ডি কক মারলেন, মোস্তাফিজরা চেয়ে চেয়ে দেখলেন

ডি ককের সামনে অসহায় ছিলেন মোস্তাফিজরা।ছবি: আইপিএল

আগের ইনিংসে যশপ্রীত বুমরা কী দারুণ বোলিং করলেন। মাঝে এক আইপিএলে মুম্বাই ইন্ডিয়ানসে বুমরার সঙ্গে খেলেছেন, অনুশীলন করেছেন মোস্তাফিজুর রহমান। দল বদলে এখন রাজস্থান রয়্যালসের হয়ে গেলেও একটা ‘দেখিয়ে দেওয়া’র তাড়না থেকে মোস্তাফিজ বল হাতে কেমন করেন, তা দেখার আগ্রহ ছিল। কিন্তু মোস্তাফিজ শুধু মারই খেলেন! ৩.৩ ওভারে ৩৭ রান দিয়েছেন বাংলাদেশের বাঁহাতি পেসার, উইকেট পেয়েছেন শুধু একটি।

ওভারপ্রতি গড় রান দেওয়া বা ইকোনমি রেটের হিসেবে মোস্তাফিজ রাজস্থানের সবচেয়ে খরুচে বোলার, বাকিরাও কম মার খাননি। মেরেছেন মূলত কুইন্টন ডি কক। মুম্বাইয়ের দক্ষিণ আফ্রিকান ওপেনার শেষ পর্যন্ত ৫০ বলে ৭০ রান করে অপরাজিত ছিলেন। তাতে যা হলো, রাজস্থানের ১৭১ রান ৭ উইকেট আর ৯ বল হাতে রেখেই জিতে গেছে মুম্বাই। ৬ ম্যাচে ৬ পয়েন্ট নিয়ে মুম্বাই রইল পয়েন্ট তালিকার চার নম্বরে, রাজস্থান ৬ ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে আছে সাত নম্বরে।

ডি ককের সামনে পাত্তা পায়নি রাজস্থান রয়্যালসের বোলাররা।
ছবি: আইপিএল

মোস্তাফিজের প্রতিটি ওভার আজ প্রথম দু-তিন বল বাদ দিয়ে শুরু হলেই মোস্তাফিজও হতে পারতেন ‘বুমরা!’ মোস্তাফিজ, সাকারিয়া ও উনাদকাট—তিন বাঁহাতি পেসারকে নিয়ে নামা রাজস্থান চতুর্থ ওভারে আক্রমণে আনে মোস্তাফিজকে। এসেই প্রথম বলে ডি ককের হাতে চারের মার খেলেন মোস্তাফিজ। পরের বলে ছক্কা হাঁকিয়ে মোস্তাফিজকে বোলিংয়ে ‘স্বাগত’ জানানোর কাজটা আরেকটু ভালোভাবে করলেন ডি কক।

প্রথম ওভারে ১৩ রান দেওয়া ‘ফিজ’ আবার বোলিংয়ে এলেন অষ্টম ওভারে। এবার শুধু ব্যাটসম্যান বদলেছেন, প্রথম বলের ভাগ্য বদলায়নি! সূর্যকুমার যাদবের ব্যাটের কানা ছুঁয়ে ওভারের প্রথম বলে চার। সেই ওভারে মোস্তাফিজ দিলেন ৮ রান।

২ ওভারে ২১ রান দেওয়া মোস্তাফিজকে এরপর ১৭তম ওভারে যখন বোলিংয়ে এনেছেন রাজস্থান অধিনায়ক সঞ্জু স্যামসন, ততক্ষণে মুম্বাইয়ের জয় নিয়ে সংশয় কমে গেছে অনেকটাই! ২৪ বলে তখন মুম্বাইয়ের দরকার আর ৩২ রান। ক্রিজে ততক্ষণে ৪৭ বলে ৬৪ রানে অপরাজিত ডি ককের সঙ্গী ২২ বলে ৩৩ রানে অপরাজিত ক্রুনাল পান্ডিয়া। মোস্তাফিজের ওভারের প্রথম বল শেষে পান্ডিয়ার রান হয়ে গেল ২৩ বলে ৩৯।

মোস্তাফিজ আজ ওভারের শুরুতে কখনো ভালো করেননি।
ছবি: আইপিএল

ডিপ মিডউইকেট দিয়ে বিশাল ছক্কা খেয়ে শুরু ওভারে পরের বলগুলো অবশ্য ভালোই করেছেন মোস্তাফিজ। সেটিরই পুরস্কার হয়তো চতুর্থ বলে উইকেট। চতুর্থ স্টাম্পে অনেকটা ফুল লেংথের বলে হাঁকাতে চেয়েছিলেন পান্ডিয়া, কিন্তু একটু সুইং করা বল তাঁর ব্যাটের কানায় লেগে আঘাত হানল মিডল স্টাম্পে। ওভারে ৭ রান দিয়ে ১টা উইকেট পেলেন মোস্তাফিজ। ১৯তম ওভারে এসে তিন বলে দুই চারে আবার দিলেন ৯ রান, ‘নিয়ম’ মেনে প্রথম বলে চারের মারও খেলেন।

অন্তত ২ ওভার করেছেন, রাজস্থানের এমন বোলারদের মধ্যে শুধু চেতন সাকারিয়াই-যা একটু রানের বানে টান দিতে পেরেছেন, ৩ ওভারে দিয়েছেন ১৮ রান। এর বাইরে মার খেয়েছেন সবাই। মারটা বেশি ডি ককেরই। ৫০ বলের ইনিংসে ৭০ রানের ৩৬ ডি কক করেছেন চার-ছক্কা মেরে। এর মধ্যে অবশ্য ফিফটি করার পর একটু ক্ষান্তি দিয়েছেন বাউন্ডারি হাঁকানোয়। ৩৫ বলে ৫০ ছোঁয়ার পথে ইনিংসের ৬ চারের ৪টি ও দুই ছক্কার দুটিই মেরেছেন ডি কক।

ডি ককের বাইরে ক্রুনাল পান্ডিয়া ২৬ বলে ২টি করে চার ও ছক্কায় করেছেন ৩৯ রান। তৃতীয় উইকেটে ডি ককের সঙ্গে ৪৪ বলে ৬৩ রানের জুটি গড়েন পান্ডিয়া।