দক্ষিণ আফ্রিকাকে সিরিজে ফেরালেন বোলাররা

পোলার্ডকে ফেরাতে দুর্দান্ত এই ক্যাচ ধরেছেন হেনড্রিকস।ছবি: এএফপি

ভেন্যু এক, মুখোমুখি দুই দল এক, তাই বলে চিত্রনাট্যও এক হয়ে যাবে! ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও দক্ষিণ আফ্রিকার টি-টোয়েন্টি সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচের প্রথমার্ধটা দেখে 'দেজা ভ্যু' বললে কেউ আপত্তি করতে পারবেন না।
 
প্রথম ম্যাচের মতোই দুর্দান্ত শুরু করেছিল প্রোটিয়ারা। দুই ওপেনারের এনে দেওয়া শুরুটা টানা দ্বিতীয় ম্যাচে ব্যর্থ করে দিয়েছে বাকি দল। ৭ ওভারের মধ্যে ৭৩ রান তোলা দক্ষিণ আফ্রিকা শেষ পর্যন্ত মাত্র ১৬৬ রান তুলতে পেরেছে।
 
এর পর অবশ্য চিত্রনাট্যে বদল এসেছে। তাড়া করতে নেমে প্রথম ম্যাচের মতো হেসেখেলে ম্যাচ বের করতে পারেনি স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজ। উল্টো ধুকতে ধুকতে এগোনো এক ইনিংসে হেরেছে ১৬ রানে।  

আজও দক্ষিণ আফ্রিকার ওপেনিং জুটি বড় রান এনে দিয়েছে।
ছবি: এএফপি

প্রথম ম্যাচে পাওয়ার প্লেতে ৫৩ রান তুলেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। দুই ওপেনার রিজা হেনড্রিকস ও কুইন্টন ডি কক সপ্তম ওভারের মধ্যে ৬১ রান তুলে তারপর বিদায় নিয়েছিলেন। তবু দক্ষিণ আফ্রিকা কাল ১৬০ রানের বেশি করতে পারেনি। ৬ উইকেটে এ রানটাও হয়তো তোলা হতো না যদি রাসি ফন ডার ডুসেন ৫৬ রানের ইনিংস না খেলতেন।

আজ কুইন্টন ডি কক ও হেনড্রিকস তাই আরেকটু বেশি দায়িত্ব নিলেন। পঞ্চম ওভারের অর্ধেকটা পেরোতেই পঞ্চাশ পেরিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। পাওয়ার প্লেতে এসেছে ৬৯ রান। সপ্তম ওভারে কেভিন সিনক্লেয়ারের বলে স্কুপ করতে গিয়ে ক্যাচ দিলেন ডি কক। ২০ বলে ২৬ রানের ইনিংসটি থামল নিকোলাস পুরানের দারুণ এক ক্যাচে।

অবশ্য বোলার সিনক্লেয়ারের উদযাপনটা হলো আরও দুর্দান্ত। চাইলে যে জিমন্যাস্টের ফ্লোর ইভেন্টে ক্যারিয়ার গড়তে পারতেন সেটা আবার বুঝিয়ে দিয়েছেন এই স্পিনার। দক্ষিণ আফ্রিকার রানের গতি তবু কমেনি। একদিকে হেনড্রিকস ও অন্যদিকে টেম্বা বাভুমা দ্রুত রান তুলছিলেন। ১০ ওভার শেষে ৯৫ রান ছিল প্রোটিয়াদের।

ডি কককে আউট করার পর সিনক্লেয়ারের দুর্দান্ত উদ্‌যাপন।
ছবি: টুইটার

১১তম ওভারে দলকে ৯৬ রানে রেখে ফিরেন হেনড্রিকস। ৩০ বলে ৪২ রান করা এই ওপেনার যেন দলের ভাগ্যকেও নিয়ে গেলেন মাঠ থেকে। বাভুমাকে সঙ্গ আর কেউই দিতে পারলেন না। ডেভিড মিলার (১১), ডুসেন (২) দ্রুতই ফিরে গেলেন। ৩৩ বলে ৪৬ রান করে ফিরলেন অধিনায়কও। হেনড্রিকসের মতোই ৫ চার ও ১ ছক্কার বাভুমার ইনিংসের পর আর এগোয়নি প্রোটিয়া ইনিংস। শেষ ৫ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে মাত্র ২৮ রান তুলে ৭ উইকেটে ১৬৬ রানে থেমেছে দলটি। সিনক্লেয়ার ২৩ রানে পেয়েছেন ২ উইকেট। প্রথম ওভারে ১০ রান দেওয়া ওবেদ ম্যাককয় ২৫ রান দিয়ে পেয়েছেন ৩ উইকেট।

প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ১৬০ তাড়া করতে মাত্র ১৫ ওভার দরকার হয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের। ৩৫ বলে ৭১ রান তুলে তাতে মূল ভূমিকা ছিল এভিন লুইসের। আজ দ্বিতীয় বলেই ছক্কা মেরে সে ছন্দ ধরে রাখার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। কিন্তু চতুর্থ ওভারেই ২১ রান করে থেমে গেছেন লুইস। তিনে নামা গেইল (৮) ফিরেছেন দলীয় ৪০ রানে।

লুইস আজ ইনিংস বড় করতে পারেননি।
ছবি: এএফপি

রানের গতি এর পর শুধু স্লথ হয়েছে। একদিকে রানের চাপ বেড়েছে আর ওদিকে ড্রেসিংরুমমুখী যাত্রা অব্যাহত হয়েছে। একে একে নিকোলাস পুরান (৯), পোলার্ড (১) ও রাসেল (৫) ফিরে গেছেন ১১তম ওভারের মধ্যে। ৭০ রান ৫ উইকেট হারানো উইন্ডিজ এরপর ৩৪ রানের একটা জুটি পেয়েছিল। কিন্তু আন্দ্রে ফ্লেচার ও জেসন হোল্ডারের ওয়ানডে গতির ব্যাটিং দলকে ম্যাচ থেকে ছিটকে দিয়েছে।

৩৬ বলে ৩৫ রান করে আউট হয়েছেন ফ্লেচার। দুই বল পরই ফিরেছেন ২০ বলে ২০ রান করা হোল্ডার। ১০ বলে ২৪ রান তুলে নাটক জমিয়েছিলেন ফ্যাবিয়ান অ্যালেন ও ডোয়াইন ব্রাভো। ৬ বলে ১০ রান ব্রাভো ফিরেছেন ১৮তম ওভারের শেষ বলে।

২ ওভারে ৩৮ রান তোলার দায়িত্ব পান প্রথম ৬ বলে ১৫ তোলা অ্যালেন। ১২ বলে ৩৪ রান তুলে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছেন ইনিংস শেষ হওয়ার আগের বলে আউট হওয়া অ্যালেন। কিন্তু অন্য প্রান্তে কোনো সহযোগিতা পাননি। ৯ উইকেটে ১৫০ রান তুলে থামে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। জর্জ লিন্ডে ১৯ রানে পেয়েছেন ২ উইকেট, ৩৭ রানে ৩ উইকেট রাবাদার। ৪ ওভারে মাত্র ১৬ রান দিয়ে পোলার্ডকে আউট করেছেন তাবরিজ শামসি।