নিউজিল্যান্ডের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দিয়েছিলেন ফিন অ্যালেনই

সিরিজে প্রথমবার খেলতে নেমেই ভালো শুরু করেছেন ফিন অ্যালেনছবি : প্রথম আলো

১০ বল, ১৫ রান, ৩ চার, ১৫০ স্ট্রাইক রেট।  

এমন একটা ইনিংস কী করতে পারে আদতে? বাড়িয়ে দিতে পারে পুরো দলের আত্মবিশ্বাস। বিরুদ্ধ কন্ডিশনে শুরুতে এমন একটা ইনিংস গড়ে দিতে পারে পুরো দলের ইনিংসেরই গতিপথ। গতকাল বাংলাদেশের বিরুদ্ধে তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে ফিন অ্যালেনের ইনিংসটা অমন ছিল বলেই মনে করেন হেনরি নিকোলস।

অ্যালেন ইংল্যান্ড থেকে দ্য হানড্রেড খেলে বাংলাদেশে এসেছিলেন পুরো দল আসার আগেই। তবে নিউজিল্যান্ড যেদিন এসে ঢাকায় পৌঁছাল, সেদিনই জানা গেল অ্যালেনের করোনা পজিটিভ হওয়ার খবর। অ্যালেনকে এরপর চলে যেতে হলো আইসোলেশনে। টানা দুইটা নেগেটিভ টেস্টের পর দলের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন আগেই, তবে দ্বিতীয় ম্যাচে খেলেননি। তৃতীয় ম্যাচে অপেক্ষাকৃত ভালো উইকেটে আগে ব্যাটিং করা নিউজিল্যান্ডের হয়ে ওপেন করলেন, এরপরই ১৫ রানের ইনিংসে এনে দিলেন ভালো একটা শুরু।

ক্যারিয়ারে গতকাল মাত্র চতুর্থ আন্তর্জাতিক ম্যাচ ছিল অ্যালেনের
ছবি: প্রথম আলো

অ্যালেনের এ ধরনের ইতিবাচক ইনিংস এমন কন্ডিশনে গুরুত্বপূর্ণ, বলছেন নিকোলস, ‘টপ অর্ডারের ব্যাটসম্যানরা জানে আমাদের দেশের সঙ্গে এখানকার কন্ডিশনের পার্থক্য। দেশের মাটিতে ১৮০ রানের স্কোরের বিপরীতে এখানে ১২০-১৩০ রানের স্কোরই (নিয়মিত)। সেখানে ৭০-৮০ রানের স্কোর গড়তেই পারে তারা, তবে এখানে সেটা হয়তো ৩০-৪০ রানের কাছে। গতকাল ফিন (অ্যালেন) যেভাবে এসে আক্রমণ করেছে, আমাদের আত্মবিশ্বাস অনেকটাই বাড়িয়ে দিয়েছে সেটা।’

ক্যারিয়ারে গতকাল মাত্র চতুর্থ আন্তর্জাতিক ম্যাচ ছিল অ্যালেনের। নিউজিল্যান্ডের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দলেও নেই তিনি। তবে আইপিএল থেকে শুরু করে ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক লিগগুলোতে সুযোগ পাচ্ছেন, নিশ্চিতভাবেই নিউজিল্যান্ডের ভবিষ্যৎ তারকাদের একজন তিনি। নিকোলসের মতে, অ্যালেন বিশেষ একজনই, ‘তার আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি নেই, এটা অবশ্যই এগিয়ে রাখে তাকে। সুপার স্ম্যাশ (নিউজিল্যান্ডের ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি) বলেন, বা জাতীয় দল—যখনই সুযোগ পায়, সে আত্মবিশ্বাসে ভরপুর থাকে। তার স্কিল অসাধারণ।’

দেশের বাইরে টি-টোয়েন্টি লিগ খেলা অ্যালেনকে বেশ সহায়তা করছেই বলে মনে করেন নিকোলস। বলছেন ২২ বছর বয়সী ওপেনারের গুরুত্বের কথাও, ‘আইপিএল ও ইংল্যান্ডে খেলা তার আত্মবিশ্বাস বাড়িয়েছে নিশ্চিতভাবেই। তার একটা এক্স-ফ্যাক্টর আছে, প্রথম বল থেকেই সে আক্রমণে যেতে পারে। আমাদের উড়ন্ত একটা শুরু এনে দিয়েছে সে, এ কন্ডিশনে যেটা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।’

টম ব্লান্ডেলের সঙ্গে নিকোলসের ৫৫ বলে অবিচ্ছিন্ন ৬৬ রানের ষষ্ঠ উইকেট জুটিতেই লড়াই করার মতো স্কোর পেয়েছিল নিউজিল্যান্ড
ছবি: প্রথম আলো

গতকাল ভালো একটা শুরু এনে দিলেও অ্যালেন অবশ্য ইনিংস বড় করতে পারেননি। মাঝে মোস্তাফিজুর রহমান ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের তোপে বেশ চাপেও পড়ে গিয়েছিল নিউজিল্যান্ড। তবে টম ব্লান্ডেলের সঙ্গে নিকোলসের ৫৫ বলে অবিচ্ছিন্ন ৬৬ রানের ষষ্ঠ উইকেট জুটিতেই লড়াই করার মতো স্কোর পেয়েছিল নিউজিল্যান্ড।

নিকোলসও বলছেন, এমন কন্ডিশনে টি-টোয়েন্টির ধরনটাই আলাদা, ‘এ কন্ডিশন আলাদা, সঙ্গে কঠিন। আমরা জানতাম কী অপেক্ষা করছে। আমার মনে হয় এখানকার টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের ধরনটাই আলাদা। নিউজিল্যান্ডের ১৮০ রানের বিপরীতে এখানে ১২০-১৩০ রানের স্কোরই বেশি। সেরা পথটা খুঁজে বের করাই আমার কাজ মিডল অর্ডারে ব্যাটিংয়ে সময়। গতকাল টম (ব্লান্ডেল) ও আমাকে পুনর্গঠনের কাজ করতে হয়েছে। শেষ পর্যন্ত লড়াই করার মতো স্কোর গড়তে পারাটা দারুণ।’

দারুণ জয়ে সিরিজে ঘুরে দাঁড়িয়েছে নিউজিল্যান্ড
ছবি: প্রথম আলো

গতকাল নিজেদের ব্যাটিংয়ের ধরনটাও ব্যাখ্যা করেছেন নিকোলস, ‘গতকাল ১০ ওভারের মাঝেই ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলেছিলাম আমরা। টম (ব্লান্ডেল) ও আমার দায়িত্ব ছিল খেলাটা আরও শেষের দিকে নিয়ে যাওয়া। ৪-৫ ওভার কোনো উইকেট হারানো যেত না আমাদের। শেষ পাঁচ ওভারে আমাদের বাঁহাতি-ডানহাতি কম্বিনেশন কাজে লাগিয়ে রান তুলতে পারব, এমন আত্মবিশ্বাস ছিল। শেষের দিকে কয়েকটা বাউন্ডারি মারা আর ফলটা নিজেদের দিকে আনার ব্যাপারটা তো ভালোই।’

বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ড সিরিজের তৃতীয় ম্যাচ আগামী ৮ সেপ্টেম্বর, বুধবার।