‘নারীকে সম্মান করুন, সত্যিকারের মানুষ হোন’

ছবিটি বর্তমান পরিস্থিতিতে দারুণভাবেই যায়। গোটা দেশ লড়ছে করোনাভাইরাসের সঙ্গে, সেই সঙ্গে নারীর প্রতি ঘৃণ্য সহিংসতা প্রতিরোধেও।ছবি: প্রথম আলো

নারীর প্রতি সহিংসতা উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে দেশে। প্রায় প্রতিদিনই আসছে ধর্ষণ ও নির্যাতনের খবর। সাধারণ মানুষের মধ্য থেকে প্রতিবাদ হচ্ছে। নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিতে ঘরে-বাইরে সোচ্চার সবাই। তবু ভয়াবহ এসব ঘটনা থামানো যাচ্ছে না। প্রতিবাদের এ পালায় আগেই যোগ দিয়েছিলেন সাকিব আল হাসান, মাশরাফি বিন মুর্তজা ও মুশফিকুর রহিম। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ধর্ষণবিরোধী প্রতিবাদ ও বার্তা দিয়েছেন তিন ক্রিকেটার। এবার বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) উদ্যোগে ধর্ষণবিরোধী ভিডিওবার্তা দিলেন ক্রিকেটাররা।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আজ একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ। সেখানে ধর্ষণ ও নির্যাতনবিরোধী বক্তব্য রাখেন ক্রিকেটাররা। ভিডিওটি বানানো হয়েছে বিসিবির উদ্যোগে। এই বার্তায় মুশফিক বলেন, ‘গত কয়েক দিন ধরে দেশের বিভিন্ন স্থানে আমার, আপনার, আমাদের বোনদের ওপর ভয়াবহ নির্যাতনের ঘটনায় মর্মাহত। নারীদের সম্মান করুন, সত্যিকারের মানুষ হোন।’

মুশফিকের কথা শেষ হওয়ার পর নিজের বার্তা রাখেন মাহমুদউল্লাহ, ‘এখন সময় এসেছে, আসুন সবাই মিলে একতাবদ্ধ হয়ে এই অমানুষগুলোকে সামাজিকভাবে প্রতিহত করি এবং এদের মুখোশ খুলে দিই।’ টেস্ট দলের অধিনায়ক মুমিনুল হক বলেন, ‘চলুন আমরা নিজেদের মানুষ হিসেবে প্রমাণ করি এবং নারীর প্রতি সম্মান প্রদর্শন করতে শিখি।’ জাতীয় দলের ওপেনার তামিম ইকবাল বলেন, ‘নিজ নিজ পরিবারের নারী সদস্যের কথা ভাবুন এবং দেশের প্রতিটি নারীর নিরাপত্তা নিশ্চিতে এগিয়ে আসুন।’ ব্যাটসম্যান সৌম্য সরকার বলেন, ‘নারীকে সম্মান করুন, সত্যিকারের মানুষ হোন।’

এর আগে সিলেটে এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে ধর্ষণ কিংবা নোয়াখালীতে গৃহবধূকে নিপীড়নের ঘটনা সবার সহ্যের বাঁধ যেন ভেঙে দিয়েছে। দেশের নানা জায়গায় প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছে সাধারণ মানুষ। তাঁদের সঙ্গে ঐকমত্য প্রকাশ করে ফেসবুকে পোস্টে সাকিব লিখেছিলেন, ‘এক শ্রেণির বর্বর মানুষ বয়স, ধর্ম ও বর্ণ নির্বিশেষে নারী ও শিশুদের প্রতি প্রতিদিনই যে জঘন্য অন্যায় করছে, তারপর আর আমি চুপ করে থাকতে পারি না। আমার অবস্থান তাই সব ধরনের ঘৃণা আর সহিংসতার বিরুদ্ধে।’

মুশফিক তাঁর ফেসবুক পোস্টে লিখেছিলেন, ‘আমরা আর চুপ করে থাকতে পারি না। ধর্ষণ কিংবা যে কোনো যৌন নির্যাতন কখনো সহ্য করা হবে না। সমাজে এর কোনো জায়গা নেই। জেগে ওঠো বাংলাদেশ, ধর্ষণকে না বলার পক্ষে অবস্থান নাও। না মানে না।’ মাশরাফি তাঁর ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে প্রশ্ন রাখেন, অন্য নারীকে নিজের মেয়ে, বোন বা স্ত্রীর মতো করেই দেখার দৃষ্টিটা মানুষের কেন থাকবে না, ‘আপনার মেয়ে যখন আপনার কোলে বসে থাকে, তখন আপনার সেই অনুভূতি হয় না। যখন আপনার বোন আপনার পাশের রুমে থাকে, তখনো সেই অনুভূতি আসে না। আপনার স্ত্রীকে নিয়ে যখন আপনি ঘুরতে বের হন, তখন কেউ তাঁর দিকে বাঁকাভাবে তাকালে আপনার খারাপ লাগে। কিন্তু অন্যকে দেখার ক্ষেত্রে কি আমার, আপনার অনুভূতি একই রকম আছে?’