টেস্ট বিশ্বকাপের প্রস্তুতিতে জাতীয় লিগ খেলতে হবে মুমিনুলদের

মুমিনুল হক। ফাইল ছবি
মুমিনুল হক। ফাইল ছবি

ওয়ানডের বিশ্বকাপের পর বিসিবির সব মনোযোগ এখন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আর টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে। বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ সফরসূচি টেস্ট ও টি-টোয়েন্টিতে ঠাসা। সীমিত ওভারের ক্রিকেটে বিসিবির চিন্তার বেশির ভাগজুড়ে এখন ২০২০ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। তারও আগে চলতি বছরের নভেম্বরে ভারত সফরে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ দিয়ে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে পা দেবেন সাকিবরা। কিন্তু টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ শুরুর আগে মাত্র একটি টেস্টই খেলার সুযোগ পাচ্ছে বাংলাদেশ দল, সেটিও আফগানিস্তানের বিপক্ষে। নভেম্বরে ভারতের মতো দলের বিপক্ষে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ শুরুর আগে প্রস্তুতির ঘাটতি রাখতে চায় না বিসিবি। প্রথম শ্রেণির আসর জাতীয় ক্রিকেট লিগে (এনসিএল) তাই জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের খেলাটা বাধ্যতামূলক করা হবে।

আগামী ১৫ অক্টোবর থেকে মাঠে গড়াবে জাতীয় লিগ, চলবে ২২ নভেম্বর পর্যন্ত। ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক প্রথম শ্রেণির টুর্নামেন্ট বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগ (বিসিএল) জানুয়ারি মাসে হবে বলে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে প্রস্তুতিতে সেটি কোনো কাজেই লাগবে না। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের প্রস্তুতিটা তাই জাতীয় লিগ দিয়েই সারতে হবে। জাতীয় লিগেও জাতীয় দলের খেলোয়াড়েরা হয়তো দুটি রাউন্ডই কেবল খেলতে পারবেন। বিসিবি চায়, টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের আগে যে কয়টি ম্যাচই খেলার সুযোগ থাকুক, জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা যেন তার বেশির ভাগেই খেলেন। অঙ্কের হিসাবে অন্তত ৭৫ শতাংশ। প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন কাল বলছিলেন, ‘আমরা চাচ্ছি কমপক্ষে ৭৫ শতাংশ ম্যাচে যেন জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা খেলে। এ বিষয়ে ঈদের পরেই সভা হবে। সভায় আমরা এটা চূড়ান্ত করব।’ নতুন টেস্ট ক্রিকেটার তৈরি করতে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটকে প্রতিযোগিতাপূর্ণ করার বিকল্প দেখেন না প্রধান নির্বাচক।

কিন্তু ঘরোয়া প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের খেলাটা অতীতেও বাধ্যতামূলক করেছিল বিসিবি। সবাই যে সে বাধ্যবাধকতা মেনেছেন, তা নয়। এসব লিগ খেলায় জাতীয় দলের খেলোয়াড়দের অনীহা স্পষ্ট। তবে এবার নাকি আঁটসাঁট বেঁধে নামছে বিসিবি।

অবশ্য প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটই বলুন বা টেস্ট ক্রিকেট, জাতিগতভাবেই দীর্ঘ পরিসরের ক্রিকেটের প্রতি কিছুটা নিরাসক্ত বাংলাদেশের মানুষ। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে যেহেতু শেষ পর্যন্ত শিরোপা জয়ের একটা ব্যাপার থাকবে, এক দলের অন্য দলকে পেছনে ফেলার প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকবে, এ নিয়ে সবার মধ্যেই আগ্রহ তৈরি হওয়াটা স্বাভাবিক। খেলোয়াড়দেরও আগের চেয়ে আরও বেশি টানবে দীর্ঘ পরিসরের ক্রিকেট। বাংলাদেশের টেস্ট দলের নিয়মিত সদস্য মুমিনুল হকেরও বিশ্বাস সেটাই, ‘আমাদের মতো দেশের জন্য এটা ভালো হবে। আমাদের মধ্যে চার দিনের ম্যাচের গ্রহণযোগ্যতা আগের তুলনায় বাড়বে। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে একটা মর্যাদার ব্যাপার আছে। সব দল ভালো খেলার জন্যই মাঠে নামবে। জিততে চাইবে। বিশ্বকাপের মতো শেষ পর্যন্ত চ্যাম্পিয়ন হবে একটা দলই। তাই প্রতিযোগিতাটা অনেক বেশি হবে। উত্তেজনা থাকবে। সবাই সেরা হওয়ার জন্যই খেলতে চাইবে।’

বাংলাদেশের টেস্টের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়াটাকে এর বড় ইতিবাচক দিক মনে করছেন মুমিনুল। নিয়মিত বড় দলগুলোর বিপক্ষে টেস্ট খেলার সুযোগ বাংলাদেশের টেস্ট ক্রিকেটের চেহারা বদলে দিতে পারে বলে এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যানের বিশ্বাস, ‘এখন থেকে অনেক বড় দলের সঙ্গে নিয়মিত খেলা হবে। আগে এটা কমই হতো। আমাদের জন্য একটু বেশি ভালো হয়েছে, কারণ আগে বছরে ৪-৫টা টেস্ট খেলতাম, এখন আরও বেশি টেস্ট হবে।’

বেশি টেস্টের জন্য বেশি বেশি প্রস্তুতিও দরকার। ঘরোয়া ক্রিকেটই যেহেতু সেই প্রস্তুতির একমাত্র সুযোগ, সাদা পোশাক-লাল বলের ক্রিকেটে এবার কি তারকা ক্রিকেটাররা একটু মাঠমুখী হবেন?