে সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচটি খেলেছিল বাংলাদেশ।ছবি: প্রথম আলো

এই মুহূর্তের র‍্যাঙ্কিং বলবে, বাংলাদেশ টেস্টের চেয়েও টি-টোয়েন্টি ভালো খেলে। টেস্ট র‍্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশ নবম, টি-টোয়েন্টিতে অষ্টম। তিন সংস্করণের মধ্যে ওয়ানডেটা যে সবচেয়ে ভালো খেলে, সেটির প্রমাণও আছে র‍্যাঙ্কিংয়ে। সেখানে বাংলাদেশ সপ্তম।

টি-টোয়েন্টি বাংলাদেশ এখনো খেলতে শেখেনি, বাংলাদেশের গেইল-রাসেলদের মতো হার্ড হিটার কিংবা কোহলি-ডি ভিলিয়ার্সের মতো যেকোনো দিকে খেলার মতো ব্যাটসম্যান নেই, বাংলাদেশের বোলিং টি-টোয়েন্টিতে প্রতিপক্ষকে তেমন পরীক্ষায় ফেলতে পারে না...কান পাতলে কত সমালোচনাই তো শোনা যায় দলটাকে ঘিরে। রেকর্ড অবশ্য এখানে কিছুটা সায় দেয়। এখন পর্যন্ত ৯৬টি টি-টোয়েন্টি খেলেছে বাংলাদেশ, তার মধ্যে জিতেছে মাত্র ৩২টি, হেরেছে ৬২টি। ম্যাচ ফল দেখেছে, এমন সর্বশেষ দশ টি-টোয়েন্টিতে অবশ্য বাংলাদেশের জয়-হার সমান ৫টি করে।

সেই হ্যাটট্রিকের পর লি।
ফাইল ছবি, এএফপি

টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের ইতিহাস ঘাঁটলে আনন্দের রেকর্ড কমই মিলবে। আজকের এই দিনে ১৩ বছর আগে একটি ইতিহাসে জড়িয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশের নাম। বাংলাদেশের জন্য অবশ্য এতে আনন্দিত হওয়ার কিছু নেই। আজকের দিনে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি দেখেছিল প্রথম হ্যাটট্রিক। ২০০৭ বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ান সাবেক ফাস্ট বোলার ব্রেট লির সেই কীর্তিটা ছিল বাংলাদেশের বিপক্ষেই।

প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বের ম্যাচ ছিল সেটি। দক্ষিণ আফ্রিকার কেপটাউনে বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচটা শেষ পর্যন্ত ৯ উইকেটে জিতেছে অস্ট্রেলিয়া। টস জিতে বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ে পাঠান অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক রিকি পন্টিং। শুরুটা একেবারে খারাপ হয়নি বাংলাদেশের। লি আর ন্যাথান ব্রাকেনদের সামলে পাওয়ার প্লে-র ৬ ওভারে দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও নাজিমউদ্দিন তোলেন ৩১ রান। সপ্তম ওভারের শেষ বলে নাজিমউদ্দিন আউট হওয়ার সময়ে বাংলাদেশের রান ৪০।

১১তম ওভারে তামিম ফেরেন ব্যক্তিগত ৩২ রানে। তিনে নামা আফতাব আহমেদ করেন ৩১ রান। যদিও বাংলাদেশ ইনিংসে রান তোলার গতি তেমন ছিল না। মোহাম্মদ আশরাফুল, সাকিব আল হাসান ও নয়ে নামা মুশফিকুর রহিম—এই তিনজনেরই স্ট্রাইক রেট ছিল শুধু ১০০-র ওপরে। এর মধ্যে দুই অঙ্কে গেছেন শুধু সাকিব (১১ বলে ১৬)।

১৭তম ওভারে সেই সাকিবকে ফিরিয়েই ইতিহাস লেখার শুরু লি-র। ওভারের তৃতীয় বলে উইকেটকিপার অ্যাডাম গিলক্রিস্টের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন সাকিব, পরের বলে লি উপড়ে দেন মাশরাফি বিন মুর্তজার স্টাম্প। তারপরের বলে লি হ্যাটট্রিকের অপেক্ষায়, তাঁর সামনে অলক কাপালি। লি-র গুড লেংথের বলে মিডউইকেটে খেলতে চেয়েছিলেন কাপালি, কিন্তু বল লাগে তাঁর প্যাডে। আম্পায়ার আসাদ রউফ তুলে দেন আঙুল। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি দেখল প্রথম হ্যাটট্রিক।

শেষ পর্যন্ত ২০ ওভার খেলে বাংলাদেশ ৮ উইকেটে তোলে ১২৩ রান। জবাবে গিলক্রিস্টের সঙ্গে ম্যাথু হেইডেনের উদ্বোধনী জুটিতে অস্ট্রেলিয়া ১১.৩ ওভারে তুলে ফেলে ১০৪ রান। ১ চার ও ৪ ছক্কায় ‘গিলি’ ২৮ বলে ৪৩ রান করে রানআউট হয়ে ফিরলেও হেইডেন অপরাজিত ছিলেন। ৪৮ বলে ৯ চার ও ৩ ছক্কায় দলকে জিতিয়েই মাঠে ছাড়েন হেইডেন।