তামিমকে বশে আনার গল্প শোনালেন বোল্ট

বোল্ট চার উইকেট নিয়ে ধসিয়ে দিয়েছেন বাংলাদেশকে।ছবি: টুইটার

ট্রেন্ট বোল্টের মুখে হাসি লেগেই ছিল। বল সুইং করছে, মুভ করছে, একজন পেসারের আর কী চাওয়ার আছে! উইকেটের এটুকু সহায়তা পেলে যেকোনো পেসারের মুখেই হাসি ফোটার কথা। বোল্টের এমন হাসিমুখের মোড়কে যে ভয়ংকর এক ফাঁদ পাতা ছিল, তামিম কি তা টের পাননি!

ফাঁদটা আর কিছুই নয়, ব্যাটসম্যানকে ভুল করানোর। বাংলাদেশের ইনিংসের প্রথম বল থেকে তামিমকে আউটসুইংয়ে ফাঁকি দেওয়ার চেষ্টা করেছেন নিউজিল্যান্ডের বাঁহাতি এ পেসার। তামিমের অফস্টাম্পের পাশ দিয়ে বল বের করেছেন। বাংলাদেশ অধিনায়কে এতে অভ্যস্ত হয়েই ভুলটা করেন। হুট করে ভেতরে ঢোকা বলে এলবিডব্লু! পেসারদের চিরায়ত কৌশল। হাসিমুখেই সেই কৌশলের কথা ম্যাচের পর জানালেন বোল্ট।

ডানেডিনে আজ নিউজিল্যান্ডের ৮ উইকেটে জয়ের পর তামিমকে তো আউট করেছেনই, ম্যাচের প্রথম বল থেকেই ভয়ংকর ছিলেন বোল্ট। প্রথম বলটাই দুর্দান্ত আউটসুইংয়ে তামিমকে পরাস্ত করেছেন। সেই বল নিয়ে প্রশ্নে বোল্ট বললেন, ‘তামিমের বিপক্ষে খেলার অভিজ্ঞতা আছে। তাকে বেশ কয়েকবার আউটও করেছি। সে ভালো খেলোয়াড়। ওকে দ্রুত ফেরাতে পারলে আমাদের জন্য ভালো। ওই বলটা স্টাম্প মিস করে গেছে, এটাই খারাপ লেগেছে।’

খারাপ লাগার অনুভূতিটা বেশিক্ষণ থাকেনি। চার ওভার পরই তামিমকে দারুণ সেই কৌশলে আউট করেছেন বোল্ট। সেই আউট নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল নিউজিল্যান্ডের ফাস্ট বোলারকে।

জন্মদিনটা মাঠে ভালো কাটল না তামিমের। করেছেন ১৩ রান, দলও বড় ব্যবধানে হেরেছে।
ছবি: এএফপি

৮.৫ ওভারে ২৭ রানে ৪ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা বোল্ট উত্তরও দিলেন হাসিমুখেই, ‘নিখাদ পরিকল্পনা ছিল, তা বলব না। আজকের দিনটাই সহজাত মুভমেন্টের জন্য বেশ ভালো ছিল। নিজের সহজাত সুইয়ের ওপর নির্ভর করেছি। চেয়েছিলাম তাকে সামনের পায়ে এনে বল ভেতরে ঢোকাতে। সেটা হয়েছে।’

বাংলাদেশের হয়ে তামিম ব্যাটিং উদ্বোধন করবেন, আর নিউজিল্যান্ডের হয়ে বোলিংয়ের উদ্বোধনের দায়িত্বটা বোল্টের। দুজনের লড়াই-ই তাই ম্যাচগুলোর গতিপথ ঠিক করে দেওয়ার কথা। সিরিজে তাই তামিমের বিপক্ষে তাঁর দ্বৈরথ নিয়ে কথা হচ্ছিল।

এই দ্বৈরথ নিয়ে ম্যাচের আগে কিছু ভেবেছেন কি না, মাথায় সেটি ছিল কি না, প্রশ্নে বোল্ট অবশ্য নিরীহ উত্তরই দিলেন, ‘ঠিক ওভাবে মাথায় থাকে না। পুরো দল মিলে ড্রেসিংরুমে প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়দের নিয়ে আলোচনা হয়, পরিকল্পনা হয়, সবাই সেটি মেনে খেলার চেষ্টা করি।’

তামিমের চার বল পর সৌম্য সরকারকেও ফিরিয়ে এক ওভারের মধ্যে বাংলাদেশকে শুরুর ধাক্কাটা দেন বোল্ট। ইউনিভার্সিটি ওভালের পেসবান্ধব কন্ডিশনে দারুণ বোলিং করা নিয়ে নিজের ব্যাখ্যাটা এক কথায় দিয়েছেন বোল্ট, ‘এমন কন্ডিশনে কীভাবে বল করতে হয়, তা আমরা জানি।’

সেটা যে বোল্টই সবচেয়ে ভালো জানেন, তা পরিসংখ্যানও বলছে। আজ ২৭ রানে ৪ উইকেট পাওয়া বোল্ট ম্যাচের ভেন্যু ইউনিভার্সিটি ওভালে এ নিয়ে তিনবার চার বা তার বেশি উইকেট পেলেন। ডানেডিন শহরের এই মাঠে আর কোনো বোলার একবারের বেশি চার উইকেট পাননি।