পাকিস্তান-জিম্বাবুয়ে এমন টেস্ট খেললে ‘মানুষ অন্য খেলা দেখবে’

ঘরের মাটিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে কোনো প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারেনি জিম্বাবুয়ে।ছবি: টুইটার

পাকিস্তানের সঙ্গে জিম্বাবুয়ে যে খুব বেশি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবে, সেটা হয়তো কেউ ভাবেননি। টি-টোয়েন্টি সিরিজে তা–ও একটু হুংকার দিলেও টেস্ট সিরিজে জিম্বাবুয়ে একদমই দাঁড়াতে পারল না।

দুই টেস্টে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়তে পারেনি জিম্বাবুয়ে। প্রথম টেস্টে হেরেছে ইনিংস ও ১১৬ রানে। পরে টেস্টে অবস্থা আরও খারাপ, ইনিংস ও ১৪৭ রানের ব্যবধানে হার। দুই দলের মধ্যে মানের এই পার্থক্যে বিরক্ত সাবেক পাকিস্তানি ব্যাটসম্যান রমিজ রাজা।

রমিজের কাছে মনে হচ্ছে, পাকিস্তান-জিম্বাবুয়ে টেস্ট সিরিজ ক্রিকেটের দীর্ঘতম সংস্করণের বাজে বিজ্ঞাপন। তাঁর আশঙ্কা, এমন খেলা দেখার চাইতে দর্শকদের মনে হতে পারে, ‘অন্য কিছু দেখাই ভালো!’ এমন একপেশে ফল দেখে মানুষ বিরক্ত হয়ে অন্য খেলা দেখা শুরু করে দিতে পারে।

নিজের অফিশিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে জিম্বাবুয়েকে একদম ধুয়ে দিয়েছেন এই ধারাভাষ্যকার, ‘অনেকে বলে, কোনো দুর্বল দল যদি সফল দলের বিপক্ষে খেলে, তাহলে ম্যাচের ফলের চেয়ে বড় হয়, ম্যাচ খেলে দুর্বল দলের খেলোয়াড়েরা কী কী শিখতে পারছে, সেটা। বড় দলের কাছ থেকে অনেক কিছু শেখা যায়—তারা চাপ কীভাবে সামলায়, কীভাবে ক্রমেই পরিবর্তনশীল প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবিলা করে ইত্যাদি।’

জিম্বাবুয়ের খেলা দেখে রমিজ রাজার মনে হয়নি পাকিস্তানের খেলা দেখে কোনোকিছু শেখার আগ্রহ আছে তাদের, ‘জিম্বাবুয়ের খেলা দেখে মনে হচ্ছে না তারা কিছু শিখেছে। গোটা সিরিজে পাকিস্তান তাদের ওপর যেভাবে আধিপত্য বিস্তার করছে, সেটা দেখে এমন মনে হওয়াই স্বাভাবিক। এ ছাড়া ওদের দুই টেস্টের পারফরম্যান্স দেখে এমন বিশেষ কোনো পার্থক্য আছে বলে মনে হয়নি।’

দুই দলের শক্তির এই পার্থক্য টেস্ট ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কিত করে তুলেছে সাবেক বিশ্বকাপজয়ী এই ক্রিকেটারকে, ‘যে দুই দলের মধ্যে শক্তিমত্তার এত পার্থক্য, তাদের মধ্যে টেস্ট সিরিজ আয়োজন করা উচিত না। টেস্ট ক্রিকেটের অবস্থা এমনিতেই অনেক খারাপ, অনেক কম মানুষ দেখে এই সংস্করণ। তাদের আপনি যদি এমন একপেশে ম্যাচ দেখান, তারা ক্রিকেট দেখা বাদ দিয়ে ফুটবল বা অন্য খেলা দেখা শুরু করবে। তিন দিনে টেস্ট শেষ হওয়া একটা প্রহসন ছাড়া কিছু না।’

জিম্বাবুয়ের এই অবস্থা দেখে বেশ কষ্টই লাগছে রমিজের, ‘জিম্বাবুয়ের এই অবস্থা বেশ কষ্ট দেয় আমাকে। আগে ওরা অনেক শক্ত একটা দল ছিল। ১৯৯২ বিশ্বকাপে ওদের দলে তিন থেকে চারজন বিশ্বমানের খেলোয়াড় ছিল। যারা যেকোনো পরিস্থিতি থেকে যেকোনো ম্যাচ বের করে আনার সামর্থ্য রাখত।’

নিজের ইউটিউব চ্যানেলে জিম্বাবুয়েকে টেস্ট খেলা বাদ দিয়ে সীমিত ওভারের ক্রিকেটে মনোযোগী হওয়ার ব্যাপারে পরামর্শ দিয়েছেন এই সাবেক তারকা ব্যাটসম্যান, ‘ক্রিকেট বোর্ডের দুর্নীতির কারণে ওদের ক্রিকেট আস্তে আস্তে ধ্বংসের পথে। সাদা ও কৃষ্ণাঙ্গ খেলোয়াড়দের নিয়েও সমস্যা আছে ওদের। গত ১৫-২০ বছরে এমনটাই চলছে। আশা করব তারা যেন ভবিষ্যতে ভালো করে, কিন্তু আপাতত ওদের উচিত টেস্ট খেলা বাদ দিয়ে সীমিত ওভারের ক্রিকেটে মনোযোগ দেওয়া।’