নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেমির আগে যে কারণে স্বস্তিতে আর্চার

ইংল্যান্ড দল আছে দারুণ ছন্দেছবি: রয়টার্স

নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে আজ বাংলাদেশ সময় রাত ৮টায় এবারের টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম সেমিফাইনালে মুখোমুখি হবে ইংল্যান্ড। এ ম্যাচের আগে ব্রিটিশ পত্রিকা ডেইলি মেইলে লেখা এক কলামে ইংল্যান্ডের শক্তির জায়গাগুলো নিয়ে কথা বলেছেন জফরা আর্চার। পড়ে নেওয়া যাক ইংল্যান্ডের এ ফাস্ট বোলার আর কী নিয়ে কথা বলেছেন—

আমি কিছুটা হলেও কুসংস্কারে বিশ্বাস করি। এ কারণেই সুপার টুয়েলভের শেষ ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ইংল্যান্ড হেরে যাওয়ায় আমি খুশি হয়েছি। আমার স্মৃতি যদি প্রতারণা না করে থাকে, তাহলে আমি টি–টোয়েন্টি টুর্নামেন্টে এখনো অপরাজিত কোনো দল দেখিনি। তাই তো দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ইংল্যান্ড হারার আগপর্যন্ত আমি একটু ভয়ে ভয়ে ছিলাম।

ইংল্যান্ডের ফাস্ট বোলার জফরা আর্চার
ফাইল ছবি

দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ওই হারের কারণে আমি সেমিফাইনালের আগে রাতে সহজে ঘুমাতে পেরেছি। স্বাভাবিক নিয়ম যেটা বলে, তা হলো সেরা দলটিও এ ধরনের প্রতিযোগিতায় অন্তত একটা ম্যাচ হারবে। একটা ভালো দলও তো প্রতি চার বা পাঁচ ম্যাচ পর একটি খেলা হারে।

দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ওই হারের বিষয়টি মাথায় রেখেই বলব, ইংল্যান্ড এবারের টুর্নামেন্টে অসাধারণ খেলেছে। তারা যে আবার জয়ে ফিরবে, এ আশা আমরা করতেই পারি। এটা ঠিক যে দু–একজন গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়কে পাচ্ছে না তারা। কিন্তু এউইন মরগান নিশ্চয়ই দলের বাকি খেলোয়াড়দের মনে করিয়ে দেবে যে এ ম্যাচ তাদের জন্য ইতিহাস গড়ার উপলক্ষ।

এবারের টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ব্যাট হাতে ছন্দে আছেন বাটলার
ছবি: এএফপি

এ দলটির সবচেয়ে বড় শক্তি এর গভীরতা। ইংল্যান্ড এবারের বিশ্বকাপ খেলতে গেছে আমাকে ও বেন স্টোকসকে ছাড়া। কিন্তু দলের রিজার্ভ বেঞ্চ এত ভালো যে আমার বিশ্বাস ছিল আমাদের দুজনের অভাবটা পূরণ হয়ে যাবে।

চোটের কারণে জেসন রয় না থাকায় এই ম্যাচে জস বাটলারের সঙ্গে ওপেনিংয়ে অন্য কাউকে নামতে হবে। এই মূহূর্তে বাটলার হয় বিশ্বের সেরা ব্যাটসম্যান অথবা সে সেরার খুব কাছে। আমি অবশ্য তার চেয়ে ভালো কাউকে দেখছি না। সে ভয়ংকর এক ব্যাটসম্যান। প্রতিপক্ষ দলকে তার কথা মাথায় রেখে প্রস্তুতি নিতে হবে। সে এমনই একজন ব্যাটসম্যন, যে কি না একই বল লংঅন দিয়ে অথবা ফাইন লেগ দিয়েও ছক্কা মারতে পারে। তাকে সামলানো খুব কঠিন। এ কারণেই বলব, তার সঙ্গে ওপেনিংয়ে কে নামল, সেটা কোনো বিষয় নয়।

এ দলের গভীরতা সত্যি খুব বিশাল। আর দলটির নেতৃত্বে আছে অসাধারণ একজন অধিনায়ক। সে জানে তার হাতে অনেক বিকল্প আছে। সাদা বলের ক্রিকেটে জনি বেয়ারস্টো একজন ওপেনার, ডেভিড ম্যালানও ওপেন করতে পারে আর স্যাম বিলিংস মিডল অর্ডারের যেকোনো জায়গায় ব্যাটিং করতে পারে। ইংল্যান্ডের সবচেয়ে বড় ব্যাপার হলো দলের প্রয়োজনে যে কেউ এগিয়ে আসতে পারে।

ইংল্যান্ডের পেসার ক্রিস জর্ডান
ছবি: আইসিসি

অনেকেই প্রশ্ন করছেন আমাকে ছাড়া ইনিংসের শেষ দিকের বোলিং ইংল্যান্ড কীভাবে সামলাচ্ছে। কিন্তু আসল ব্যাপার হচ্ছে এই দলে অন্যদের অভাব পূরণ করার খেলোয়াড় অনেক আছে। এসব আমরা বিভিন্ন সফরে অনুশীলন করেছি। বিশেষ করে এ বছরের শুরুতে ভারত সফরে। বিভিন্ন খেলোয়াড়কে বিভিন্ন পরিস্থিতিতে চ্যালেঞ্জের মুখে দাঁড় করিয়েছি। একেকজন বোলারকে ম্যাচের বিভিন্ন সময়ে বোলিং করিয়েছি।

একটি দল গড়ে তোলার সময় আপনি সব দায়িত্ব নির্দিষ্ট কজনকে দিতে পারবেন না। যেমন দরুন মরগান যদি গত মার্চে সব দায়িত্ব আমার কাঁধে দিত, তাহলে এখন আমার জায়গায় যাকে বোলিং করতে হতো সে ধুঁকত। ক্রিস জর্ডানের কাছে আমি যা প্রত্যাশা করেছিলাম, সেটা সে পূরণ করতে পেরেছে। সতীর্থদের কাছে আমার একটাই চাওয়া, শান্ত থাকো। যদি হেরে যাই, গেলাম। কিন্তু আমরা যেভাবে খেলে আসছি, সেভাবে খেলতে পারলে আমাদের পাল্লাটাই ভারী থাকবে।