‘ড্যাডি, জলদি বাড়ি ফিরে এসো’—ওয়ার্নারকে মেয়েদের আবেগমাখা চিঠি

ডেভিড ওয়ার্নার।ছবি: আইপিএল

আইপিএল স্থগিত হয়ে যাওয়ায় কার কী লাভ-ক্ষতি হয়েছে, সে হিসাবে গেলে হয়তো প্যাঁচ লেগে যাবে। খেলোয়াড়, ফ্র্যাঞ্চাইজি, দর্শক, আয়োজক, সম্প্রচারক...কত মানুষেরই তো এখানে আর্থিক-মানসিক হিসাব জড়িয়ে। তবে একটা দিক থেকে ডেভিড ওয়ার্নার হয়তো স্বস্তি পেয়েছেন আইপিএল স্থগিত হয়ে যাওয়ায়। এবারের আইপিএল যতটুকু মাঠে গড়িয়েছে, সেটি সানরাইজার্স হায়দরাবাদের অস্ট্রেলিয়ান ওপেনার ভুলেই যেতে চাইবেন।

দলের অধিনায়ক ছিলেন তিনি, কিন্তু টুর্নামেন্ট স্থগিত হওয়ার দিন কয়েক আগে হঠাৎ ওয়ার্নারকে সে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হলো। সেখানেই শেষ নয়, একাদশ থেকেই বাদ পড়ে গেলেন বাঁহাতি ওপেনার! কারণ? দল ভালো করছিল না, তাঁর ব্যাটও কথা বলছিল না।

এর মধ্যে আইপিএল স্থগিত হয়ে যাওয়া যদি তাঁর জন্য স্বস্তি হয়ে আসে, ওয়ার্নারকে এরপর আবেগে ভাসিয়ে দিয়ে গেছে অস্ট্রেলিয়া থেকে অনলাইনে ভেসে আসা চিঠি। প্রেরক, তাঁর তিন মেয়ে। শুধু ওয়ার্নারকে কেন, বাবাকে জলদি বাড়ি ফেরার আকুতি জানিয়ে ওয়ার্নারের তিন মেয়ের লেখা চিঠিটা যে–কারওই আবেগে টোকা দিয়ে যাবে।

ওয়ার্নারকে তাঁর মেয়েদের চিঠি।
ছবি: ইনস্টাগ্রাম

ইনস্টাগ্রামে মেয়েদের চিঠিটি নিজের অনুসারীদের সঙ্গে ভাগাভাগি করেছেন ওয়ার্নার। শিশুহাতে আঁকা একটা ছবির সঙ্গে ছোট্ট একটা চিঠি। ছবিতে দেখা যাচ্ছে পাঁচজন মানুষের অবয়ব। পাঁচজন কে কে, সেটি খুব সুন্দর করে নির্দেশনা দেওয়া আছে—ড্যাড, মাম, আইভি, ইন্ডি, আইলা। বুঝে নিতে তো আর কষ্ট হয় না যে এখানে ‘ড্যাড’ মানে ওয়ার্নার, ‘মাম’ মানে ওয়ার্নারের স্ত্রী ও তাঁর তিন মেয়ের মা ক্যান্ডিস। আর আইভি, ইন্ডি আর আইলা হচ্ছে ওয়ার্নার-ক্যান্ডিসের তিন সন্তান।

ছবির ওপরের দিকে আকাশ আঁকা, আর পাঁচটি অবয়বের পাশে আঁকা ভালোবাসার চিহ্ন। আর ছবির পাশে ওয়ার্নারের উদ্দেশে লেখা, ‘প্লিজ ড্যাডি, সোজা বাড়ি ফিরে আসো! আমরা তোমাকে অনেক মিস করছি। তোমাকে অনেক ভালোবাসি। আইভি, ইন্ডি ও আইলার ভালোবাসা নিয়ো।’ লেখার চারপাশেও অনেক ভালোবাসার ইমোজি।

বাবার প্রতি সন্তানের এমন ভালোবাসার প্রকাশ পাথরহৃদয়কেও কিছু আর্দ্র করার কথা, আর ওয়ার্নারের কেমন লাগছে তা তো অনুমান করাই যায়! ছবিটার পাশে ইনস্টাগ্রামে জুড়ে দেওয়া ক্যাপশনে বোঝা গেল, চিঠিটা তাঁর বড় মেয়ে আইভির লেখা। ওয়ার্নার লিখেছেন, ‘আমার আদরের আইভি!’ ক্যাপশনে স্ত্রীকে ট্যাগ করে পাশে হ্যাশট্যাগ দিয়ে লিখেছেন, ‘পরিবার।’

আইপিএলে এবার সময়টা মোটেও ভালো কাটেনি ওয়ার্নারের।
ছবি: আইপিএল

চিঠিটা এমন সময়ে এল, যখন আইপিএলে যাওয়া অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার-কোচ-কর্মকর্তাদের দেশে ফেরা নিয়ে আছে শঙ্কা। ভারতে করোনার ভয়াবহতা তো এখন পুরো বিশ্বই জানে, অস্ট্রেলিয়ার সরকার তাই ১৫ মে পর্যন্ত ভারত থেকে তাদের দেশে সব বিমান চলাচল নিষিদ্ধ করেছে। এর মধ্যে আইপিএলে জৈব সুরক্ষাবলয়ে থাকা ক্রিকেটাররাও যে আর সুরক্ষিত ছিলেন না, তা বোঝা গেছে গত দুয়েক দিনে।

কলকাতা নাইট রাইডার্সের দুই ক্রিকেটার সন্দীপ ভারিয়ের ও বরুণ চক্রবর্তী করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর গত পরশু কলকাতা নাইট রাইডার্স ও রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর ম্যাচ স্থগিত হয়। এরপর গতকাল আইপিএল অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত ঘোষণা করে ভারতের ক্রিকেট নিয়ন্ত্রক সংস্থা (বিসিসিআই)। না করে হয়তো উপায়ও ছিল না। বোলিং কোচ লক্ষ্মীপতি বালাজিসহ চেন্নাই সুপার কিংসের কয়েকজন সদস্য করোনা পজিটিভ হয়েছেন। সানরাইজার্স হায়দরাবাদের ঋদ্ধিমান সাহা ও দিল্লি ক্যাপিটালসের অমিত মিশ্র পজিটিভ হয়েছেন। চেন্নাইয়ের অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটিং কোচ মাইক হাসির করোনা পজিটিভ হওয়ার খবর এসেছে আজ।

তা আইপিএল তো স্থগিত হলো, অস্ট্রেলিয়ার খেলোয়াড়েরা ফিরবেন কীভাবে, তা নিয়ে সংশয়টা এখনো কাটেনি। ওয়ার্নারের তাঁর মেয়েদের কাছে ফিরে যাওয়ার অপেক্ষা আরও বাড়ছে তাতে।