বল–বিকৃতি নয়, ‘নাকল’ করতে চেয়েছিলেন বোপারা

রবি বোপারা জানালেন তিনি বল বিকৃত করেননিছবি: শামসুল হক

কুমিল্লার ভিক্টোরিয়ানসের বিপক্ষে কাল হারের পর সংবাদ সম্মেলনে এসেছেন সিলেট সানরাইজার্সের অধিনায়ক রবি বোপারা। প্রস্তুত হয়েই এসেছিলেন তিনি। জানতেন, ‘বল-বিকৃতি’র অভিযোগ নিয়ে প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। তাই সঙ্গে করে একটা ক্রিকেট বলও নিয়ে এসেছিলেন এই ইংলিশ ক্রিকেটার।

খুলনা টাইগার্সের বিপক্ষে আগের ম্যাচে বল বিকৃত করার অভিযোগে বোপারাকে ম্যাচ ফি’র ৭৫ শতাংশ জরিমানা করা হয়েছে। সেই সঙ্গে তাঁর নামের পাশে যুক্ত হয়েছে তিনটি ডিমেরিট পয়েন্ট।

খুলনার বিপক্ষে ম্যাচে বলের আকৃতি পরিবর্তনের চেষ্টা করেন বোপারা। এরপরই মাঠের দুই আম্পায়ার বাংলাদেশের মাহফুজুর রহমান ও শ্রীলঙ্কার প্রগিথ রাম্বুকওয়েলাকে বল হাতে নিয়ে পর্যবেক্ষণ করতে দেখা যায়। কিছুক্ষণ আলোচনার পর রিজার্ভ আম্পায়ারকে ডেকে পাঠিয়ে বদলানো হয় বল।

‘নাকল’ বল করার চেষ্টা করছিলেন বোপারা খুলনার বিপক্ষে
ছবি: প্রথম আলো

পরের ওভারে পেনাল্টি হিসেবে ৫ রান যোগ করা হয় খুলনার সংগ্রহে। এমসিসির আইনের ৪১.৩ ধারা অনুযায়ী, বলের কন্ডিশন বদলানো হয়েছে মনে হলে ম্যাচের বল বদলানোর ক্ষমতা রাখেন আম্পায়াররা। দুই ফিল্ড আম্পায়ারের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে বোপারাকে তিন ম্যাচের নিষেধাজ্ঞাও দিয়েছিলেন ম্যাচ রেফারি দেবব্রত পাল। তবে আপিল করায় শাস্তি কমিয়ে কেবল জরিমানা করা হয় তাঁকে।

কাল বোপারা বল-বিকৃতির অভিযোগে নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করে বলেছেন, ‘এখানে একটা ভুল হয়েছে। আমি আসলে নাকল বল করতে যাচ্ছিলাম।’

তিনি হাতে বলটা নিয়ে সবাইকে ‘নাকল বল’-এর ‘গ্রিপ’দেখিয়ে বলেন, ‘নাকল বল করার জন্য গ্রিপ কিন্তু মোটেও সহজ কিছু নয়। এই বলটি করার জন্য আপনাকে গ্রিপটা ঠিকমতো ধরতে হবে। ভেজা বলে নাকলের জন্য গ্রিপ করা আরও কঠিন। বিভিন্নভাবে গ্রিপ করার জায়গা বেছে নিতে হবে আপনাকে, না–হলে নাকল করা যাবে না, নো বল হবে কিংবা বল মাথার ওপর দিয়ে চলে যাবে। আসলে এখানে একটা ভুল হয়েছে। ব্যাপারটা খুবই হতাশাজনক। কী আর করা, এটাই জীবন।’

আম্পায়াররা বল পরীক্ষা করে সিলেটকে ৫ রান পেনাল্টি করেছিলেন
ছবি: প্রথম আলো

বোপারা যা-ই বলুন, আম্পায়ারা যে তাঁর ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট হননি, সেটি সেদিন মাঠেই দেখা গেছে। তাঁর শাস্তিও সেটিই বলছে। তবে ‘অপরাধ’ বিবেচনায় বোপারার বড় শাস্তির হাত থেকেই বেঁচে গেছেন। বল বিকৃতি আইসিসির আচরণবিধির লেভেল-৩ পর্যায়ের অপরাধ। এটির সর্বোচ্চ শাস্তি ৬ টেস্ট অথবা ১২ ওয়ানডের নিষেধাজ্ঞা। প্রথমে তিন ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা পেলেও আপিল করে জরিমানা দিয়েই পার পাচ্ছেন ইংল্যান্ডের হয়ে ১৩ টেস্ট, ১২০ ওয়ানডে ও ৩৮টি টি-টোয়েন্টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলা এই ক্রিকেটার।