বর্ণবাদ–বিতর্কে বিবিসির ধারাভাষ্য থেকে সরে দাঁড়ালেন ভন

ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক মাইকেল ভনছবি: রয়টার্স

ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক মাইকেল ভন জানিয়েছেন, তিনি অস্থায়ীভাবে বিবিসির হয়ে ধারাভাষ্য দেওয়া থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। ইয়র্কশায়ারের সাবেক ক্রিকেটার আজিম রফিক বর্ণবাদের অভিযোগ তোলার পর সেখানে জড়িয়ে পড়েন ভন।

ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ডের মধ্যে সদ্য সমাপ্ত টেস্ট সিরিজে বিবিসির টেস্ট ম্যাচ স্পেশালে তাঁর ভূমিকা নিয়ে ‘চলমান আলোচনা’র পরিপ্রেক্ষিতে ‘বিবিসির সঙ্গে কাজ করা থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন’ সাবেক এই ব্যাটসম্যান।

সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ২০০৯ সালে ইয়র্কশায়ারের একটি ম্যাচের আগে আজিম রফিক এবং আরও দুজন এশিয়ান বংশোদ্ভূত ক্রিকেটারকে ভন বলেছিলেন, ‘তোমাদের সংখ্যাটা প্রচুর, এটা নিয়ে কিছু করতে হবে।’

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান জানিয়েছে, ভন এই কথা ইয়র্কশায়ারের মুসলিম খেলোয়াড়দের প্রতি বলেছিলেন, যা গত বছরই সবার সামনে নিয়ে আসেন আজিম রফিক। গত সপ্তাহে ইংল্যান্ড ও ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ডের (ইসিবি) শৃঙ্খলা কমিশন খেলাটিকে অসম্মান করার অভিযোগ গঠন করে ভনের বিরুদ্ধে।

আজিম রফিকের সেই অভিযোগের কারণে গত নভেম্বরে অ্যাশেজের সম্প্রচার দল থেকে ছাঁটাই হন ভন। ২০০৯ সালে ইয়র্কশায়ার-নটিংহামশায়ার টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ইয়র্কশায়ারের চার ক্রিকেটার আজিম রফিক, আদিল রশিদ, রানা নাভিদ-উল-হাসান ও আজমল শাহজাদের সঙ্গে হাত মেলানোর সময় মন্তব্যটি করেন ভন। পরে ইংল্যান্ডের লেগ স্পিনার আদিল রশিদ দাবি করেন, ‘এশিয়ান খেলোয়াড়দের প্রতি’ কথাটা বলেছিলেন তিনি।

গার্ডিয়ান জানিয়েছে, ইসিবি অভিযোগ গঠন করার পর বিবিসি স্পোর্টসের কাজ করা কালো, এশিয়ান এবং অন্য সংখ্যালঘুরা এ নিয়ে অফিসে মেইল করে ভনকে ধারাভাষ্য প্যানেলে রাখার ব্যাপারে আপত্তি প্রকাশ করেন। ৪৭ বছর বয়সী ভন অবশ্য তাঁর বিরুদ্ধে বর্ণবাদের অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করেছেন। মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় এক বিবৃতিতে ভন বলেছেন, ‘ওয়াইসিসিসিতে (ইয়র্কশায়ার কাউন্টি ক্রিকেট ক্লাব) আলোচিত বিষয়াদি নিয়ে আমি বহুবার কথা বলেছি। ধারাভাষ্যে মাঠের ঘটনার চেয়ে মাঠের বাইরের ঘটনা যদি প্রাধান্য পেয়ে যায়, তাহলে সেটি সব সময়ই অনুশোচনা করার মতো। এ বিষয়ে (বর্ণবাদ) চলমান আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বিবিসির সঙ্গে কাজ করা থেকে আমি আপাতত সরে দাঁড়াচ্ছি।’

ইংল্যান্ডের হয়ে ৮২ টেস্ট ও ৮৬ ওয়ানডে খেলা ভন জানিয়েছেন, বিবিসি থেকে সরে দাঁড়ানোর পেছনে পরিবার নিয়ে ভাবনাও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে, ‘পরিবারকে ভালো রাখা এবং তাদের পারিবারিক জীবন রক্ষার ভাবনা এ সিদ্ধান্তে মূল ভূমিকা রেখেছে। অস্থায়ীভাবে এই সরে দাঁড়ানোটা খেলার ভালোর জন্যও। আশা করি, এতে আমার সহকর্মীদের অসুবিধা দূর হবে।’

ভনের এই ঘোষণার পর বিবিসির বিবৃতিতে বলা হয়, ‘মাইকেল ভনের সঙ্গে কথা বলার পর আমরা তাঁর ক্রিকেট সম্প্রচার থেকে পদত্যাগ গ্রহণ করেছি। তাঁর এই সিদ্ধান্তকে আমরা সম্মান করি। বিবিসির চুক্তিতেই থাকবে মাইকেল।’