টিম পেইন = দলগত ব্যথা; খোঁচালেন অশ্বিন–প্রীতি দম্পতি

ভারতের স্পিনার রবিচন্দ্র অশ্বিনছবি: টুইটার

ব্যথা! ব্যথা! আর ব্যথা! বেচারা টিম পেইন। তাঁর নামের বঙ্গানুবাদ করলে যা দাঁড়ায়, সেটি এক অর্থে অস্ট্রেলিয়া দলের বর্তমান অবস্থা—দলগত ব্যথা!

ব্রিসবেন টেস্ট হারে সিরিজ খোয়ানোর পর পেইনকে যে শূলে চড়ানো হবে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। যেতে পারে নেতৃত্বও। সেসব ‘যদি-কিন্তু’র সমীকরণ।

আপাতত নানা রকম কথা সইতে হচ্ছে অস্ট্রেলিয়া দলের অধিনায়ককে। তাতে দায় আছে পেইনের নিজেরও। সিডনি টেস্টে রবিচন্দ্রন অশ্বিনকে অকথ্য ভাষায় স্লেজিং করেছিলেন। গ্যাবায় দেখে নিতে চেয়েছিলেন। দেখা হলো?

গ্যাবা অস্ট্রেলিয়ার দুর্গ। এখানে তারা সর্বশেষ টেস্ট হেরেছে ১৯৮৮ সালে। পেইনের জন্ম এর চার বছর আগে। অর্থাৎ বুদ্ধি হওয়ার পর থেকে পেইনের কাছে গ্যাবা সব সময় ছিল অস্ট্রেলিয়ার অজেয় থাকার প্রতিচ্ছবি।

সেই আত্মবিশ্বাস থেকেই সিডনিতে অশ্বিনকে চোখ রাঙিয়েছিলেন পেইন। অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক কি কখনো ভাবতে পেরেছিলেন, সেসব বুমেরাং হয়ে বিঁধবে তাঁর-ই বুকে!ভারতের জয়ের পর পেইনের সেই স্লেজিং নিয়ে যে হাসি-তামাশায় মত্ত অশ্বিন-প্রীতি দম্পতি!

ভারতীয় ক্রিকেটে রবিচন্দ্রন অশ্বিন বুদ্ধিমান-বর্ণময় চরিত্র। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্রিকেট নিয়ে দারুণ সব বুদ্ধিদীপ্ত পোস্ট এবং সোজা কথা সোজা করে বলায় কখনো প্রশংসা, কখনো নিন্দা জুটে থাকে ভারতীয় স্পিনারের। সিডনিতে পেইনের সঙ্গে ঝামেলায় জড়ানোর পর অস্ট্রেলিয়া অধিনায়কের কাছ থেকে তাঁকে শুনতে হয়েছিল, ‘গ্যাবায় তোমাকে দেখে নেব, উউ হুউউ।’

সেই কথা মনে রেখেছিলেন অশ্বিনের স্ত্রী প্রীতি অশ্বিন। ব্রিসবেনে পরের টেস্টে আজ ভারত জয় তুলে নেওয়ার পর টুইটারে নিখুঁত টাইমিং করেন প্রীতি। তাঁর দুটি টুইট, ‘উউ হুউউউ...হাহাহাহাশশশশ।’ আরেকটি টুইট, ‘গ্যাবায় তোমায় দেখে নেব, সতীর্থ।’

সিডনিতে অশ্বিনকে আরও অনেক কটু কথা বলেছিলেন পেইন। অশ্বিন-হনুমা বিহারির দৃঢ়তায় সেই টেস্ট ড্র করে সিরিজের ফয়সালা শেষ টেস্টে নিয়ে যায় ভারত।

এই জুটির ব্যাটিংয়ের সময় পেইন নিজের মেজাজ ধরে রাখতে পারেননি। তিনটি ক্যাচ ফেলা এই অধিনায়ক অশ্বিনকে খোঁচা মেরে বলেছিলেন, ‘ভারতে আমার বন্ধুসংখ্যা তোমার চেয়ে বেশি।’ এ ছাড়া প্রকাশের অযোগ্য ভাষা ব্যবহার করা পেইনকে ক্ষমা চাইতে হয়েছিল সেই আচরণের জন্য।

কিন্তু অশ্বিন সেসব ভুলে যাবেন কেন! দুর্দান্ত এক জয়ের পর অস্ট্রেলিয়ার সাবেক থেকে ইংল্যান্ডের মাইকেল ভনের খাটো চোখের বিশ্লেষণকেও ছেড়ে দেননি ভারতীয় স্পিনার।

টুইটারে পাশাপাশি দুটি ছবি জুড়ে একটি পোস্ট করেছেন অশ্বিন। ডান পাশে ভারতীয় দলের জয়ের ছবি। বাঁ পাশে রিকি পন্টিং, মাইকেল ক্লার্ক, মার্ক ওয়াহ, মাইকেল ভন ও ব্র্যাড হাডিনের উক্তি। ক্যাপশনে অশ্বিন লিখেছেন, ‘এলএইচএস (নট=) আরএইচএস!’ অর্থাৎ ছবি দুটির মধ্যে তুলনা টেনেছেন অশ্বিন। বাঁ পাশের কটূক্তি জয়ের সমান নয়!

এরপর অশ্বিনের খোঁচা, ‘চার সপ্তাহ ধরে যত ভালোবাসা পেয়েছি, সে জন্য কৃতজ্ঞতা।’ কথাটা মূলত অস্ট্রেলিয়ানদের উদ্দেশেই বলেছেন অশ্বিন।

ভারতের এই স্পিনার অস্ট্রেলিয়ানদের উক্তির যে ছবি পোস্ট করেছেন, সেখান থেকে দু–একটি উক্তি তুলে ধরা যায়। ক্লার্কের মন্তব্য, ‘বিরাট কোহলি ছাড়া ভারতের এই ব্যাটিং লাইনআপ ভাবা যায় আগামী দুই টেস্টে? ভারত গভীর সংকটে পতিত।’

অ্যাডিলেডে ভারতের হারের পর পন্টিং বলেছিলেন, ‘হোয়াইটওয়াশের সম্ভাবনা আছে। বিরাট কোহলি নেই, এমন হারের পর দলকে টেনে তোলার মতো কেউ নেই।’

সে যা–ই হোক, সিরিজটা শেষ পর্যন্ত ২-১ ব্যবধানে জিতেছে ভারত-ই। আর তাই অশ্বিন আরও একটি টুইটে ব্রিসবেনের গ্যাবাকে ধন্যবাদ জানিয়ে লিখেছেন, ‘আমরা চিরকালই এই সিরিজ মনে রাখব।’