তাঁরা কিছুই জানতেন না

কেপটাউন টেস্টে খেলেছিলেন অস্ট্রেলিয়ার চার বোলার—হ্যাজলউড, কামিন্স, স্টার্ক ও লায়ন।ছবি: টুইটার

স্টিভ স্মিথ, ডেভিড ওয়ার্নার ও ক্যামেরন ব্যানক্রফট—২০১৮ সালে কেপটাউন টেস্টে বল টেম্পারিংয়ের দায় এত দিন ধরে টানছেন এই তিন অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার। কিন্তু সেই টেস্টে দলের বোলারদের নিয়ে ব্যানক্রফটের একটি মন্তব্যের—‘এটা তো পরিষ্কারই’—পর তোলপাড় চলছে।

ব্যানক্রফটের দাবি, একজন বোলার হিসেবে অবশ্যই টেম্পারিং বোঝার কথা। মাইকেল ক্লার্কের মতো অস্ট্রেলিয়ার সাবেক অধিনায়কও ব্যানক্রফটের কথার পক্ষে। কিন্তু সেই টেস্টে মাঠে নামা অস্ট্রেলিয়ার চার বোলার প্যাট কামিন্স, জশ হ্যাজলউড, মিচেল স্টার্ক ও নাথান লায়নের বিরুদ্ধে যুগ্মভাবে মুখ খুললেন বিবৃতি দিয়ে।

‘অস্ট্রেলিয়ান জনগণ’-এর প্রতি আজ এক বিবৃতিতে চার বোলার জানিয়েছেন, এর আগে বহুবার তাঁরা এই প্রশ্নের উত্তর দিলেও আবারও কথা বলতে বাধ্য হলেন।

অস্ট্রেলিয়ার তারকা পেসার মিচেল স্টার্কের ওয়েবসাইটে এই যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করা হয়। সেখানে বলা হয়েছে, ‘আমরা নিজেদের সততা নিয়ে গর্ব করি। এটা হতাশার যে কিছু সংবাদকর্মী ও সাবেকেরা ২০১৮ সালে কেপটাউন টেস্ট নিয়ে সাম্প্রতিক সময়ে আমাদের সততাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছেন। নিউল্যান্ডসের (ভেন্যু) বড় পর্দায় না দেখার আগপর্যন্ত আমরা জানতাম না বলের আকৃতি পাল্টাতে বাইরের কোনো জিনিস (সিরিশ কাগজ) মাঠে ঢোকানো হয়েছে।’

প্রশ্ন তোলা সংবাদকর্মী ও সাবেকদের প্রতি চার বোলারের বিবৃতি, ‘শুধু বোলার বলে যাঁরা কোনো প্রমাণ ছাড়াই দাবি করছেন “আমরা অবশ্যই জানতাম”, তাঁদের প্রতি বলছি: ম্যাচ চলাকালীন অভিজ্ঞ দুই আম্পায়ার নাইজেল লং ও রিচার্ড ইলিংওয়ার্থ টিভিতে ফুটেজ দেখার পরও বল পাল্টাননি, কারণ, বিকৃতির কোনো চিহ্ন ছিল না।’

কেপটাউন টেস্টে বল টেম্পারিংয়ের কারণে ৯ মাস নিষিদ্ধ হন ক্যামেরন ব্যানক্রফট। এক বছরের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছিলেন স্মিথ ও ওয়ার্নার। শাস্তি ভোগের পর তাঁরা আবারও ফিরেছেন ক্রিকেটে। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার (সিএ) নৈতিকতা কমিটি এই সপ্তাহে ব্যানক্রফটে ডেকে বল টেম্পারিংয়ের সেই ঘটনা নিয়ে আরও খোলনলচে জানতে চেয়েছিল।

এদিকে কেপটাউন টেস্টে খেলা চার বোলার বরাবরই বল টেম্পারিংয়ের ঘটনায় জড়িত কিংবা জানার কথা অস্বীকার করে এসেছেন। ‘নিউল্যান্ডসে সেদিন মাঠে যা ঘটেছে, তা ভুল ছিল এবং কখনোই ঘটা উচিত নয়। আমরা সবাই মূল্যবান শিক্ষা পেয়েছি। আমরা মনে করি সবাই দেখছে যে আমরা এখন যেভাবে খেলি, যেভাবে আচরণ করি এবং খেলাটির প্রতি যেভাবে শ্রদ্ধা দেখাই, তা ভালোর জন্যই। আমরা খুব বিনয়ের সঙ্গে অনুরোধ করছি এই গুজবের অবসান হোক। এটা অনেক দূর গড়িয়েছে, এখন সরে আসার সময়’—বিবৃতিতে বলা হয়।

ক্লার্ক বলছেন, বল টেম্পারিং বোঝার কথা বোলারদের। স্কাই স্পোর্টসের সঙ্গে নিজের মতটা এভাবেই জানিয়েছেন সাবেক অধিনায়ক, ‘ওদের (বোলার) বল করার জন্য বলটা ধরতে হয়। আপনি যদি একটা কলম নিয়ে আমার ক্রিকেট ব্যাটের কোনো এক ক্ষুদ্র জায়গায় “এক” লেখেন; হাতলের শীর্ষে, ব্যাটের কোনায়, ব্যাটের নিচে, পিঠে, গ্রিপে নিচে—যেখানেই লিখুন না কেন, ছোট একটা সংখ্যা, তা-ও আমি টের পাব। আপনি যদি শীর্ষ পর্যায়ে খেলেন, তাহলে আপনি নিজের ব্যবহারের জিনিসগুলো এতটাই ভালোভাবে জানবেন। তাহলে চিন্তা করেন তো, আপনি বোলারের দিকে বল ছুড়ে দিচ্ছেন আর বোলার জানবে না এটা (বল বিকৃত করা হয়েছে)? হাস্যকর।’