না থেকেও কাল আইপিএলে ছিলেন ডিন জোন্স
ক্রিকেট বিশ্বের জন্য গতকাল ছিল ভয়াবহ একটা দিন। ওয়ানডে ক্রিকেটকে নতুন মাত্রা দেওয়া সাবেক ক্রিকেটার, কোচ, জনপ্রিয় ধারাভাষ্যকার ও ক্রীড়া বিশ্লেষক হুট করেই পাড়ি জমিয়েছেন পরপারে। যে মানুষটা স্কট স্টাইরিস, ব্রেট লি, গ্রায়েম সোয়ানদের সঙ্গে আগের রাতেও স্টার স্পোর্টসের ‘আইপিএল সিলেক্ট ডাগআউট’ অনুষ্ঠানে কলকাতা -মুম্বাই ম্যাচের খুঁটিনাটি বিশ্লেষণ করেছেন, হাসি তামাশায় মাতিয়ে রেখেছেন চারপাশ, হুট করে পরদিন তাঁর মৃত্যুটা মেনে নেওয়া কষ্টকর।
যেমনটা মেনে নিতে পারেননি অনুষ্ঠানে তাঁর অন্যান্য সঙ্গীরাও। অনুষ্ঠানে ডিন জোন্স যে চেয়ারটায় বসতেন, সে চেয়ারটা স্টাইরিস-লি-সোয়ানরা সাজিয়েছিলেন জোন্সের বেশে। জোন্স যে ব্লেজার পরতেন, যে শার্ট-টাই পরতেন, সেগুলো পরিয়েছিলেন জোন্সের চেয়ারে। যে লাল রঙের নোটবুকে সব পরিসংখ্যান টুকে রাখতেন, সেটাও রেখেছিলেন চেয়ারের সামনে। সবাই একমত হয়েছেন, অনুষ্ঠানটা ডিন জোন্সেরই, 'আজ অনুষ্ঠানটা আসলেই ডিনের স্মরণে - ''ডিনোর ডাগআউট (সঙ্গীরা ডিন জোন্সকে ডিনো বলে ডাকতেন)''। ও খেলাটার একজন কিংবদন্তি। অবশ্যই, আজ প্রথম যে কাজটা আমরা করেছি, তা হলো ও পরিবারকে সহমর্মিতা জানানো। দিনটা সবার জন্যই অনেক কষ্টের। শুধু ওর পরিবাররে জন্য নয়, বরং ক্রিকেটের সঙ্গে যারা জড়িয়ে আছে, সবার জন্য। আজ ডিনো থাকলে যেটা চাইত, সেটা হলো আমরা যেন সবাই ডাগআউটে আসি, মজা করি, যে খেলাটাকে এত ভালোবাসি সেটা নিয়ে সময় কাটাই,' অনুষ্ঠানের শুরুতেই বলেন সাবেক অস্ট্রেলিয়ান পেসার ব্রেট লি।
অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটের অন্যতম সেরা এই তারকা ১৯৮৪ থেকে ১৯৯৪ পর্যন্ত মাঠ মাতিয়েছেন। ৫২ টেস্ট আর ১৬৪টি ওয়ানডে খেলে ৯ হাজার ৬৩১ (টেস্টে ৩,৬৩১ আর ওয়ানডেতে ৬০০০) রান তাঁর। টেস্টে ৪৬.৫৫ গড়ে ১১টি শতক তাঁর। ওয়ানডেতেও আছে ৭টি সেঞ্চুরি আর ৪৬টি ফিফটি।
২০১৯ সালে অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটের ‘হল অব ফেমে’ স্থান পেয়েছিলেন তিনি। ক্রিকেট ছাড়ার পর থেকেই কোচিং ও ধারাভাষ্যের সঙ্গে জড়িয়ে ছিলেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি আইপিএলে ধারাভাষ্য দিয়েছেন লি-সোয়ান-স্টাইরিসদের সঙ্গে।
জোন্স ১৯৮৭ সালের বিশ্বকাপজয়ী অস্ট্রেলিয়া দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন। ১৯৮৬ সালে চেন্নাইতে ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার টাই হওয়া সেই বিখ্যাত টেস্টে জোন্স ডাবল সেঞ্চুরি করেছিলেন। ওয়ানডে ক্রিকেটের দিগন্ত বদলে দেওয়া একজন হিসেবে তাঁর নাম শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন সবাই।