ঢাকাকে ১৭০ রানের লক্ষ্য দিল রাজশাহী

রাজশাহীর মান বাঁচিয়েছেন মেহেদী হাসান।ছবি: শামসুল হক

উইকেট কঠিন, এমনটা একবারও মনে হয়নি। কিন্তু মিনিস্টার গ্রুপ রাজশাহীর টপ অর্ডার তেমনটাই মনে করাচ্ছিল। বেক্সিমকো ঢাকার বোলাররাও বেশ দাপট দেখাচ্ছিলেন। কিন্তু খেলতে জানলে এ উইকেটেও যে কত ভালো খেলা যায় সেটা দেখিয়েছেন মেহেদী হাসান ও নুরুল হাসান। এ দুজনের সুবাদেই আজ বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপের প্রথম ম্যাচে ১৬৯ রান তুলেছে রাজশাহী।

প্রথম দুই ওভারে দুর্দান্ত বল করেছিলেন রুবেল হোসেন। তাঁর প্রথম ওভারে তো রীতিমতো খাবি খেয়েছেন নাজমুল হোসেন। দ্বিতীয় ওভারে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেছিলেন আনিসুল ইসলামকে। কিন্তু ইয়াসির রাব্বির মাখন গলা হাত তাঁকে উইকেট বঞ্চিত করেছে। এ কারণেই ৫ বলে ১২ রানে যে ইনিংসটা শেষ হওয়ার কথা ছিল সেটা ২৩ বল ও ৩৫ রানে থেমেছে। সেই রুবেলকে দ্বিতীয় স্পেলে মেহেদী স্বাগতম জানালেন চার মেরে। সে চারে একটু ভাগ্যের ছোঁয়া ছিল। এ নিয়ে ওঠা অস্বস্তিটা দূর করলেন পরের বলেই। লেগ সাইডে দারুণ এক ফ্লিকে ছক্কা হাঁকিয়ে। প্রথম দুই ওভারে মাত্র ৭ রান দেওয়া রুবেল ২ বলেই দিলেন ১০ রান।

মেহেদীর এভাবে অভ্যর্থনা জানানো এরপরও চলেছে। হেলেদুলে বল করতে আসা সাব্বির রহমানকে বোলিং নিয়ে সাবধান হওয়ার বার্তা দিয়েছেন প্রথম বলেই। লং অন দিয়ে বিশাল এক ছক্কা মেরে। এর আগে নাঈম হাসানকেও মেরেছেন দুই ছক্কা। অন্য প্রান্তে থাকা নুরুল হাসানও স্পিনারদের ওপর এভাবে নির্দয়ভাবে চড়াও হয়েছেন।

ঢাকা প্রথমে চাপেই রেখেছিল রাজশাহীকে।
ছবি: প্রথম আলো

এ দুজন ওভাবে না খেললে ম্যাচটা টি-টোয়েন্টি কি না এ নিয়ে সন্দেহ জাগতে পারত। রুবেলের প্রথম ওভারে এসেছিল এক রান। আনিসুল হকের আগ্রাসী শুরুটাও টি-টোয়েন্টি মেজাজটা এনে দিতে ব্যর্থ হচ্ছিল। অন্যদিকে নাজমুল হোসেন যে ছিলেন টেস্ট মেজাজে। প্রথম ৩ ওভার শেষে ১১ বলে মাত্র ৩ রান রাজশাহী অধিনায়কের। এমন অবস্থায় বাঁহাতি স্পিনার নাসুমকে ডেকে আনলেন মুশফিকুর রহিম। পাওয়ার প্লেতে বাঁহাতি স্পিনার পেয়ে একটু স্বস্তি পেলেন বাঁহাতি নাজমুল। দুই ছক্কায় প্রথম চার বলে ১৪ তুললেন। পঞ্চম বলে তৃতীয় ছক্কা মারতে গিয়ে লং অনে ধরা পড়লেন। ৩১ রানে থামল উদ্বোধনী জুটি।

এর পর রনি তালুকদার, মোহাম্মদ আশরাফুল কিংবা ফজলে মাহমুদরা শুধু স্কোরারের কষ্টটাই বাড়িয়েছেন, দলের স্কোরে কোনো গুরুত্বপূর্ণ অবদান তাঁদের রাখা হয়নি। ৮ বলে ৬ রান করে ফিরেছেন রনি। ১ বল বেশি খেলে ১ রান কম আশরাফুলের। ফজলে মাহমুদ অবশ্য বল খেলার ‘যন্ত্রণা’তেও যাননি। শূন্য বলেই রান আউট হয়ে বিদায় নিয়েছেন।

আশরাফুল ও ফজলের বিদায়ের ঘটনা ৫ বলের মধ্যে। মাঝে আবার আনিসুলও ফিরেছেন। অর্থাৎ ৫ বলে ৩ উইকেট হারিয়েছে রাজশাহী। দলের স্কোরে কোনো নড়চড় হয়নি এর মাঝে। ৬৫ রানে ৫ উইকেট হারানো রাজশাহী কাঁপছিল তখন।

এরপরই দাঁড়িয়ে গেলেন মেহেদী ও নুরুল। টি-টোয়েন্টি ম্যাচ, তাই ধাক্কা সামলানোর সময়টাও কম। শুধু এক ওভার রয়েসয়ে খেললেন। এরপরই পাল্টা আক্রমণে গেলেন দুজন। পরে নামলেও রান তোলায় এগিয়ে ছিলেন মেহেদী। ৩১ বলে ফিফটি ছুঁয়েছেন। মেহেদী পঞ্চাশ ছোঁয়ার পরই ফিরেছেন নুরুল। ২০ বলে ৩৯ করে আউট হয়েছেন মুক্তার আলীর বলে। ২ চার ও ৩ ছক্কার এ ইনিংসটা শেষ হলো ১৮তম ওভারের পঞ্চম বলে। ৪৯ বলেই থামল ৮৯ রানের জুটি।

সঙ্গী হারানোর দুঃখেই হয়তো পরের ওভারেই বিদায় নিলেন মেহেদীও। ৫০ রানেই ফিরেছেন মেহেদী। চার ছক্কার সঙ্গে তিন চার ছিল তাঁর ইনিংসে। মেহেদী ফেরার পর মাত্র ১৩ রান তুলতে পেরেছে রাজশাহী। ২২ রানে ৩ উইকেট পেয়েছেন মুক্তার।