বাবর আজমের হাত থেকে বাঁচতে আদালতে যেতে হলো মেয়েটিকে

বাবরের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে।ছবি: টুইটার

অভিযোগটি অনেক গুরুতর। প্রমাণিত হলে বাবর আজমকে কঠিন শাস্তিই হয়তো পেতে হবে। তবে প্রমাণ হওয়া না-হওয়া আদালতের ব্যাপার, আপাতত অভিযোগকারীকে কোনোভাবে হয়রানি না করতে বাবর আজম ও তাঁর পরিবারকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

অভিযোগটি কী? পাকিস্তানের এক নারী গত সপ্তাহে লাহোরে অভিযোগ করেন, বাবর আজম তাঁকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, ধর্ষণ করেছেন। এমনকি তাঁর গর্ভে সন্তান আসার পর বাবর আজম তাঁকে গর্ভপাতেও বাধ্য করেন বলে অভিযোগ করেন ওই নারী। তিন সংস্করণের ক্রিকেটে পাকিস্তানের অধিনায়ক এই মুহূর্তে দলের সঙ্গে নিউজিল্যান্ড সফরে আছেন। এর মধ্যেই লাহোরের আদালতে ওই নারীর অভিযোগের ভিত্তিতে বাবর ও তাঁর পরিবারকে আদালত আজ নির্দেশ দিয়েছেন যাতে অভিযোগকারী নারীকে কোনোভাবে হয়রানি না করা হয়।

টুইটারে বেশ ব্যস্ত থাকেন বাবর।
ছবি: টুইটার

ওই নারীর পিটিশনের শুনানির আগে আদালত পুলিশের কাছে ওই পিটিশন নিয়ে মন্তব্যও জানতে চেয়েছেন।

অভিযোগে ওই নারী বলেন, বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাঁর সঙ্গে অবৈধ শারীরিক সম্পর্ক গড়েছেন বাবর। এরপর তাঁর গর্ভে বাচ্চা এলে সেটিও গর্ভপাত করাতে বাধ্যও করেন। প্রমাণ হিসেবে সেসবের চিকিৎসা-সংক্রান্ত কাগজপত্রও দিয়েছেন অভিযোগকারী নারী। এর আগে পাকিস্তানের নাসেরাবাদ পুলিশ স্টেশনে বাবরের বিরুদ্ধে এফআইআর করাতে গেলে তখনো বাবর তাঁকে আবার বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে এফআইআর ফিরিয়ে নিতে অনুরোধ করেন বলে জানান অভিযোগকারী নারী।

কিন্তু ক্রিকেটে অর্থ-খ্যাতি আসার পর বাবর তাঁকে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানান। এরপর ওই নারী আবার থানায় অভিযোগ দায়ের করতে গিয়েছিলেন, কিন্তু তখন থানায় তাঁর বিবৃতি নেওয়া হয়নি বলেও তিনি অভিযোগ করেছেন।

নিউজিল্যান্ডে কোয়ারেন্টিন পর্বে এভাবেই ব্যস্ত আছেন বাবর।
ছবি: টুইটার

গত সপ্তাহে লাহোরে সংবাদ সম্মেলন করে ওই নারী প্রথম এসব অভিযোগ করার পরই বিষয়টি সবার নজরে আসে। সেদিন ওই নারী সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, বাবর ক্রিকেটে পরিচিতি পাওয়ার আগে দুজনের ১০ বছরের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। ওই নারী নিজেকে পাকিস্তান অধিনায়কের স্কুলের সহপাঠী হিসেবে দাবি করেছেন। তাঁর দাবি, বাবরের কঠিন সময়ে তিনি তাঁর পাশে ছিলেন। বাবরকে আর্থিকভাবেও সাহায্য করেছেন বলে দাবি করেছেন।

বাবর আর তিনি ছোটবেলা থেকেই শহরের গুলবার্গের একটি আবাসিক এলাকায় বাস করতেন বলে জানালেন। ভালোবাসার সম্পর্কের একপর্যায়ে ২০১০ সালে বাবর তাঁকে বলেছিলেন যে ২০১১ সালে তাঁরা কোর্টে রেজিস্ট্রেশন করে বিয়ে করবেন। ২০১২ যুব বিশ্বকাপে পাকিস্তান অনূর্ধ্ব-১৯ দলকে নেতৃত্ব দিয়ে পাদপ্রদীপে আসা বাবর এরপর তারকা হয়ে ওঠেন। ধীরে ধীরে ভুলে যান তাঁর পুরোনো ভালোবাসার কথা।

সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগকারী নারী বলেন, ‘আমি বাবরের ক্রিকেটার হয়ে ওঠার পেছনে অবদান রেখেছি। আমার বিউটি পারলারের অর্থ দিয়ে আমি তাঁকে সাহায্য করেছি। কিন্তু গত ১০ বছরে সে আমার অর্থের এক কানাকড়িও ফেরত দেয়নি।’

পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) মিডিয়া ও যোগাযোগ বিভাগের পরিচালক সামিউল হাসান অবশ্য এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি বলে জানাচ্ছে সংবাদমাধ্যম দ্য নিউজ ইন্টারন্যাশনাল। তাঁর কথা, এটা বাবরের ব্যক্তিগত ব্যাপার, এটা নিয়ে তাঁরা মন্তব্য করবেন না।