দিল্লিকে হারিয়ে ফাইনালে মুম্বাই

ফাইনালে ওঠার পর মুম্বাইয়ের খেলোয়াড়দের উচ্ছ্বাস।ছবি: বিসিসিআই

পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে থেকে লিগ পর্ব শেষ করে মুম্বাই ইন্ডিয়ানস। পুরো আইপিএলেই দাপট দেখিয়েছে চারবারের আইপিএল চ্যাম্পিয়নরা। অন্যদিকে দিল্লি ক্যাপিটালস আইপিএলের শুরুতে দারুণ খেললেও শেষের দিকে এসে ধুঁকতে ধুঁকতে শেষ চারে জায়গা করে নিয়েছে। আজ দুবাইয়ের কোয়ালিফায়ার ওয়ানে দিল্লিকে ৫৭ রানে হারিয়ে ষষ্ঠবারের মতো ফাইনালে উঠেছে রোহিত শর্মার মুম্বাই। আজ হেরে গেলেও ফাইনালে ওঠার আরেকটি সুযোগ পাচ্ছে দিল্লি। আগামী রোববার তারা কোয়ালিফায়ার টুয়ে খেলবে এলিমিনেটর জয়ী দলের বিপক্ষে।  

ট্রেন্ট বোল্ট-যশপ্রীত বুমরা, দুজন মিলে এবারের আইপিএলে ৪৭ উইকেট নিয়েছেন। দুজনই আছেন সেরা উইকেট–শিকারিদের তালিকার শীর্ষ পাঁচে। আইপিএলজুড়ে মুম্বাই ইন্ডিয়ানসের হয়ে নতুন বলটা সামাল দিয়েছেন বোল্ট। ডেথ ওভার ছিল বুমরার দায়িত্বে। আজ আইপিএল ফাইনালে ওঠার ম্যাচে দিল্লির বিপক্ষে মুম্বাই অধিনায়ক রোহিত শর্মা দুজনকেই তুলে দিলেন নতুন বল।

বুমরার অসাধারণ বোলিংয়েই ফাইনালে উঠেছে মুম্বাই।
ছবি: বিসিসিআই

ফলাফল, শূন্য রানে তিন উইকেট নেই দিল্লির! পৃথ্বী শ, অজিঙ্কা রাহানে ও ধাওয়ান—তিন টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানের কেউই রানের খাতা খুলতে পারেননি। বোল্ট-বুমরার অবিশ্বাস্য বোলিংয়ের সামনে টিকতেই পারেননি এই তিন ব্যাটসম্যান। শ্রেয়াস আইয়ার ক্রিজে এসে ১২ রান যোগ করেন। বুমরা দ্বিতীয় ওভারে এসে তাঁকেও বিদায় করেন। মুম্বাইয়ের ২০১ রান তাড়া করতে নেমে ২০ রানে ৪ উইকেট হারায় দিল্লি।

গভীর খাদ থেকে উঠে লড়াই করে দিল্লির জয়ের কোনো সম্ভাবনাই আসলে তখন ছিল না। মার্কাস স্টয়নিস ও অক্ষর প্যাটেল চেষ্টা করেছেন মান রক্ষার রান করতে। স্টয়নিসের ৬৫ ও অক্ষরের ৪২ রানের ইনিংস দুটির কল্যাণে ৮ উইকেটে ১৪৩ রান তুলতে পারে দিল্লি। মুম্বাই জিতেছে ৫৭ রানের বিশাল ব্যবধানে। সানরাইজার্স হায়দরাবাদ ও রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর প্রথম এলিমিনেটর ম্যাচে জয়ী দলের বিপক্ষে ফাইনালে ওঠার শেষ সুযোগ পাবে দিল্লি।

মুম্বাইকে ফাইনালে তুলতে অসাধারণ ব্যাটিং করেছেন ইশান কিষান।
ছবি: বিসিসিআই

এর আগে টসে জিতে যেন চার-ছক্কা মারার প্রতিযোগিতায় মেতেছিলেন মুম্বাইয়ের ব্যাটসম্যানরা। রোহিত শর্মা দ্রুত আউট হন। এ ছাড়া যিনিই ক্রিজে এসেছেন, বল বাউন্ডারি ছাড়া করার চেষ্টা করেছেন। পথ দেখিয়েছেন ওপেনার কুইন্টন ডি কক। প্রথম ওভার থেকেই ডি কক–তাণ্ডবের শুরু। রবিচন্দ্রন অশ্বিনের বলে ২৫ বলে ৪০ রান করে ছক্কা মারতে গিয়ে আউট হওয়ার আগে তাঁকেই মনে হয়েছে দিল্লির সবচেয়ে বড় ঝুঁকি।

ভালো ব্যাটিং করেছেন সূর্যকুমার যাদব আর ইশান কিষানও। রোহিতের বিদায়ে এক প্রান্ত ধরে রাখেন সূর্যকুমারই। টুর্নামেন্টজুড়ে অবিশ্বাস্য ধারাবাহিক সূর্যকুমার আজও মুম্বাইয়ের ভিত হয়ে খেললেন। ৩৮ বলে ৫১ রানের চোখজুড়ানো ইনিংস খেলে আউট হন তিনি। রোহিত ও ডি ককের পরপর মুম্বাইয়ের আরেক নেতা পোলার্ডকে আউট করে দিল্লিকে ম্যাচে ফেরানোর ইঙ্গিত দেন অশ্বিন।

কিন্তু ইশান কিষান আর হার্দিক পান্ডিয়া মিলে সেই আশা উড়িয়ে দেন। কিষান ৩০ বলে ৫৫ রান করেন ৪টি চার ও ৩টি ছক্কায়। তবু মুম্বাইয়ের রান ১৮০ ছাড়ানো মুশকিল হতো পান্ডিয়া মরুর বুকে ঝড় না তুললে। ক্রিজে এসে মাত্র ১৪ বল খেলে অপরাজিত ৩৭ রান করেন হার্দিক। তাঁর ইনিংসে কোনো চার ছিল না, ছিল পাঁচটি ছক্কা। পান্ডিয়ার মারমুখী এই ব্যাটিংই মুম্বাইকে নিয়ে যায় ২০০ রানে।