ডি ভিলিয়ার্সের ভিনগ্রহের ব্যাটিংয়ে জিতলেন কোহলিরা
প্রথমে দেবদূত পাড়িকাল। এরপর বিরাট কোহলি। দুই বলে উইকেটে থিতু দুই ব্যাটসম্যান আউট। রাজস্থান রয়্যালসের ছুড়ে দেওয়া ১৭৮ রানের লক্ষ্য এই জোড়া আঘাতের পর রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর জন্য সহজ হওয়ার কথা না। কিন্তু চারে নামা এবি ডি ভিলিয়ার্স এসে সব তছনছ করে দিলেন। মাত্র ২২ বলে করলেন অপরাজিত ৫৫ রান। কঠিন হয়ে ওঠা বেঙ্গালুরু জিতল ৭ উইকেটে।
এক সপ্তাহ আগেও একই কাণ্ড ঘটিয়েছিলেন ডি ভিলিয়ার্স। কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিপক্ষে শারজার মন্থর উইকেট মাত্র ৩৩ বলে ৭৩ রান করেছিলেন তিনি। যেই উইকেটে বিরাট কোহলির একদমই ব্যাটে-বলে হচ্ছিল না, সেই উইকেটে তিনি খেলেছেন ২২১.২১ স্ট্রাইক রেটে। সে ইনিংস দেখে মুগ্ধ কোহলি বলেছিলেন, এমন উইকেটে কারও পক্ষেই দ্রুত রান তোলা সম্ভব ছিল না। শুধু একজন ‘অতিমানব’ই পেরেছেন সেটা করতে। সেই অতিমানব আজও দেখা দিলেন আইপিএলে।
রাজস্থান রয়্যালসের ছুড়ে দেওয়া ১৭৮ রান সহজ ছিল না দুবাইয়ের উইকেটে। দুই থিতু ব্যাটসম্যান পাড়িকাল ও কোহলিরা উইকেটে সময় কাটিয়েও দ্রুত রান খুঁজতে পারছিলেন না। কিন্তু ডি ভিলিয়ার্স ক্রিজে আসতেই যেন উইকেটের রূপ পাল্টে গেল। ৭ ওভারে ৭৬ রান দরকার ছিল বেঙ্গালুরুর। উইকেটে রান তোলা কতটা কঠিন ছিল সেটা টের পাওয়া যাচ্ছিল ডি ভিলিয়ার্সের অন্য প্রান্তে থাকা গুরকিরাত সিংয়ের ব্যাটিং দেখে। কিন্তু অন্যরা এই পৃথিবীতে ব্যাটিং করলেও ডি ভিলিয়ার্স যেন খেলছিলেন ভিনগ্রহে। ১টি চার ও ৬টি ছক্কায় ডি ভিলিয়ার্স সাজান তাঁর ইনিংস, স্ট্রাইক রেট ২৫০। তাঁর অবিশ্বাস্য ইনিংসে ভর করে দুই বল ও সাত উইকেট হাতে রেখে ম্যাচ জিতে বেঙ্গালুরু।
শেষ দুই ওভারে ৩৫ রান দরকার ছিল বেঙ্গালুরুর। কিন্তু ম্যাচটা একদম সহজ বানিয়ে নিয়েছেন ডি ভিলিয়ার্স। টানা তিন ছক্কায় প্রথমেই তুলে নিয়েছেন ১৮ রান। তাঁর এমন রূপ দেখে আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠেন গুরকিরাতও। ইনিংসের একমাত্রটি চারটি তিনি মেরেছেন জয়দেব উনাদকাটের এই ওভারেই। সব মিলিয়ে এল ২৫ রান। শেষ ওভারে ১০ রান দরকার ছিল। প্রথম ৩ বলে ৫ রান তোলার পর চতুর্থ বলে সব ঝামেলা চুকিয়েছেন ডি ভিলিয়ার্স। দারুণ এক ছক্কায় ম্যাচ শেষ করে তবেই এসেছেন ‘মিস্টার থ্রি সিক্সটি।’
এ নিয়ে ৯ ম্যাচ খেলে ৬ ম্যাচ জিতে পয়েন্ট তালিকায় তিন নম্বরে জায়গা করে নিয়েছে কোহলির দল। এর আগে রয়্যালসও ভালো ব্যাটিং করে স্কোরবোর্ডে ১৭৭ রান তোলে। এবারের আইপিএলে আজই রবিন উথাপ্পাকে প্রথমবারের মতো ওপেনিংয়ে পাঠায় রাজস্থান। ২২ বলে ৪১ রান করে রয়্যালসকে দারুণ শুরু এনে দেন তিনি। গত দুই ম্যাচের মতো বেন স্টোকস আজও ছিলেন ব্যর্থ। তবে মাঝের ওভারে স্টিভ স্মিথের ৩৬ বলে ৫৭ রানের ইনিংসটি রয়্যালসকে ১৭৭ রানের লড়ে যাওয়ার মতো লক্ষ্য এনে দেয়। তবে এই রানটাও শেষ পর্যন্ত যথেষ্ট হলো না।