ডাবল সেঞ্চুরির জন্য বাবা-মাকে ধন্যবাদ দেবেন ক্রলি

ক্রলির ২৬৭ রানের ইনিংসে মুগ্ধ ক্রিকেট দুনিয়া।ছবি: রয়টার্স

জ্যাক ক্রলিতে মুগ্ধ ক্রিকেট দুনিয়া। এই মুগ্ধতা ইংল্যান্ড নির্বাচকদের ফেলে দিতে পারে মধুর এক সমস্যায়। বেন স্টোকসের জায়গায় দলে সুযোগ পেয়েই তিনি যা করেছেন, তাতে নির্বাচকদের যে ‘কাকে ছেড়ে কাকে রাখি’ অবস্থা!


স্টোকস পাকিস্তানের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্ট থেকে নেই। বাবার অসুস্থতার কারণে চলে গেছেন জন্মভূমি নিউজিল্যান্ডে তাঁর জায়গায় ক্রলি এসেই সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন দারুণ এক ফিফটিতে। তৃতীয় টেস্টে তো ডাবল সেঞ্চুরি করে জানিয়েই দিয়েছেন কারও বদলে নয় ইংল্যান্ড দলে থাকতেই এসেছেন তিনি।

২২ বছর বয়সী ক্রলি কাল খেলেছেন ২৬৭ রানের দারুণ এক ইনিংস। তাঁর ব্যাটেই পাকিস্তানের বিপক্ষে ৮ উইকেটে ৫৮৩ রান করে ইনিংস ঘোষণা করেছে ইংলিশরা। জবাবে পাকিস্তানের অবস্থা থরহরি কম্পমান। ২৪ রান তুলতেই যে নেই তাদের ৩ উইকেট।


পাকিস্তানি স্পিনারদের বিপক্ষে দারুণ সাবলীল এই ক্রলি। এই সাবলীলতার উৎস তাঁর নিজের চেষ্টা। স্পিনারদের বিপক্ষে কীভাবে ভালো করা যায়, সেটি শিখতে জানতেই তিনি এসেছিলেন ভারতে, ‘ভারতে গিয়ে স্পিন খেলা শিখেছি। স্পিনারদের বিপক্ষে নিজের ব্যাটিংয়ে উন্নতি করেছি আমি।’

নিজের ব্যাটিংয়ের উন্নতি করে ক্রলি দারুণ এক কীর্তি গড়লেন। ডাবল সেঞ্চুরি করে তিনি ইংল্যান্ডের হয়ে সবচেয়ে কম বয়সী ডাবল সেঞ্চুরিয়ানদের তালিকায় তৃতীয় স্থান দখল করে নিয়েছেন। ২২ বছর ২০১ দিনে এই দুর্দান্ত ইনিংসে তাঁর ওপরে আছেন কেবল ডেভিড গাওয়ার (২২ বছর ১০২ দিন), লেন হাটন (২২ বছর ৫৮ দিন)।


কালকের দিনটির দীর্ঘ অপেক্ষাতেই হয়তো ছিলেন ক্রলির বাবা-মা। খুব ছোটবেলা থেকেই তাঁরা ক্রলির ব্যাটিংয়ের উন্নতিতে টাকা-সময়-উৎসাহ, সবকিছুই বিনিয়োগ করেছিলেন। তাঁরা ক্রলির জন্য এমন একটা পরিবেশ তৈরি করে দিয়েছিলেন যেন তিনি ক্রিকেট খেলাটা উপভোগ করেন সব সময়।

ক্রলির কোচ রব কি গতকাল ধারাভাষ্যকার নাসের হুসেইনের সঙ্গে ক্রলির বেড়ে ওঠা নিয়ে কাল কথা বলছিলেন। সেখানে তিনি তাঁর বাবা-মা’র উদাহরণ দিয়ে বলেছেন, প্রত্যেক বাবা-মারই উচিত তাদের সন্তান যেন খেলাটা উপভোগ করে, সে ব্যবস্থা করে দেওয়া, ‘প্রত্যেক বাবা-মাকেই সন্তানের সঙ্গে খেলতে হবে বাচ্চাদের মতোই। বন্ধু বা খেলার সাথির মতোই। বাবা-মা’দের মনে রাখতে হবে সন্তানকে নেট অনুশীলনে নিয়ে যাওয়া মানে সন্তানের ছেলেবেলাকে বিসর্জন দেওয়া নয় ওটা যেন বাচ্চাটির জন্য আনন্দময় অভিজ্ঞতা হতে পারে। এ জন্য বাবা-মাকে সন্তানের জন্য ত্যাগ স্বীকার করতে হবে। যেটি ক্রলির বাবা-মা করেছেন।’


ইংল্যান্ডের হয়ে টেস্ট খেলতে নেমে নিজের প্রথম সেঞ্চুরিকে ‘ডাবল’-এ পরিণত করার তালিকাটাও বেশ সংক্ষিপ্ত। ক্রলি এ তালিকায় ছয়ে। আগের পাঁচজন হলেন—টিপ ফস্টার (১৯০৩), ওয়ালি হ্যামন্ড (১৯২৮), এডি পেইন্টার (১৯৩৮), বিল এডরিচ (১৯৩৯), রব কি (২০০৪)। এই তালিকায় কোচ রব কি’র পরের নামটিই তাঁর ছাত্রের—এটাও কিন্তু দারুণ ব্যাপার।

কাল ক্রলির খেলা দেখে নিজের মুগ্ধতা চেপে রাখতে পারেননি ভারতের সাবেক অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলীও। তিনি টুইটারে লিখেছেন, ‘ব্যাটিং অর্ডারে আদর্শ তিন নম্বর পেয়ে গেছে ইংল্যান্ড। দেখে মনে হলো খুব ভালো ক্রিকেটার। ওকে সব সংস্করণে দেখতে চাই।’