পাঞ্জাবের জয়ে ‘তেতো’ স্বাদ ধাওয়ানের

পাঞ্জাবের জয়ে ভালো ইনিংস খেলেছেন গ্লেন ম্যাক্সওয়েলছবি: টুইটার

ক্রিস গেইল তখন ৫ বলে ২ রানে অপরাজিত। উইকেটে ভালোভাবে সেটও হননি। দিল্লি ক্যাপিটালস অধিনায়ক শ্রেয়াস আইয়ার তখন কী ভেবেছিলেন কে জানে! তুষার দেশপাণ্ডের নিরীহ দর্শন মিডিয়াম পেস দিয়ে তুলে নিতে চেয়েছিলেন গেইলকে?

অনভিজ্ঞ এ বোলারকে তখন ব্যবহার করার ফল যা হওয়ার তাই হলো—ওই ওভারে গেইল ৩ চার ও ২ ছক্কা মিলিয়ে একাই তুলে নেন ২৫ রান! ৯৬ বলে ১৪১ রানের লক্ষ্যটা নেমে এল ৯০ বলে ১১৫ রানে। এখান থেকে কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি।

ফিফটি তুলে নিয়ে পাঞ্জাবকে দারুণ জয় এনে নিকোলাস পুরান
ছবি: টুইটার

গেইল ঝড় তোলার পর বেশিক্ষণ থাকেননি। ১৩ বলে ২৯ রান করে পরের ওভারে শিকার হন রবিচন্দ্র অশ্বিনের। ওই ওভারে মায়াঙ্ক আগারওয়ালও রান আউট হয়ে ফিরলে দিল্লির নিভু নিভু আশা হুট করে জ্বলে উঠেছিল।

কিন্তু নিকোলাস পুরান ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েল মিলে ৪০ বলে ৬৯ রানের জুটি গড়ে সেই আশাটুকুও দপ করে নিভিয়ে দেন। এখান থেকে হেসেখেলেই ৫ উইকেটের জয় তুলে নেয় পাঞ্জাব। টানা তিন ম্যাচে তিন জয় তুলে নিয়ে ঘুরে দাঁড়াল লোকেশ রাহুলের দল। আর দিল্লির এ হারে বিফলে গেল শিখর ধাওয়ানের ৬১ বলে ১০৬ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস।

টি-টোয়েন্টিতে রান তাড়ায় সাধারণত শেষ ৫ ওভারে ম্যাচে টান টান উত্তেজনা বিরাজ করে। কিন্তু এ ম্যাচে তেমন কিছু ঘটাতে পারেননি দিল্লির বোলাররা। জয়ের জন্য শেষ ৫ ওভারে ২৪ রান দরকার ছিল পাঞ্জাবের। হাতে ৬ উইকেট। ম্যাচটা এভাবে ম্যাড়ম্যাড়ে করে দেওয়ার পেছনে দারুণ ভূমিকা রয়েছে পুরানের ৩ ছক্কা ও ৬ চারে সাজানো ২৮ বলে ৫৩ রানের ইনিংসের।

ম্যাক্সওয়েল ৩ চারে খেলেছেন ২৪ বলে ৩২ রানের ইনিংস। অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটসম্যান ২৪ বলে ১৭ রানে আউট হওয়ার পর জিততে হলে অলৌকিক কিছুর অপেক্ষা করতে হতো দিল্লিকে। কেননা তখন ম্যাচ প্রায় পাঞ্জাবের মুঠোয়। ২৪ বলে দরকার ১৭ রান। এখান থেকে শেষ ২ ওভারে দরকার ৮। ১৯তম ওভারের প্রথম পাঁচ বলে ৪ রান তোলার পর শেষ বলে ছক্কা মেরে জয় এনে দেন জিমি নিশাম। ৮ বলে ১০ রানে অপরাজিত ছিলেন তিনি।

ধাওয়ান সেঞ্চুরি করলেও জিততে পারেনি তাঁর দল দিল্লি ক্যাপিটালস
ছবি: টুইটার

এ জয়ে ১০ ম্যাচে ৮ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের পাঁচে উঠে এল পাঞ্জাব। দিল্লি হারলেও রয়েছে টেবিলের শীর্ষে। ১০ ম্যাচে দলটির সংগ্রহ ১৪ পয়েন্ট। এর আগে দিল্লির হয়ে দারুণ সেঞ্চুরিতে ইতিহাস গড়েন ধাওয়ান। আইপিএলের ইতিহাসে প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে টানা দুই ম্যাচে সেঞ্চুরি তুলে নেন তিনি। দল জিতলে অবশ্য এই ইতিহাস গড়ার স্বাদটা মধুর লাগত ধাওয়ানের। দিল্লি ওপেনারের কাছে এখন তা আক্ষেপ হয়েই থাকার কথা।

ধাওয়ান ছাড়া দিল্লির আর কোনো ব্যাটসম্যান সেভাবে দাঁড়াতে পারেননি। বাঁহাতি এ ব্যাটসম্যান যে দিল্লিকে একাই টেনেছেন, সেই প্রমাণ দিচ্ছে পরিসংখ্যান—বাকি পাঁচ ব্যাটসম্যান মিলে সর্বসাকল্যে তোলেন ৫৪! আর ‘মিস্টার এক্সট্রা’র অবদান ৪। শ্রেয়াস আইয়ার ও ঋষভ পন্ত করেছেন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৪। অর্থাৎ অন্য প্রান্তে আসা-যাওয়ার মিছিল চললেও এক প্রান্তে ‘গব্বর সিং’ নামের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে মারমুখী ব্যাট করে গেছেন ধাওয়ান। দল না জেতায় এমন ইনিংস খেলেও দুঃখ থেকে যাওয়ার কথা ধাওয়ানের।