তসলিমা নাসরিনকে কড়া জবাব ইংলিশ ক্রিকেটারদের

বিতর্কিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন।
ছবি: ফেসবুক

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রায়ই ঝড় ওঠে। আজ উঠেছে বাংলাদেশের নির্বাসিত বিতর্কিত লেখিকা তসলিমা নাসরিনকে নিয়ে। ইংল্যান্ডের তারকা ক্রিকেটার মঈন আলীকে নিয়ে বিতর্কিত এক মন্তব্য করেছেন তসলিমা।

এরপর মঈনের জাতীয় দল সতীর্থ জফরা আর্চার এই লেখিকার মন্তব্যের কড়া জবাব দেন। ইংল্যান্ড জাতীয় দলে খেলা বেন ডাকেট ও স্যাম বিলিংসরাও চুপ থাকেননি। তসলিমার টুইটার আইডি বাতিলের আবেদন চেয়ে মন্তব্য করেছেন তাঁরা।

১৯৯৪ সালে দেশ ত্যাগ করা তসলিমা মঈনকে নিয়ে টুইটটি করেন কাল, ‘মঈন আলী ক্রিকেট না খেললে সিরিয়াতে গিয়ে আইএসআইয়ের সঙ্গে যোগ দিত।’

সম্প্রতি ভারতের সংবাদমাধ্যম জানায়, আইপিএলে চেন্নাই সুপার কিংসের জার্সিতে মদ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানের লোগো থাকায় মঈন নিজের জার্সি থেকে সেই প্রতিষ্ঠানের লোগো তুলে নেওয়ার অনুরোধ করেছেন। কিন্তু চেন্নাই দাবি করেছে, এ সংবাদ ভুল। এরপরই টুইটটি করেন তসলিমা। পরে যদিও সেই টুইট মুছে ফেলেছেন।

তবে ‘লজ্জা’ ও ‘আমার মেয়েবেলা’ বইয়ের লেখিকার ওই টুইট রিটুইট করে আজ প্রথম তোপটি দাগেন আর্চার, ‘আপনি কি সুস্থ? আমার মনে হয় না।’

তসলিমা এরপর নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করে আজ আরেকটি টুইট করেন। আর্চার সেটিও রিটুইট করে জবাব দেন। বিষয়টি নিয়ে টুইটারে ঝড় ওঠায় এগিয়ে আসেন ইংল্যান্ডের হয়ে ৪ টেস্ট ও ৩ ওয়ানডে খেলা বেন ডাকেট।

তসলিমার প্রথম টুইটটি রিটুইট করে তিনি মন্তব্য করেন, ‘এই অ্যাপের এটাই সমস্যা। লোকে এমন কথাও বলতে পারে। বিরক্তিকর। অবস্থার পরিবর্তন হওয়া দরকার। দয়া করে এই অ্যাকাউন্ট রিপোর্ট করুন।’

ডাকেট আরেকটি টুইটে মন্তব্য করেন, ‘বিশ্বাসই হচ্ছে না। বিরক্তিকর টুইট। বিরক্তিকর মানুষ।’ তাঁর এই টুইটে ইংল্যান্ডের হয়ে ২২ ওয়ানডে ও ৩০ টি-টোয়েন্টি খেলা উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান স্যাম বিলিংসের মন্তব্য, ‘দয়া করে সবাই তসলিমার অ্যাকাউন্ট রিপোর্ট করুন। বিরক্তিকর!’

ইংল্যান্ডের হয়ে ৪ ওয়ানডে ও ৬ টি-টোয়েন্টি খেলা বোলার সাকিব মাহমুদও টুইট করেন। নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করে তসলিমার করা দ্বিতীয় টুইটটি রিটুইট করে তিনি মন্তব্য করেন, ‘ব্যঙ্গাত্মক? অসুস্থতার পর্যায়ে আপনার রসিকতার মানসিকতা।’

জফরা আর্চার প্রথম মন্তব্যটি করার পর আজ নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করে তসলিমা টুইটে লেখেন, ‘নিন্দুকেরা ভালো করেই জানে, মঈন আলীকে নিয়ে করা টুইটটি ব্যঙ্গাত্মক। কিন্তু তারা এটাকে ইস্যু হিসেবে ধরে নিয়ে আমাকে অপদস্থ করছে। কারণ, আমি মুসলিম সমাজকে ধর্মনিরপেক্ষ করার চেষ্টা করি এবং ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধাচরণ করি। মানবজাতির অন্যতম মর্মান্তিক বিষয় হলো, নারীবাদের পক্ষ নেওয়া বামপন্থীরা নারীবাদের বিপক্ষে অবস্থান নেওয়া ইসলামপন্থীদের সমর্থন দেয়।’

বলা বাহুল্য, ক্রিকেটপ্রেমীদের তুমুল সমালোচনার শিকার হচ্ছেন তসলিমা। তবে আর্চার এই লেখিকার ব্যাখ্যাকেও ছেড়ে কথা বলেননি। সেটি রিটুইট করে আর্চার লেখেন, ‘ব্যঙ্গাত্মক? কিন্তু কেউ তো হাসছে না, এমনকি আপনিও নন, এখন অন্তত যে কাজটা আপনি করতে পারেন, তা হলো টুইটটি মুছে ফেলা।’

ইংলিশ ক্রিকেটারদের এই তোপ শেষ পর্যন্ত কাজে লাগে। ‘মঈন আলী আইএসআইয়ে যোগ দিতেন...’, এ টুইট মুছে ফেলেছেন তসলিমা। তবে তাঁর দ্বিতীয় টুইটটি এখনো রয়েছে।