টেন্ডুলকারের সঙ্গে হাত মেলানোয় তিনি গোসল করতে চাননি

২০১১ বিশ্বকাপ জেতার পর টেন্ডুলকারকে ঘাড়ে তুলে নেয় পুরো ভারতীয় দল।
ছবি: এএফপি

শচীন টেন্ডুলকার, রাহুল দ্রাবিড় ও সৌরভ গাঙ্গুলীরা তখন ভারতীয় দলের কান্ডারি। এমন সময় জাতীয় দলে তাঁদের সতীর্থ হওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন যুবরাজ সিং। শৈশবের নায়কদের পাশে বসার এই সুযোগ পেয়ে ভীষণ রোমাঞ্চিত ছিলেন সাবেক এই অলরাউন্ডার। সেটি এতটাই যে টেন্ডুলকারের পাশে বসতেও দ্বিধায় ছিলেন! শুধু তা-ই নয়, টেন্ডুলকারের সঙ্গে হাত মেলানোর পর নাকি গোসলও করতে চাননি যুবরাজ!

ভারতের হয়ে অনূর্ধ্ব–১৯ বিশ্বকাপ জয়ের পর ২০০০ সালে আইসিসি নকআউট ট্রফিতে ভারতের হয়ে অভিষেক যুবরাজের। দুই দশক আগের সেই স্মৃতি নেটফ্লিক্সের ভিডিও ‘স্টোরিজ বিহাইন্ড দ্য স্টোরিজ’–এ ভাগ করে নিয়েছেন ২০১১ বিশ্বকাপের সেরা খেলোয়াড়। যুবরাজ জানিয়েছেন, ভারতীয় দলে ক্যারিয়ারের শুরুর দিনগুলোতে তিনি একবার টেন্ডুলকারের পাশে বসতে আপত্তি জানিয়েছিলেন। সেটি অবশ্যই সম্মানবোধ এবং রোমাঞ্চ থেকে।

যু্বরাজ বলেন, ‘বলে বোঝাতে পারব না, শৈশবের নায়কের সঙ্গে দেখা হওয়ার অনুভূতিটা ঠিক কেমন ছিল। খুশিতে আত্মহারা হয়ে পড়েছিলাম। ক্যাম্প শুরুর আগেই ড্রেসিংরুমে যেতে পেরেছিলাম। শুধু একটা আসনই খালি ছিল, সেটা টেন্ডুলকারের পাশে। ম্যানেজারকে ডেকে বললাম, ওখানে বসতে পারব না। তিনি বললেন, না, সে (টেন্ডুলকার) তোমার সতীর্থ হতে যাচ্ছে। কথা বলো তার সঙ্গে। ধীরে ধীরে পাশে গিয়ে তাঁর দিকে তাকিয়ে ভাবছিলাম “এটা সত্যিই তিনি!”’

যুবরাজের ক্রিকেট খেলার সরঞ্জামের ব্যাগে টেন্ডুলকারের একটি ছবি ছিল। ভারতীয় কিংবদন্তি তা দেখার পর কী বলেছিলেন, সে কথাও বলেছেন যুবরাজ, ‘নিজের কিট ব্যাগ খোলার পর তাঁর একটা ছবি বেরিয়ে আসে। তিনি ছবিটা দেখে বললেন, “সুন্দর ছবি! ব্যাটসম্যানটা কে?” এরপর তিনি হেসে ফেললেন। আমাকে সহজ করতে এরপর সম্ভবত বেশি কিছুক্ষণ আলাপ করেছিলেন আমার সঙ্গে।’

টেন্ডুলকারের সঙ্গে আরও একটি স্মৃতি ভাগ করে নিয়েছেন ৩৮ বছর বয়সী সাবেক এ ক্রিকেটার, ‘২০০০ সালে ভারতের হয়ে অভিষেক আমার। অনূর্ধ্ব–১৯ বিশ্বকাপে ভালো করার পর নিজেকে হঠাৎ করেই শৈশবের আদর্শদের সঙ্গে আবিষ্কার করি। টেন্ডুলকার, দ্রাবিড়, সৌরভ, কুম্বলে, শ্রীনাথ—সব বড় বড় নাম। মনে হচ্ছিল “আমি কোথায় এসে পড়লাম!”’

ভারতীয় দলের অনুশীলনে যুবরাজের ব্যাটিং টেকনিকে কড়া নজর টেন্ডুলকারের।
ছবি: এএফপি

এরপর টেন্ডুলকারের সঙ্গে করমর্দনের স্মৃতিটা বললেন যুবরাজ, ‘আমি ক্লাসে ছিলাম পেছনের বেঞ্চের ছাত্র। বাসেও পেছনে বসতাম। যে মুহূর্তে তিনি (টেন্ডুলকার) এসে জহির খান, ভিজয় দাহিয়া ও আমার সঙ্গে হাত মেলালেন, তারপর ঘুরে নিজের আসনে গিয়ে বসলেন, আমি নিজের হাতটা সারা শরীরে মেখেছি। গোসল করতে চাইনি; কারণ, টেন্ডুলকারের সঙ্গে হাত মিলিয়েছিলাম।’

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সর্বোচ্চ এ রান সংগ্রাহককে ভারতীয় ক্রিকেটের ‘মাইকেল জর্ডান’ বলে মনে করেন যুবরাজ। এনবিএ কিংবদন্তির সঙ্গে তুলনা টেনে যুবরাজ বলেন, ‘তিনি এমন একজন, যাঁর ওপর সব সময় দেশকে জেতানোর চাপ ছিল। যতবারই দেখেছি, টেন্ডুলকার আউট হলে বেশির ভাগ সময়ই ভারত চুপসে যেত।’