দেখেও বিশ্বাস হয় না এমন আউট হলেন আন্দ্রে রাসেল

নিজের আউট বিশ্বাস হচ্ছে না রাসেলেরছবি: প্রথম আলো

আন্দ্রে রাসেল কিছুক্ষণ কোমরে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন। দাঁড়িয়ে থাকারই কথা। যেভাবে আউট হয়েছেন, এমন দুর্ভাগ্য দেখে মাথায় হাত দিয়ে বসে থাকলেও কেউ হয়তো আপত্তি করতেন না।

আজ বিপিএলের দ্বিতীয় ম্যাচে খুলনা টাইগার্সের বিপক্ষে মিনিস্টার গ্রুপ ঢাকার আন্দ্রে রাসেল যেভাবে আউট হয়েছেন, সেটা ক্রিকেট ইতিহাসেই অনন্য হয়ে থাকবে। ৬ উইকেটে ১৮৩ রান তোলা ঢাকার ইনিংসে আলাদা হয়ে থাকছে রাসেলের এই উইকেট।

মাহমুদউল্লাহর প্রান্তে বল লেগেছে
ছবি: ইউটিউব

ঢাকার ইনিংসের ১৫তম ওভারে ঘটেছে সে বিস্ময়কর ঘটনা। ১১৭ রানে তৃতীয় উইকেট পড়ার পর ক্রিজে এসেছিলেন রাসেল। মুখোমুখি হওয়া দ্বিতীয় বলে থিসারা পেরেরাকে মিড উইকেট দিয়ে মেরেছিলেন বড় এক ছয়। ২ বলে ৭ রান নেওয়া রাসেল–ঝড় দেখার জন্য সবাই নড়েচড়ে বসতে শুরু করেছেন। বিপত্তি ঘটল এর পরের বলেই।

পরের বলটা আলতো হাতে খেলে শর্ট থার্ডম্যানে ঠেলেই দৌড় দিয়েছিলেন রাসেল। ঝুঁকিতে বেশি ছিলেন মাহমুদউল্লাহ। কারণ, শর্ট থার্ডম্যান ব্যাটিং প্রান্তেই থ্রো করেছিলেন। কিন্তু নন স্ট্রাইক থেকে দৌড় দেওয়া ঢাকা অধিনায়ক ব্যাটিং প্রান্তে ঠিকই পৌঁছে গেছেন।

বল ছুটছে ওই প্রান্তে
ছবি: ইউটিউব

আন্দ্রে রাসেলের জানা ছিল তিনি যে প্রান্তে যাচ্ছেন, সেদিকে ঝুঁকি নেই। রাসেলের নজরও ছিল উল্টো দিকেই। তাই অতটা গা লাগিয়ে দৌড়াননি। কল্পনাও করতে পারেননি, তাঁর নিজের দিকের প্রান্তে কী ঘটতে চলেছে। ওদিকে ফিল্ডার মেহেদী হাসানও যে থ্রো করেছিলেন সেটা গিয়ে লেগেছিল স্টাম্পে। এই অলরাউন্ডার যা শত চেষ্টাতেও করতে পারতেন না, তাই হলো। বল ব্যাটসম্যানের প্রান্তের স্টাম্পে লেগে গড়াতে গড়াতে অন্য প্রান্তের স্টাম্পে গিয়েও আঘাত হানল।

জোরালো আবেদন করল খুলনা। থার্ড আম্পায়ার দুটি রানআউটের আবেদনই পরখ করলেন। মাহমুদউল্লাহর ক্ষেত্রে দেখা গেল, নিরাপদেই আছেন তিনি। কিন্তু রাসেলের প্রান্তে দেখা গেল, ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান অলরাউন্ডার তখনো দাগের বাইরে। সম্পূর্ণ নিরাপদ এক প্রান্তে থেকেও আউট হয়ে গেলেন রাসেল!

ক্রিকেট ইতিহাসেই এতটা অবিশ্বাস্য আউট আগে কখনো দেখা গেছে কি না সন্দেহ।

আজ অবশ্য এটিই প্রথম রান-আউট নয়। এর আগে তানজিদ হাসানের সরাসরি থ্রোয়ের শিকার হয়েছেন ঢাকার উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ শেহজাদ। সেটিও ছিল নন-স্ট্রাইক প্রান্তেই। মিডউইকেটে খেলে ডাবলস নিতে গিয়েছিলেন তামিম ইকবাল, সে ডাকে সাড়াও দিয়েছিলেন শেহজাদ। তবে বেশ ধীরগতিতে দৌড়াচ্ছিলেন তিনি।

সে সময় বোলার কামরুল ইসলামের সঙ্গে শেহজাদকেও ভড়কে দিয়ে তানজিদের থ্রোটা সরাসরি আঘাত করেছিল স্টাম্পে। রানআউট হয়ে ফেরার আগে শেহজাদ করেন ২৭ বলে ৪২ রান।

অবশ্য রাসেলের এমনভাবে আউট হওয়ার পর শেহজাদও হয়তো নিজেকে দুর্ভাগা বলবেন না আজ।