দুর্বল ওয়েস্ট ইন্ডিজ দেখে হতাশ বাংলাদেশ

গত আগস্টে শ্রীলঙ্কা সফর সামনে রেখে অনুশীলনে নেমেছিলেন সৌম্য-মুমিনুলরা।প্রথম আলো ফাইল ছবি

কাইরন পোলার্ড ওয়েস্ট ইন্ডিজের ওয়ানডে দলটা গুছিয়ে এনেছিলেন। শাই হোপ, নিকোলাস পুরান, শিমরন হেটমায়ার, জেসন হোল্ডার, ফাবিয়ান অ্যালেনরা একসঙ্গে খেললে দলটা দারুণ রূপ নেয়। দায়িত্ব নেওয়ার পর পোলার্ড অধিনায়ক হিসেবে সফল। ওদিকে টেস্ট দলের চেহারা একটু একটু করে বদলে দেওয়া শুরু করেছিলেন আরেক অধিনায়ক জেসন হোল্ডার। টেস্ট ক্রিকেটের দুনিয়ায় সম্মানিত অধিনায়কদের একজন তিনি।

কিন্তু এই দুই অধিনায়কই কিনা বাংলাদেশ সফর থেকে নাম সরিয়ে নিলেন! দলের বাকি সদস্যের কথা নাহয় বাদই থাকল। বাংলাদেশ সফরের জন্য গতকাল ১৫ সদস্যের দল ঘোষণা করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট বোর্ড। সেখানে তারকা ক্রিকেটারদের বেশির ভাগই নেই। কেউ করোনার শঙ্কায়, আর কোনো কোনো খেলোয়াড় নেই ব্যক্তিগত কারণে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের এমন দ্বিতীয় সারির দল দেখে হতাশ বাংলাদেশ।

সাধারণ ওয়ানডে কিংবা টেস্ট সিরিজ হলে এক কথা, কিন্তু বাংলাদেশে আইসিসি ওয়ানডে সুপার লিগের তিনটি ম্যাচ খেলার কথা ওয়েস্ট ইন্ডিজের। দুটি টেস্ট আবার টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অংশ। আইসিসি টুর্নামেন্টের খেলা বাদ দিয়ে সিডনি সিক্সার্সকে ম্যাচ জেতানোয় ব্যস্ত থাকবেন হোল্ডার। পোলার্ড খেলবেন টি-টেন লিগে।

একটু দুঃখ লাগল। করোনার কারণে যদি না আসে তাহলে তো কিছু বলতে পারবেন না।
হাবিবুল বাশার, বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের নির্বাচক

দুই অধিনায়কের সঙ্গে সিরিজ থেকে নাম সরিয়ে নিয়েছেন ড্যারেন ব্রাভো, রোস্টন চেজ, শেলডন কটরেল, এভিন লুইস, শাই হোপ, শিমরন হেটমায়ার, নিকোলাস পুরান, ফাবিয়েন অ্যালেন ও শেন ডাওরিচরা। বেশির ভাগ খেলোয়াড়ই করোনার ভয়ে সফর থেকে নাম সরিয়ে নিয়েছেন। কেউ আবার ব্যক্তিগত কারণে। অথচ এঁদের অনেকেই খেলছেন বিগ ব্যাশে। খেলবেন ফেব্রুয়ারির আবুধাবি টি-টেনে। মূল ক্রিকেটার না থাকার মানে টেস্ট ও ওয়ানডেতে দ্বিতীয় সারির দল নিয়ে বাংলাদেশে আসছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।

বাংলাদেশ দলের নির্বাচক হাবিবুল বাশার কাল প্রকাশিত ক্যারিবীয়দের দল দেখে একটু দুঃখই পেলেন, ‘একটু দুঃখ লাগল। করোনার কারণে যদি না আসে তাহলে তো কিছু বলতে পারবেন না। কিন্তু আমার যুক্তি হলো, ওরা সব জায়গায় খেলছে, বাংলাদেশে অন্যান্য জায়গা থেকে কোভিড-১৯ ভালো ব্যবস্থাপনা করেছি, নিয়ন্ত্রণ করেছি। দুটি টুর্নামেন্ট করেছি সফলভাবে। সব জায়গায়ই তো মানুষ মারা যাচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশে এলে কোভিডের সমস্যা হয়, এই যুক্তিটা বুঝে ওঠা কঠিন।’

টেস্ট অধিনায়ক মুমিনুল হকও কিছুটা আশাহত। পূর্ণ শক্তির দলের বিপক্ষে টেস্ট ক্রিকেটের পরীক্ষা দেওয়া হলো না তাঁর, ‘সবাই আশাই করে যে নিয়মিত দলটাই আসবে। শুধু আমি না, সবাই এটাই আশা করেছিল।’

তবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দ্বিতীয় সারির দল বলে কিছু নেই। ঘরের মাঠে বাংলাদেশ জিততে নামে, সেটা যে দলই হোক না কেন। জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারির সিরিজটাকে মুমিনুল দেখছেন সেভাবেই, ‘আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ছোট-বড় চিন্তা করে খেলা যাবে না। দল দেখে যদি ভাবেন আপনি জিতে যাবেন, এটা ঠিক না। মূল ক্রিকেটার নেই, তার মানে এই না যে দল ওদের হালকাভাবে নেবে। দেশে খেললে আমাদের প্রত্যাশা থাকে আমরা ভালো করব। আর টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে আমরা অবশ্যই জয়ের জন্যই যাব। সেটা এই দল না, ওদের মূল দল এলেও আমাদের মানসিকতা একই থাকত।’